যথেষ্ট ব্যথার দেনমোহর দিয়ে তোমার ঋণ চুকিয়েছি কি? কত অশ্রুর মুক্তো দানা গুনে গুনে বটুয়াতে ভরতে হয় খাজানা চুকিয়ে দিতে, বলো মহাকাল? তবুও পরোয়া নেই। তুমি বল। বলতে থাকো। হাঁকো নীলামের দস্তুর। আমি সব কর্জ, দায়, ঋণ পাই পাই চুকিয়ে দেব। আনা, দুই আনা, অর্থ, অনর্থের মূলে শুধে দেবো ধার। পাতো হাত। অঞ্জলিতে পান্না চুনি...
কনিষ্ঠ সময় চিনি। আমারই বরেণ্য ডালে পাখি জ্যোৎস্নায় ডানা মেলে, শালবনে আলো মাখামাখি— অবাধ মৈথুন শেষে ফেরে। ফের, উড়ে যায় বনে বিষাদ প্রস্তর ভেঙে পথ তৈরি করেছে যাপনে… কখনও রক্তাক্ত তির, ক্রৌঞ্চশাবকের ডানা ছিঁড়ে বেপথু ও পরাহত। শবরেরই আকন্ঠ নিবিড়ে গভীর আশ্রয় চায়… চায় শব্দে উচ্চারিত হোক বহুবর্ণ সময়ের ওড়াউড়ি স্তব্ধ করে, শ্লোক— সে-শ্লোক বন্ধক রেখে সময়ের...
সবর্না চট্টোপাধ্যায়প্রকাশিত বই ‘চারদেওয়ালি চুপকথারা’।বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায়, দৈনিক এবং ওয়েব ম্যাগাজিনে লেখালিখি।প্রবন্ধ লেখেন বিভিন্ন বিষয়ে।কিশোর সাহিত্যে আগ্রহ রয়েছে।দেশলাই১.পলকা টোকায় ভেঙে গেল জলের পাঁচিল…দুটো পা বালির ভেতর।পাড় ভাঙছে হুড়মুড় করে...যে চোখ স্তব্ধতায়, অস্থির…আবার একবার সতীদাহ। গভীর খাদে একসঙ্গে ঝাঁপ…২.কত পথ হেঁটেছে একা সময়। কেঁদেছে আড়াল!ক্ষয়ে গেছে হাড়। মৃত শব্দের যন্ত্রণায় কাঁথা...
ভষ্মমাখা আমাদের আশ্রয় ১  ঘর বলতে সামান্য এই সন্তানহীন বৃক্ষের মতো পায়ের পাতার কাছে জমে থাকা শূন্যতাটুকু। শেষ রাত্রির গূঢ় অনুশোচনার মতো আজ স্তবকের পর স্তবক ভেঙে রক্ত গড়িয়ে গেল। বিষও উঠে এল কিছু। সান্ধ্য ভ্রমণের বোধহীন চিহ্নগুলি খুলে রেখেছে এক একটি স্পর্শের মতো অজানা সংলাপ। আমার জামা ছিঁড়ে গিয়ে বুকের...
তোমাকে লিখিনি আমি প্রেমের কবিতা একদিনও ওয়েব সিরিজের মতো ভেসে আসে ছবিময় শুধু সে ছবির ক্যানভাসে ভেসে আসে মুখ মণ্ডলী অর্ধেক কালো তার,অর্ধেক মুখোশেই ঢাকা। প্রেমের কবিতা কেন লিখিনা প্রশ্ন করেছিলে লিখেছি অনেক উড়ো চিঠি রোজ যাতায়াতপথে সে সব চিঠিতে নেই স্বাক্ষর মুঠোছাপ কারও যে হাত ধরতে গেছি সেই হাত ছেড়ে চলে গেছে । মাটি ভেদ করে...
ঠেলা নিয়ে হাঁক দেয় যে নাঙা কাবাড়ি তার সঙ্গে সাঙা হলে সুখে থাকা দায় সূর্য জলে ধোয় পুন্না, রঙের খোঁয়ারি ঝেড়েঝুড়ে ভোরবেলা আকাশে টাঙায় সংসার সহজ বড়, সংসার কঠিন কাবাড়ি যে কিনে ফেরে টুটাফুটা মন বউটি ঝালাই জানে, অগ্নিদাহে সেঁকে বিধিমতে সারানোর করে আয়োজন পদ্মাসনোস্থিত যোগী, দেহপদ্ম নিয়ে রোজ ভেসে থাকে কন্যা বিবাহের জলে আশহর দুঃখ কাঁধে কেউ ঘরে...
পৌষালী চক্রবর্তী পেশায় রাজ্য সরকারের আমলা। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে তুলনামূলক সাহিত্য বিভাগে গবেষক। নানা পত্রিকায় লিখে থাকেন। কবিতার বই: লিলিথ জন্মের আগে। মেলা উপমাসঙ্কুল পথ ধরে হাঁটতে বেরিয়েছি সরলবর্গীয় বনভূমির দেশ তোমাদের কাছে আশ্রয় দিও কোনো এক সরীসৃপ বিকেল ঘেঁষে। ট্রেন হকারের বিশ্রামের অবকাশে আমি হাটে বাজারে মেলা বসাই ঘুরচরকি হাতে ছেলে মেয়ে আসে গলাগলি থেকে আচম্বিতে তাদের বিয়েও দিয়ে...
