সুপ্রভাত মুখোপাধ্যায়বসবাস বীরভূম জেলার আমোদপুরে। পড়াশোনা ইংরেজি সাহিত্যে নিয়ে। কবিতার বই: পোস্টকার্ড, ছায়াছবির গান কৃষিকথার আসর ইত্যাদি। সম্পাদিত পত্রিকা: ৬ ফাল্গুনকর্মীমানুষ তৈরিই হয় এক ধরনের শ্রম থেকেআরেক ধরনে সেও খেটে খুঁটে খায় —কত যে উন্নত সব খোঁজার তাগিদেজীবনকে জড়িয়েছে কত রকমের সব ভাবে —ভবের আসনে যত রকমের বাজারী হাওয়াইআমাদের...
ওয়াহিদা খন্দকারবেশ কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় কবিতা লিখছেন ওয়াহিদা।বাস্তব ও অতিচেতন মিলে তাঁর কবিতা হয়ে ওঠে বিপন্ন পৃথিবীর গল্প।এর আগে প্রকাশিত হয়েছে ‘নীরব দশমিকের ভিড়’।তাঁর নতুন কবিতার বই ‘বিবর্ণ সিলেটের সমীকরণ’। হ্রেষাবারবার ভেঙে যায় সাজানো দাবার ঘরবাড়ি।সংস্কারের পর,প্রত্যেকবার ভেবেছি গুছিয়ে খেলব।বেঁচে থাকার এ খেলায়সাদা সাদা গাছ। পাখি, সমুদ্র, জনতা...সবই...
আলো আর বৃষ্টি জড়াল
ছবিটা সরিয়ে নিলে একটা ফুলদানি হতে পারে
আলোফুল ...
বেদনা, পরমসত্য তীরে এসে ডুবে যাবে তরী
বেদনা, পরমসত্য এর উপর আর কথা নেই
বেদনা, পরমসত্য পথে চলবে,
সে তোমার সাথে চলবে না
অথচ আরোগ্য সে-ই, দূরে বসে একমাত্র সে-ই পরিত্রাণ
বেদনা তাকেই পালটা দোষ দাও,
যত ভুল একমাত্র তার
সেও তো তোমায় চেনে, সেও জানে পাতা উলটে
পরে চলে যাওয়া
বেদনা পরমসত্য, এর কোনও শেষ নেই বলতে...
ব্রহ্মজিৎ সরকারপ্রথম দশকের কবি। সীমান্ত ঘেরা ছোট্ট জনবসতি হলদিবাড়িতে বেড়ে ওঠা। বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় লেখালিখি। প্রকাশিত কবিতার বই ‘জড়িয়ে আছি কাঁটাতার’।চেপে রাখা কান্নাএকটা সকাল এসে, হাওয়া আর মেঘ এসেবন্ধ জানালা খুলে দিকপৃথিবীতে কি কারণে ঘুমঅন্ধ কুয়োর মত মজে আছে!পুরুষেরা কেন আজ বামন হয়ে গেছে?স্বপ্নের ভেতর যারা পেরিয়ে এসেছে নদীসেই সাঁকো...
সুমন মল্লিকজন্ম ১৯৮৫ সালে কোচবিহারে৷ বর্তমানে শিলিগুড়িবাসী৷ ইংরেজি সাহিত্যে স্নাতকোত্তর পেশায় শিক্ষক৷ প্রকাশিত কবিতার বই পাঁচটি ৷ শখ : ভ্রমণ, গান শোনা, সিনেমা দেখা, ছবি তোলা এবং বই পড়া ৷সেসব কথাসেসব কথা জানে শুধু প্রিয় নদী৷চাঁদের আলোর মাঝে কীভাবেএকটুকরো অন্ধকারে আমি আর তুমিচকোর হয়ে যেতাম...কীভাবে আমাদের বুকের ছলাৎছলমিশে গিয়ে...
যথেষ্ট ব্যথার দেনমোহর দিয়ে তোমার ঋণ চুকিয়েছি কি?
কত অশ্রুর মুক্তো দানা গুনে গুনে বটুয়াতে ভরতে হয় খাজানা চুকিয়ে দিতে, বলো মহাকাল?
তবুও পরোয়া নেই। তুমি বল। বলতে থাকো। হাঁকো নীলামের দস্তুর।
আমি সব কর্জ, দায়, ঋণ পাই পাই চুকিয়ে দেব।
আনা, দুই আনা, অর্থ, অনর্থের মূলে
শুধে দেবো ধার।
পাতো হাত। অঞ্জলিতে পান্না চুনি...
