শবের পাশে সবই কেমন অর্থহীন! শেয়ার বাজার, নিউজ পেপার,সেফটিপিন... শবের পাশে সবই ভীষণ অর্থহীন। ভাতের হাঁড়ি,মাসকাবারি,মুড়ির টিন, ফার্নিশ ফ্ল্যাট,দক্ষিণে রোদ, ফলস সিলিং পিএনপিসি, ই জেড সি সি,ব্যস্ত দিন... সেলেব রোয়াব,ফ্যান ফলোয়ারস,লেগ পুলিং... শবের পাশে সবই বড়ো অর্থহীন। প্রত্যাখ্যান,প্রতিশ্রুতি অন্তহীন... উড়োচিঠি,মন্দ কথা, ফোনের রিং... যুদ্ধবিমান,শান্তির গান, বা পুতিন... শবের পাশে সবই ভীষণ অর্থহীন। ঘুমিয়ে থাকা একখানা মুখ কী কঠিন! এক পৃথিবী হিসেব-নিকেশ অর্থহীন... শবের...
অযথা পায়ের তলে মাটি সরে সরে গেছে প্রতিদিন, হৃদয়ের দেনা-পাওনাতে, আমিও রাখিনি কোনো ঋণ। দু'হাতেই বিলিয়েছি সব - যা কিছু অজড়, অব্যয়, বেদনার দাগ মুছে গেলে, নিষ্কাম পরে থাকে ক্ষয়। চিরাগের আলো খুঁজে খুঁজে প্রহরা রেখেছি প্রতিবার, আঁধার নামার পর বুঝি, ততোধিক দামি সংহার। স্মৃতিরা যেটুকু রেখে যায়, তারও বেশি যদি অভিমানী, নিয়ত অমোঘ সংশয়ে, আমাকেই শুধু আমি জানি।
নির্জন জন্মভিটেয় কে বাজায় বাঁশি! পাখি ডাকে, মামি ডাকে আমার জীবন ডাক উপেক্ষা করেনি। পুবের তেঁতুল গাছ ডাকে, বলে, 'শোনো, পোড়ো রান্নাঘরে চন্দ্র ভেদ করে।' চাঁদের কিনারা ঘেঁষে নেমে আসে কবুতর, হোগলা বনে জোঁক। ফ্যানা ভাত ডাকে কেন? বহুদিন খাওয়া হয়নি। শীত এসে গেল ব্যর্থ হব কি এবারও! জন্ম ভিটে ডেকে চলে কেউ নেই বুঝি। মাটি কি নরম হল? সে কৃষ্ণমৃত্তিকা রক্ত মেখে প্রতীক্ষায়। তাকে আনো, তুলে...
বিসর্জনের পর বিষাদের সাথে মদ খেতে যাই                                                                                     ...
যথেষ্ট ব্যথার দেনমোহর দিয়ে তোমার ঋণ চুকিয়েছি কি? কত অশ্রুর মুক্তো দানা গুনে গুনে বটুয়াতে ভরতে হয় খাজানা চুকিয়ে দিতে, বলো মহাকাল? তবুও পরোয়া নেই। তুমি বল। বলতে থাকো। হাঁকো নীলামের দস্তুর। আমি সব কর্জ, দায়, ঋণ পাই পাই চুকিয়ে দেব। আনা, দুই আনা, অর্থ, অনর্থের মূলে শুধে দেবো ধার। পাতো হাত। অঞ্জলিতে পান্না চুনি...
১ তোমাকে লিখবো ভাবি তুমি থেকে সম্বৎসর খসে গেলে নাম না জানা আশীর্বাদ দাউদাউ জ্বলেছিল আমাদের মাটি ও দিনাঙ্কে তারপর একটি একাকী মন্ত্র ঝরে পড়ল বিবাহের গায়ে তুমি মৃদুতর হলে আমি যৎসামান্য হলাম তোমার অপলকের ভেতর পলক পলক জল তুললাম তোমার ভেতর চাঁদ স্বচ্ছ হলে আমি বাহারী নাও নিয়ে সাতটি জন্মের অনুপম, ঘরবাদলার কথাকন্না, লুকোচুরির বৃষ্টি দেখে এলাম তুমি স্বাদ ছুঁয়ে দেখো, গ্রহণের সূত্র...