উত্তম চৌধুরীসত্তর দশকের শেষে কবিতা লেখার শুরুপ্রকাশিত বই ১৪ টিসম্পাদিত পত্রিকা: দৃশ্যমুখপেশা: শিক্ষকতাবসবাস আলিপুরদুয়ারে প্রতিভার মুদ্রাগুলোবুকের পাঁজর থেকে শীতল বরফ সরিয়ে দিই,উষ্ণতা জমা থাক হৃদয়ের গভীর দেরাজে।কাজে কি অকাজে খুব খরচ করেছসকালের আলোয় বেড়ে ওঠা প্রতিভার মুদ্রাগুলো।চালচুলোহীন মাঠকে ডেকে বলছ, চলো।অথচ তুমি ও সে পাথর আর নদীর গাঢ় সমার্থক।এখন চোখ...
ছোটদের ছবি ওর ছোটবেলাকার কোনও ছবি নেই ছোটবেলা নেই? না না, ছবি নেই ছোটবেলাটা কি ছবির মতো নয়? সে আর ক'জনেরই বা হয়! তা বলে ছবি থাকবে না? হয়তো ক্যামেরা ছিল না সেই সব দিনে কটা বাড়ি ছবি তুলত ক্যামেরা কিনে? স্কুল নেই? বিয়ে বাড়ি? আত্মীয়স্বজন? পুজো বা জন্মদিন? খাওয়া? আয়োজন? বান্ধববর্জিত নাকি! ছিল না এসবের প্রয়োজন? প্রয়োজন না থেকে কারও পারে! হয়তো...
ভারভারা রাও | জন্ম ১৯৪০ সালের ৩ নভেম্বর ভারভারা রাও একজন সমাজকর্মী, প্রখ্যাত কবি, সাংবাদিক, সাহিত্য সমালোচক এবং সুবক্তা। ১৯৪০ সালের ৩ নভেম্বর তেলেঙ্গানায় তাঁর জন্ম। তাঁকে তেলেগু সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সমালোচক বলে মনে করা হয়। বিগত প্রায় ষাট বছর ধরে তিনি কবিতা লিখে চলেছেন। এখানে অনুদিত ‘মেধা’ কবিতাটি তাঁর অন্যতম...
কথা'কে এমন করে ঠোঁটে রাখা, যেন মনে পড়ে গেছে প্রথম সাক্ষাৎ! জ্যোৎস্নায় মাতাল রাতের বাতাস বাতাসে স্রোতের ভাঙাচোরা, চাঁদ, ভাঙাচোরা বাতুলতা, যেন এ' পৃথিবী একবারে একটিই জোয়ার, একটি মাত্র আবর্তনের সাক্ষী থাকতে চায় এই অবেলায় পরিচিত সকল পূজা হারায় অর্ঘ্যের অধিকার, তবু অন্তরস্থ ঈশ্বর জাগেন! যেন এইবার সময় পক্ষ নেবার, অথচ তোমার আমার অধিকার শুধু, শুধুই নৌকা...
ভারভারা রাও | জন্ম ১৯৪০ সালের ৩ নভেম্বর ভারভারা রাও একজন সমাজকর্মী, প্রখ্যাত কবি, সাংবাদিক, সাহিত্য সমালোচক এবং সুবক্তা। ১৯৪০ সালের ৩ নভেম্বর তেলেঙ্গানায় তাঁর জন্ম। তাঁকে তেলেগু সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সমালোচক বলে মনে করা হয়। বিগত প্রায় ষাট বছর ধরে তিনি কবিতা লিখে চলেছেন। এখানে অনুদিত ‘মেধা’ কবিতাটি তাঁর অন্যতম...
কুমারেশ তেওয়ারী জন্ম আসানসোলের কন্যাপুরে। পড়াশোনা বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে। বিভিন্ন পত্রিকায় লেখালিখি করেন। প্রকাশিত কবিতার বই: ‘জুড়ন পুকুর’, ‘ব্যালেরিনা ও নকশি কাঁথায় নষ্ট গন্ধ’, ‘শব্দ স্নানে বেজেছে এস্রাজ’।আট পংক্তির কবিতাযাপনপ্রকৃত সংলাপে থাকে নাটকের প্রানবন্ত রূপথিয়েটারে মায়া ওড়ে ছায়া ঢাকে কুয়াশার ঋণরূপের অরূপে থাকা যাপনের নেশাটি রঙিনঅন্তরালে পুড়ে যায় সুগন্ধের পরিযায়ী...