বর্ষায় বাড়িঘর ভেসে যায় জাহাজের মতো।
পাখিদের জায়গায় মেঘেরা দুপুর থেকে ওড়ে।
এইসব স্মৃতিদের রেখে দেয় যারা অক্ষত,
বারবার চাইলেও ফিরতে পারে না বন্দরে।
পাটাতন ভেবে জল বাড়ির বারান্দায় জমে।
নাবিকের লংকোট কেঁপে যায় হাওয়ার দাপটে।
শরীর ধোয়ার পর যত দ্রুত আর্দ্রতা কমে,
ঘরে মেলে দেওয়া শাড়ি ততটা আপন হয়ে ওঠে।
বাতিঘর সেজে দূরে জ্বলে ওঠে শহরের...
ছন্দম মুখোপাধ্যায়ছায়া গণকতাকানো যেতে পারেসমৃদ্ধ কৃষকের স্ত্রী হবার পরবুঝেছি ফসল ঈশ্বরী নয়গোসাপযে, ঘামে, হাসির আড়ালে,স্পর্শটুকু কেড়ে রাখেআমি দাঁড়িয়ে থাকলাম,দেহসাঁটা আলোয়, মাঠের একপাশেযেখানে কোনো স্বপ্নের উদ্বৃত্ত পড়ে আছেসফরজেগে উঠেছেপুড়ে যাওয়া গো-হরণের খালযাকে ঘিরে রয়েছেসুয়েজের থেকেও গভীর একটি রাতধাক্কা নেই,চারপাশে মৃত জনপদতৃতীয় পৃথিবীএ-সবের ভেতরলণ্ঠনের আলোয় রোগা হয়ে যাওয়ানদীর মতো মা, তোমার...
সৈকত আরেফিন
শিক্ষক
বাংলা বিভাগ
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ
পাখি
গোধূলি-গগনে মেঘে ঢেকেছিল তারা
নিতান্ত খেলাচ্ছলে তুমি জানতে চাইলে
প্রিয় পাখির নাম
আসন্ন সন্ধ্যার ম্লান অন্ধকারে
তোমার মুখের দিকে তাকালাম--
কত সহজ প্রশ্ন! অথচ তাতেই দিশেহারা
আমি তুমুল হাহাকারে
দীর্ণ হতে হতে পাখিটির
নাম বললাম।
পাখি আমার একলা পাখি—
পৃথিবীতে কত পাখি আছে
কত গান আছে
অথচ বুকের দিকে তাকিয়ে দেখি
গানঅলা একটি পাখিই
চুপে বসে আছে।
আমার যা কথা...
মিলন
বারবার দেখা হবে আমাদের
নদীর ধারে...
পাহাড়ের ঢালে...
অথবা গ্রন্থাগারের নীরবতায়
এই চরাচর ছেড়ে যাচ্ছ
যাও—
তবে মোহনায় যেও না
ওখানে নবীন পলি
রাত্রির কারণ বোঝে না
জেনে রাখো অভিমান
সফল সন্ন্যাসী কামনাসাগর পাড়ি দিয়ে
ছুটে যায় অরণ্যে, মোক্ষ লাভের আশায়
চিন্তা হয়... যদি পথ হারিয়ে ফেলো
প্যাডক গাছের ছায়ায়
নাভি ভরা তেজ পথে উগরে দিয়ে,
জলপাত্র উজাড় করে ফিরে এসো
দেখা হোক আমাদের নাগরদোলায়,
দেখা...
ফুলের বাগান করার অভিজ্ঞতা নেই, বিড়াল পোষার অভিজ্ঞতা নেই। তবু একটা বারান্দা আমিও চেয়েছি। বারান্দার দড়িতে ভাঁজ করে ঝুলিয়ে রাখব জঙ্গল, কিছু পাখির ডাক, একটা পাহাড়ি নদী আর তাতে পা ডুবিয়ে তোমার হেঁটে বেড়ানো। যে রঙমিস্ত্রির দেয়াল রঙ করার কথা ছিল, বালতিতে রঙের ব্রাশ ডুবিয়ে ফিরে গেছে, তার উৎকণ্ঠাও...
নিজের মতো এক সন্ধ্যায় কেটে ফেলি হাতের শিরা
ভ্রম এসে আমাদের ন্যুব্জ করে গেল
তার দস্তানার ভিতর লুকোনো ছিল মেঘের পাহারা
তারও ভিতর ক্রোধ, মামুলি অস্ত্র
চাঁদের দুধ পড়ে পুড়ে গেছে শস্য। আমি সেদিকে যাইনি আজ
ধোঁয়া-ওঠা সেই প্রান্তর বীভৎস এক অলৌকিক হয়ে আছে
নিজস্ব শিল্পের মতো কেটে ফেলেছি হাতের শিরা। শ্বাস বুজে আসার আগেও
একবার...
জিরাফের পায়ে জল দিতে দিতে গলা লক লক করে
আকাশের মেঘ ছুঁয়ে ভাবে, এই তার দেশ
ধুলো মেখে পরে আছে আমার স্বদেশ...
