জানো, ভিক্ষুক এই তিনদিন আকাশ হয়েছে, প্রভু সিন্নির পাত্রে মিশিয়ে খেয়েছে অনেক মায়া-প্রবন্ধ--- জানে জনে-জনে… বিদ্বান হল দেহ-মন তাই! প্রতিটি পাতায় সংকেত পাই রোদ ওঠে রোদ পড়ে যায় জলে সন্ধ্যা আসেন, প্রবন্ধ বলে: ‘আমার মধ্যে প্রতিষ্ঠা কর’ যত নারীস্রোত, ততদূর নর প্রবন্ধকার তুলসি-মালিকা আমি আশ্রিত, তিনিই চালিকা তবু ভিক্ষুক অসম সাহসী কাঁধে টিয়া পাখি, ডাকনাম: শশী তিনদিন ধরে ওরা খড়কুটো আগলে রেখেছে ঝড়ের উঠোন বাকি...
আমেরিকা সাত, ইউরোপ পাঁচ, রাশিয়া সাকুল্যে চার দিন জীবনের বাকি দিনগুলো আমি চেয়েছিলাম তোমাকে দিতে ফোড়নের মতো দপ করে জ্বলে উঠে তুমি, কয় মন অসন্তোষ ঢেলে দিলে... অথচ আমাকে ধরে রাখতে চেয়েছে, সমুদ্দুর সামুদ্রিক ফ্যানা, সে-ই আরব্যরজনী, এক একলা আকাশ চীনের প্রাচীর আজও দেখো রয়েছে একই কত পর্যটক প্রতিদিন আসে যায়! ব্যবধান গড়েছে সময় শীতের শহরে, বস্তা, আরাম যখন রূপকথা...
১ আনারকলিকে ঘিরে গাথা হচ্ছে পাথর সেলিমের কথা বলতে গিয়ে বারবার ধরে আসছে বাবার গলা আর ঘুমের মধ্যে তলানি হয়ে যেতে যেতে বাদশাহের নির্দেশ মিশে গেল লতা মঙ্গেশকরের রেকর্ডে ২ ঘোরানো সিঁড়ি দিয়ে একে একে নেমে যাচ্ছে বিষণ্ণ জোকারেরা শীতে শাস্তি পাওয়া ছেলেদের কথা ভেবে আর ফিরবে না তারা শুধু মরচে পড়বে উৎসব ৩ শেষপর্যন্ত দ্বিচারিতাই থেকে যায় বিশেষত এই পাখির উড়ে যাওয়া সূর্যাস্তের...
দ্যূতসভাস্থল মধ্যে পৌঁছলেন অনিন্দিতরুচি। বয়োবৃদ্ধ, জ্ঞানবৃদ্ধ প্রত্যেকের চোখে চোখ রেখে নিক্ষেপিত হল তার প্রশ্নবাণ-- যিনি নিজে পরাজিত, তার অধিকার ছিল অন্যকে পণ রাখা? এর উত্তর কী, সে তো সকলের জ্ঞাত; ফলাফল সুদূরপ্রসারী; সে কথা বুঝতে এই সভাস্থলে জ্ঞানী-অজ্ঞানী-- অসুবিধা ছিল না কারোরই। তবু সেই নিয়তিতে পাঞ্জাছাপ দিলেন সকলে। আরও এক দ্যূতক্রীড়া শুরু হয়ে গেছে। নীতি-নির্ধারক যারা, আত্মবিক্রয় করে পণ...
হাত-বদলের হাসি আমাকে আশ্বস্ত করে নৌকা খুলে রাখে। এবার পতন হবে: যেমন দক্ষিণা দেবে এই পরপারে মন্ত্রোচ্চারণে কাঠের তৃষ্ণা তেমনই উজ্জ্বল হবে অমাবস্যা ঢালা হবে শ্বেতকরবীতে তুমি কি মাধবী ছিলে? জলতলে অনাগত নিমগ্ন সূর্যাস্ত? পাতাবাহারের রাতে কোমল কড়ির খেলা এমন উদিত হবে শ্রীপুষ্পসঙ্কটে না জানি আকর্ষ তার কার কাছে ভেসে ভেসে যাবে খুঁটে বাঁধা অভিকর্ষ--এমন আরতি...