দেবীপক্ষ, মায়ের বোধন--- তারপর, সবাই বলল দেবী বিসর্জন--- এ তো বড় পুণ্যের! আসলে, লোকনিন্দা-সামাজিকতা হল মুখ্য- গল্পের আড়ালে রয়েছে সাজানো গল্প--- সর্বংসহা দেবী সাজানোর! পান থেকে চুন খসলো বাজলো উলু ধ্বনি, শাখ আর বিসর্জনের বাদ্যি মুহূর্ত অপেক্ষা, সব শান্ত সব শব্দ পরিণত হল শবে নীরব দর্শক দেখল--- আহা! আহা! বলে দেবীর পুণ্য বিসর্জনে দিল হাত তালি তারপর ফিরে গেল যে যার...
চারিদিকে নিস্তব্ধ অন্ধকার আলগোছে উড়ে চলেছে মেঘ ভেঙে পড়েছে ধৈর্য্যের সীমানা দুই দেশের মাঠের ওপর ভরা পূর্ণিমা। এখানে রাত জেগে থাকে দিনের আলোর মত অন্ধকার ঘুরে বেড়ায় গুটি পায় আলো এক হানাদারীর নাম গোপনে ধ্বংস করে আবেগের গোপনীয়তা। তোমার পরিশ্রম ধোয়া শীতল জলে একফোঁটা নোনতা স্বাদ লেগেছিল সন্ধ্যা নামার আগে পাখিরা ফেরার আগে ভাবে মাটির ভেতর থেকে জলের ভেতর থেকে সবটুকু সুখ ছেঁচে নিয়ে...
তোমার চিঠির কোনও উত্তর দিইনি বলে নিকটের রাধাচূড়া বিরাগ সেধেছে গত দীর্ঘ এক ঋতু। কী বলি প্রণয়চালে? অথবা শোকের মতো অশ্বত্থের ঝুরি নামা দেখে বিগত মৃত্যুর কোনও অনুষঙ্গ মনে পড়ে যদি? স্থিতধী উদ্ভিদজন্মে কার শিকড়ের টান কার চেয়ে বেশি, এই নিয়ে দড়ি টানাটানি শুরু হলে কার কাছে বিষমাখা এঁটো হাত পেতে কোন নামে কাকে ডাকি ময়দানে শহিদ...
দিব্যেন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়জন্ম: ১৯৯২ ২০১৭ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর।প্রকাশিত কবিতার বই:আমি অলকানন্দা ও ডায়েরির নীল পাতা (২০১৮)ভালবাসার ডাকপাখি (২০১৯)যেখানে নেমেছে রাত্রিযেখানে নেমেছে রাত্রিযেখানে নিবিড় গন্ধমাখা পুরনো কিছু বিকেলশ্মশান ধোঁয়ার অভিসার আতরের মতোঘুমে বুঁদ হয়ে থাকা কৃষ্ণচূড়ার প্রেমিকসুইসাইড নোটের না লেখা পাতাআর প্রশ্ন...রাইন নদীর তীরে শীততখনও সকাল হয়নিশুকনো পাতারা হাওয়ার স্রোতেতোমার...
২৩শে মার্চ থেকে, বাড়িতে পাখি আসে শুধু , ফাঁকা ছাদে তারা চোখ মোছে – আমাদের দেখা হয় না তবুও সকালের আলো দেখে মনে পড়ে, চিঠি আসতো একদিন পথে পথে লম্বা হয়ে শুয়ে থাকে ছায়া, বৃক্ষ,চরাচর আকাশ ভরে যায় শোকময় প্রার্থনায় বন্দরের ঘন্টা বাজে – বেজেই যায় মুসাফির সব ফিরে গেছে বলে, শূন্য বিকেলে চৈত্র ওড়ে একা ! খবরে...
ব্যর্থতা বড়র দায়, শিশু কি কখনও ব্যর্থ হয় হামাগুড়ি দিতে দিতে উঠে দাঁড়ানোর চেষ্টা সেও এক এভারেস্ট জয় আমি সেই জয়ের পতাকা কুরুক্ষেত্রে নিয়ে গেলে মাটি থেকে উঠে আসে চাকা যুবতী মায়ের স্তনে কানীন পুত্রের জিভ বলে ওঠে,শেষ নয়,যুদ্ধ শেষ নয়।
  অন্য জন্মে ফিরে আসি যদি, মানুষ নয় আর। মানুষের নামে ধিক্কার ধিক্কার। পরজন্মে স্কারলেট ম্যাকাও হবো আমি। নীল পিঠে লাল পালক জ্বলজ্বল করবে, আর, ওপরের হলুদ ডানার কিনারে সবুজ রঙ লেগে থাকবে। দীর্ঘ সময় উড়ে বেড়াবো আমি এপ্রান্ত ওপ্রান্ত। আমার ঠোঁটগুলো সাদা হবে, আর, ডগাটি কালো। বাঁকা ঠোঁটে আমি অগ্রাহ্য করে যাবো পৃথিবীর যাবতীয় আঁচড়। পরজন্মে আমি মানুষ হবো না আর। মানুষ নষ্ট...