আমার পায়ের নীচে পাথরের জমি
আমার জমির পাশে হাড় কঙ্কাল
জিরাফ দেখেছে তাকে!
সে কি আজ ভুলে গেছে মায়াময় নদী
ভুলে গেছে ধ্যান রত সাধুর আদেশ!
ধুলো মেখে পরে আছে আমার স্বদেশ...
১
যা হচ্ছে তা হোক
যা হচ্ছে না তা হওয়ার বৃত্ত থেকে
খুলে খুলে পড়ছে শব্দ
মিথ্যের সত্যিরা লুকিয়ে থাকে ডানায়
সত্যির মিথ্যের জেগে থাকে বুকে....
কিছু জটিল শিরশিরানি
মানুষকে বাঁচতে দিচ্ছে গুটিপোকার মতো...
একটা দুটো সত্যি
আকস্মিক ভাগ্যের মুখে থুবড়ে পড়ে হাসে...
কান্নার এক আলোকিত জোর আছে বুকে
এখানে লুডোতে সাপ আর সাপ
সাপের শরীর ধরে মন্ত্র শিখেছি বলে
এখন আমাকে...
তোমাকে লিখিনি আমি প্রেমের কবিতা একদিনও
ওয়েব সিরিজের মতো ভেসে আসে ছবিময় শুধু
সে ছবির ক্যানভাসে ভেসে আসে মুখ মণ্ডলী
অর্ধেক কালো তার,অর্ধেক মুখোশেই ঢাকা।
প্রেমের কবিতা কেন লিখিনা প্রশ্ন করেছিলে
লিখেছি অনেক উড়ো চিঠি রোজ যাতায়াতপথে
সে সব চিঠিতে নেই স্বাক্ষর মুঠোছাপ কারও
যে হাত ধরতে গেছি সেই হাত ছেড়ে চলে গেছে ।
মাটি ভেদ করে...
শোকের কাছ ঘেঁষে অতীত নদীরা থেমে যায়
আঘাত ছোঁয়াচ পেলে ভেঙে যাবে মেঘেদের বাড়ি—
সেও বুঝি জল হবে, ধুলো হবে তুচ্ছ শরীর;
খাঁচারা বদলে যাবে প্রতি জন্ম-অধ্যায় শেষে।
কারা যে বসেছে এসে নির্বাক সময়ের কাছে একা
মানুষের অন্ধকারে ঘুম আনে সমস্ত মৃতস্বর,
প্রহরের অপেক্ষা শুধু— এই বুঝি সাঙ্গ হবে খেলা
কীভাবে নিভে যাবে তারাদের সাবেক উৎসব।
স্রোতেরা...
ভালোবাসা যায় কিনা, ভালোবাসা থাকে কি, জানি না
স্মৃতির পুরোনো খামে গ্রহণের রেণু লেগে আছে
জুড়িয়েছে চোখ আর মাটি পুড়ে গেছে খোলা পায়ে
কীভাবে কাউকে, বলো, এতখানি ভালোবাসা যায়?
চোখের সামনে থেকে না-দেখার ভান করে দেখি
চোখের আড়াল হলে সে দৃশ্য সহ্য হয় না
বলি তো অনেক কথা, না-বলাটুকুই বেশি বলি
চলি ভাঙা-ভাঙা পথে, পথে পথে...
স্পন্দন চট্টোপাধ্যায়উত্তরপাড়া রাষ্ট্রীয় উচ্চ বিদ্যালয় থেকে পাশ করে এবং পরে ন্যাশানাল ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজি, আগরতলা থেকে স্নাতকোত্তর পাঠক্রম সম্পূর্ণ করেন ২০১৭ সালে। প্রকাশিত বই: ‘রিটার্ন টিকিট নেই’, ‘ক্লিভেজ জুড়ে দেওয়াল লিখন হোক’। বর্তমানে মুম্বইয়ে Cine Riser Digital Media Pvt. Ltd.–এ Content Writer, Editor & Social Media Executive হিসেবে কর্মরত।ছায়াসবারই...
১
তোমাকে লিখবো ভাবি
তুমি থেকে সম্বৎসর খসে গেলে
নাম না জানা আশীর্বাদ দাউদাউ জ্বলেছিল
আমাদের মাটি ও দিনাঙ্কে
তারপর একটি একাকী মন্ত্র
ঝরে পড়ল বিবাহের গায়ে
তুমি মৃদুতর হলে
আমি যৎসামান্য হলাম
তোমার অপলকের ভেতর
পলক পলক জল তুললাম
তোমার ভেতর চাঁদ স্বচ্ছ হলে
আমি বাহারী নাও নিয়ে
সাতটি জন্মের অনুপম, ঘরবাদলার কথাকন্না,
লুকোচুরির বৃষ্টি দেখে এলাম
তুমি স্বাদ ছুঁয়ে দেখো, গ্রহণের সূত্র...