তোমার চলে যাওয়ার মধ্যে আমি সন্ধেকে সরে যেতে দেখি। যেমন করে সরে যায় কৃষ্ণপক্ষের চাঁদ ঘোর অমাবস্যার দিকে। সাগরের ঢেউ ফুলে ফুলে বেলাভূমিকে পাগল করে যে অমাবস্যায়, তুমি চলে গেলে সেই অমাবস্যার মতো হয়ে থাকে ঘরবাড়ি। ঘুম থেকে উঠি চায়ের জল চাপাতে গিয়ে চা পাতার কৌটো খুঁজে পাই না থাক গে, পরে খাব ভেবে খবরের কাগজ নিয়ে বসি সেখানে কোনও এক বউয়ের খুনের খবর...
গৃহ আমিও মুখ দেখি শীর্ণ ভাতের থালায় মুখ দেখি ভাঙা স্লেটে জেনে ফেলি বিরহী পাঠশালা, নিঝুম মায়ের লেখা রান্নাবান্না সমর্থিত ছোয়ের মুখোশ খুলে পাতায় আবৃত করেছি দেহ পাতায় দ্বিমুখী টান... এই যে পাঠশালার খেলনা, আমিও সহযাত্রী চাঁদের প্রতিবিম্বে আর ফিরব না জন্মকালে মুঠো শূন্য গৃহে সেইখানে নিয়ে চলো প্রিয় কাক, যেখানে ঝিনুকে পা কেটেছিল তোমার আমার   জঙ্গলমহল কখনও দুই ঠেঙ ফাঁক করে...
  অন্য জন্মে ফিরে আসি যদি, মানুষ নয় আর। মানুষের নামে ধিক্কার ধিক্কার। পরজন্মে স্কারলেট ম্যাকাও হবো আমি। নীল পিঠে লাল পালক জ্বলজ্বল করবে, আর, ওপরের হলুদ ডানার কিনারে সবুজ রঙ লেগে থাকবে। দীর্ঘ সময় উড়ে বেড়াবো আমি এপ্রান্ত ওপ্রান্ত। আমার ঠোঁটগুলো সাদা হবে, আর, ডগাটি কালো। বাঁকা ঠোঁটে আমি অগ্রাহ্য করে যাবো পৃথিবীর যাবতীয় আঁচড়। পরজন্মে আমি মানুষ হবো না আর। মানুষ নষ্ট...
যারা ঘুষি প্রাকটিস করেন তাদের বলি প্লিজ একটু কুলগাছের ছায়ায় চলে যান।লুডু নয়।দাবা খেলুন। বাংলা কবিতায় আপনি জাস্ট একটা উত্তরীয় মাত্র রোদের ভেতর বেড়াল হাঁটছে।আপনার নখে আজকাল মোমের আলো।আপনার চোখের মণিতে আমি দেখতে পাচ্ছি হাডুডু খেলার মাঠ। সমস্ত দুপুর জুড়ে যারা পরকীয়া করে।ঠোটের ওপর যাদের নেমে আসে ঢেঁকিশাকের সবুজ তাদের সাথে সেলফি তুলুন...
আলো আর বৃষ্টি                                                                            জড়াল ছবিটা সরিয়ে নিলে একটা ফুলদানি হতে পারে আলোফুল     ...
সঙ্গমের সিনে দেখেছি ক্যামেরার লেন্স আউট অফ ফ্রেম হয়ে যায় এখনও এত কার্পণ্য মোমবাতি নিভে যায়,কোথাওবা টিকটিকির আরশোলার শিকার ধরা। অধ্যাপক মানেই চোখে তার ভারী ফ্রেমের চশমা দেখেছি,স্কুলে ঢোকার আগে দিদিমণিকে নাকের নোলক খুলে রাখতে মিনি পার্সে। এখনো এই ধারণা রয়ে যায় আমাদের বৃহত্তর জীবনে ভাবতে ভাবতে রক্তকরবী পড়া শেষ হয়ে গেল খামাকা রঞ্জনকে মারলেন কেন? অতৃপ্ত সঙ্গম শেষে...
কথা বেড়ে দিচ্ছে স্ত্রী বেকার স্বামীর থালায় এমন রেসিপির বিকল্প কিছু নেই বনের শেয়াল, শহরের নেড়িকুত্তা সকলে বুঝতে পারছে আজ কবি-র বাড়িতে রান্না হচ্ছে প্রেম
বড় মুখ করে বললে, সংসারই চলে না এবার কবিতাটা ছাড়ো ভিতরটা তোলপাড় করে দিলে এতদিনের সখ্যটা নিজে-নিজেই খেলে তোমাকে বোঝানোর ভাষাই নেই কবিতা নেশাও নয়, কবিতা পেশাও নয় কবিতার জন্যে মই বাইতে হয় না কবিতার জন্যে আকাশেও উড়তে হয় না মাটিতেও টলতে হয় না আমার সংসার আর কবিতা মাখামাখি ওরা সহাবস্থান জানে, ওরা রাগ-অনুরাগ জানে ওরা জানে কবিতা সম্রাটের আর একটু...