রাতভর জলের ভিতরে ডুবে ডুবে যাই খুলে যায় কত যে দরজা ! জলের দরজা বুঝি এরকম ! ডুবে যেতে যেতে কী যে ঘুম পায় ! আমি আগামীর কপাট খুলতে গিয়ে দেখি--- অবুঝ সুখেরা সব পেখম তুলেছে যেন অবিনশ্বর আলো সে-আলোয় ভাসতে ভাসতে কত কিছু তুচ্ছ হয়ে যায় ! গাছের কোটরে ঘাপটি মেরে বসে থাকা অতৃপ্তির ঘুণপোকা...
ছেঁকেছুঁকে লিখেছি কত না – মাতৃকুলের অপযশ হবে,সেই ভয়ে। গর্ভের জল ভেঙে গেলে বলেছি, কিছু না কিছু না! ঘর পুড়ে গেলে সেই ধোঁয়া,পোড়া মাংসের ধোঁয়া,পাকিস্তানের দিকে উড়িয়ে দিয়েছি। কেউ আর কানাকানি করেনি আমাকে নিয়ে! সমাজ, সংসারে,যন্ত্রণায় মরে যেতে যেতে, সেয়ানার মতো,উৎস ঘুরিয়ে দিয়েছি ধর্মতলায়,যেখানে ধর্ণায় বসেছে নরনারী। কখনও -বা,প্রেমিকের মিছিল চলেছে – ওরা স্রেফ বন্ধু আমার, এইমতো...
অন্ধকার ছুঁয়ে ছুঁয়ে মনে মনে বারবার গঙ্গায় গিয়েছি... ভোরবেলা অশ্রুটুকু তর্পণের ফুল অচেনা আলোর মুখ জেগে ওঠে আকাশ গঙ্গায় দেবী জাগে, মা প্রসীদ, ঝাঁকড়া এলোচুল দশমহাবিদ্যা জাগে, নিধনপ্রহর শেষে মাতৃরূপ জাগে! নতুন আকাশ জাগে, হে শরৎ, জেগে ওঠে পুলক ও প্রতিমা! অন্ধকার ধুয়ে মুছে আলো আসে কল্পপারাবারে— আলোর সমষ্টি থেকে অশ্রুর অভূতপূর্ব সুর জাগে শ্রবণের পারে! অতিব্যক্তিগত সেই সুর!            
তোমার রূপের বর্ণনা আমি লিখে রেখে গেছি, পাথরে খনিজে যেভাবে শস্য প্রবাহিত হয় ফাটলে ফাটলে, জেগে থাকা বীজে তোমার চোখের অশ্রুর মতো হাতের পাতায় ঝরে পড়ে জল যেন ঝুঁকে আছে মহাকাল, যার বৃষ্টির ফোঁটা শুধু সম্বল তোমার হাসির দমকে দমকে আধখানা তিল, ওপরের ঠোঁটে যেন সমুদ্রে ভেসে থাকা চাঁদ, ঝাউবন শুধু একা দুলে ওঠে আমি ফিরে এসে সেসব লিখেছি ভুর্জপত্রে, খোলা প্যাপিরাসে আর...
উত্তর কলকাতার এক নিষিদ্ধ পল্লীর প্রায়ান্ধকার ঘরে চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায় খুঁজে পেয়েছিলেন 'পথের পাঁচালি'র ইন্দির ঠাকরুণকে   এ যেন এক আবিষ্কার কবি রিলকে ও ভাস্কর রদাঁর কিংবা বিবেকানন্দ ও রামকৃষ্ণের প্রথম সাক্ষাতের মতো।   গাল তুবড়ে গেছে, শরীর ঝুঁকে পড়েছে সামনের দিকে, দৃষ্টিশক্তি ক্ষীণ আশি বছরের বৃদ্ধা চুনিবালা নিঃশব্দে মৃত্যুর প্রহর গুনছিলেন জীর্ণ ঘরের এক কোণে— বলার মতো ঘটনা চলচ্চিত্রে-মঞ্চে...
পরাজিত হয়েছেন। এর মানে প্রস্তুতি নিয়েছিলেন। দক্ষতাও অর্জন করেছিলেন। নিজেকে তীক্ষ্ণ কিরণসম্পন্ন করে তুলে নেমেছিলেন যুদ্ধে। লড়েছিলেন। সর্বস্ব দিয়ে লড়েছিলেন। এর পর এল পরাজয়। বিপক্ষ শক্তিশালী বেশি অথবা ভাগ্যের কোনো দুর্ভেদ্য চলন। আপনি পরাজিত হলেন মানে লড়ে হেরেছেন। এ তো বীরত্বের কথা। আমি এমন অনেককে জানি যাঁরা পরাজিত হবার ভয়ে কোনোদিন যুদ্ধক্ষেত্রেই নামেন...
গৃহ আমিও মুখ দেখি শীর্ণ ভাতের থালায় মুখ দেখি ভাঙা স্লেটে জেনে ফেলি বিরহী পাঠশালা, নিঝুম মায়ের লেখা রান্নাবান্না সমর্থিত ছোয়ের মুখোশ খুলে পাতায় আবৃত করেছি দেহ পাতায় দ্বিমুখী টান... এই যে পাঠশালার খেলনা, আমিও সহযাত্রী চাঁদের প্রতিবিম্বে আর ফিরব না জন্মকালে মুঠো শূন্য গৃহে সেইখানে নিয়ে চলো প্রিয় কাক, যেখানে ঝিনুকে পা কেটেছিল তোমার আমার   জঙ্গলমহল কখনও দুই ঠেঙ ফাঁক করে...
এই যে নিশঃব্দের ঘরে অজ্ঞাতবাস আমার একথা আমি কাউকে বলিনি। আমার বাহির আমার অন্তরের থেকে অনেক দূরে বসবাস করে। তুমি আমার বাইরের মানুষটাকে ভালোবাসলে, আমার অন্তরকে খুঁজে দেখলে না। একটাই ক্ষীণ দুয়ার দিয়ে হাওয়া চলাচল করে, একটাই দুয়ার ফিরে আসার, তুমি হাওয়ার কাছে নিজেকে প্রশ্ন করো, কেন অক্ষরের বিষ আমি পান করেছি। কেনই বা আলেয়া ও অতি আলোর...
তোমার চলে যাওয়ার মধ্যে আমি সন্ধেকে সরে যেতে দেখি। যেমন করে সরে যায় কৃষ্ণপক্ষের চাঁদ ঘোর অমাবস্যার দিকে। সাগরের ঢেউ ফুলে ফুলে বেলাভূমিকে পাগল করে যে অমাবস্যায়, তুমি চলে গেলে সেই অমাবস্যার মতো হয়ে থাকে ঘরবাড়ি। ঘুম থেকে উঠি চায়ের জল চাপাতে গিয়ে চা পাতার কৌটো খুঁজে পাই না থাক গে, পরে খাব ভেবে খবরের কাগজ নিয়ে বসি সেখানে কোনও এক বউয়ের খুনের খবর...