১ নীরবতার ভেতর লাল নীল সাদা পতাকা মিছিল করে। ওড়ে । গান গায় ঘাসে ঘাসে জলবিন্দু বৃষ্টি হয়ে ঝরে কাচের ও পিঠে বসে থাকে কোজাগরী চাঁদ...কে মোহ, কে ভালবাসা? ধূলায় যে সব অন্ধকার ! ২ আলুথালু বারন্দায় ছড়ানো রয়েছে ধানের শীষের আলপনা পাশ দিয়ে হেঁটে গেছে চকিত সংসার দূর থেকে মনে হয় যেন, গৃহিণীর অভিমান। ঘরের মধ্যেও তাঁর ঘর নেই, লুপ্ত...
তোমার পিছুটানে লেগে আছে গাঢ় নিশীথ তবু তুমি গোপনীয় বলে এঁকে ফেলেছো শরীরের মূর্ছনা অথচ রোমাঞ্চ ভেঙে বহুজন্মের বিষাদ জেগে আছে,আজন্মকাল কিন্তু সরোদের কম্পন এসব ঘটনায় ভোরের কুয়াশা, নন্দনতত্ত্ব এবারে আমার মিশে যাওয়ার পালা যেন অদূরে আলোর আভাস উদীয়মান সারাক্ষণ এসেছি, প্রেম অতীত বলে তুলে দিই আদিগর্ভ স্পর্শ সঙ্গে শেষ সমুদ্রস্নানে লেগে থাকা নিয়ন আলো জীবনের সহজ...
ছেঁকেছুঁকে লিখেছি কত না – মাতৃকুলের অপযশ হবে,সেই ভয়ে। গর্ভের জল ভেঙে গেলে বলেছি, কিছু না কিছু না! ঘর পুড়ে গেলে সেই ধোঁয়া,পোড়া মাংসের ধোঁয়া,পাকিস্তানের দিকে উড়িয়ে দিয়েছি। কেউ আর কানাকানি করেনি আমাকে নিয়ে! সমাজ, সংসারে,যন্ত্রণায় মরে যেতে যেতে, সেয়ানার মতো,উৎস ঘুরিয়ে দিয়েছি ধর্মতলায়,যেখানে ধর্ণায় বসেছে নরনারী। কখনও -বা,প্রেমিকের মিছিল চলেছে – ওরা স্রেফ বন্ধু আমার, এইমতো...
কোন অনুতাপ বা অভিযোগ ছাড়াই আমি এঁকে ফেলি চাঁদ, চুম্বন আর মরণাপন্ন বেহালা তুলির টানে সম্পূর্ণ করি নদীর বাঁক, মন্দার বন এই ক্যানভাস আর গৃহস্থালি আমি মেলাতে পারিনা সমস্ত দিনের শেষে নোনাধরা দেয়াল, হয়তো বা অনায়াসে ছেড়ে চলে যাই ভাঙনের শহর... তোমারও কি মনে পড়ে পুরুষালি ভ্রমণকাহিনী সূর্যাস্তের মুহূর্ত, গানের কলি, জৈব রসায়ন রোদের নামতা, ছায়ার নামতা,...
রাতভর জলের ভিতরে ডুবে ডুবে যাই খুলে যায় কত যে দরজা ! জলের দরজা বুঝি এরকম ! ডুবে যেতে যেতে কী যে ঘুম পায় ! আমি আগামীর কপাট খুলতে গিয়ে দেখি--- অবুঝ সুখেরা সব পেখম তুলেছে যেন অবিনশ্বর আলো সে-আলোয় ভাসতে ভাসতে কত কিছু তুচ্ছ হয়ে যায় ! গাছের কোটরে ঘাপটি মেরে বসে থাকা অতৃপ্তির ঘুণপোকা...
ঠেলা নিয়ে হাঁক দেয় যে নাঙা কাবাড়ি তার সঙ্গে সাঙা হলে সুখে থাকা দায় সূর্য জলে ধোয় পুন্না, রঙের খোঁয়ারি ঝেড়েঝুড়ে ভোরবেলা আকাশে টাঙায় সংসার সহজ বড়, সংসার কঠিন কাবাড়ি যে কিনে ফেরে টুটাফুটা মন বউটি ঝালাই জানে, অগ্নিদাহে সেঁকে বিধিমতে সারানোর করে আয়োজন পদ্মাসনোস্থিত যোগী, দেহপদ্ম নিয়ে রোজ ভেসে থাকে কন্যা বিবাহের জলে আশহর দুঃখ কাঁধে কেউ ঘরে...