ভালো লাগে না ভালো লাগে না এভাবে খুর চালাতে স্তব্ধতার গলায় কামধেনুর বোঁটা থেকে গলে নামছে দুধের ঝরনা আমের শাখা কাঁপে চাঁদের চুন্বনে থরথর এ সময় যদি নদী থাকত কোনও আমার জানালার পাশে থাকত যদি মাধবীলতা অথবা শেফালি আমি আর কোনওদিনও শুনতাম না ভৈরব রাগে আলাপ
অরনি তোমার স্তনবৃন্ত থেকে দেখো জন্ম নিল দুধ-চারা আদর তাকে দেয়নি নিরাপত্তা তারা জল-কোষ থেকে স্নেহ মাখছে নীরবে পুষ্ট হচ্ছে অভিমান তারা স্পষ্ট হচ্ছে আদিমতায় মেঘ-রস তাদের ছুঁয়ে যায় গোপনে রেণু আদর পাঠায় তীব্র বৃন্ত "কামড়" আঁকড়ে ধরে বাঁচে তবু ভয় হয়- কোনো অমঙ্গল-অমাবস্যা-রাতে, দল বেঁধে আসে তারা, জংলী-জানোয়ারের মতো ছিড়েখুঁড়ে খাবে স্তনবৃন্ত, অভিশপ্ত তোমার দুধ-চারা লুকিয়ে রাখো শত-বর্ষ গভীরে, হাজার পশম-কোলে, শুষ্ক-ঠান্ডা...
পুরনো দিনের কথা মনে পড়ে। খাটের কোনায় শুয়ে মাথার ভিতরে থাকে অচেনা অট্টালিকা, প্রহরের বাঁশি। বেহালা বাজিয়ে ওঠে, কতিপয় ব্যথাতুর সদ্য কিশোর। সেইখানে পূর্বজন্ম - রেখে কোন এক মরা খালপাড় জুড়ে আমাদের স্নান স্নান খেলা। রাস্তার পিচে লাগা কালো বল প্যান্টের ঘষা, সদ্য গোঁফের রেখা মৃদু হাসি, বড় বড় চোখ। সে খেলায় হেরে গেছে, এখন আর নামবে না মাঠে, বড়জোর বেহালা বাজাবে। এখন...
গোলাবারুদের গন্ধে বাতাস ভরে গেলে বাঁচা কি ভয়ে পালিয়ে যায়রে সাধের এ জীবন, কষ্টেসৃষ্টে লালিত যাপন ফেলে? প্রাণের স্পন্দন ধ্বংসস্তূপ থেকে ঠেলে ওঠে যুগে যুগে, কালে কালে অনিবার পাথরের বুক চিরে নেমে আসে জলধারা আবহমানকালের সে জলপ্রপাত রুখে দিতে পারেনি কামানের অযুত নিযুত গোলা। পাথরের খাঁজে কুসুম ফুটে ওঠে পাপড়ি ছড়িয়ে হাসবে রক্তগোলাপ। গেল গেল করে কীসের এত প্রলাপ? ঘাসের...
দ্বিপাক্ষিক টান, কয়েকটা আঁচড় কিছুটা সুন্দর মুহূর্তের কারণে যখন চলেই এসেছ, তখন তোমাকে ভোগ করতে হবে। তোমাকে ভোগ করতেই হবে তোমাকে ছুঁয়ে দেখতে হবে, সাত রঙের জীবন। সে ভোগে হয়তো থাকবে রক্ত অথবা নোনা জল, ইচ্ছে হলে গড়ে নিও নতুন একটা দল। তুমি পারবে ওদের সাথে মিশে যেতে, পাওনা প্রসাদ চিবিয়ে খেতে। সব সংযম সরিয়ে ফেলে জয়ধ্বনি দেবে ভোগের তালে, পূর্ব গেছে তুমিও যাবে মরীচিকা...
ভেতরের দিকে ঢুকে এলে গাঢ় জখম। মৃত্যুর নেশার মতো ঘরের চতুর্দশ সম্ভাবনা নিয়ে আমি হেঁটে যায়। রাস্তার অসুখ, মহুয়ার গন্ধ নিয়েও মন্ত্রের জাদুর মতো খুলে ফেলো প্রায় সমস্ত নিয়মিত পাপ। পাইপ বেয়ে নেমে যাও আরও নীচে যেখানে ভূ-গর্ভস্থ জরায়ু ফুটে আছে নেশা করো। নেশা করো ঈশ্বরের অষ্টম আয়ুধের পাশে। শত্রুর দিকে তাকাও কৃতজ্ঞতাবোধে, সেই আসলে...