চৈত্র সেল: দীপশেখর চক্রবর্তী

0
24

চৈত্রের হাওয়ার ভেতরে ওড়ে সন্ধের হারমোনিয়াম, বালিকার প্রেতিনীর স্বর
কপালে এপ্রিল ঘাম, পুরোনো নাইটির বুকে লেখা থাকে সস্তার সন্ধ্যারতি কথা
লাইনের দুপাড়ে বসেছে চৈত্রের সেল, ধুমধাম, সদ্য যুবকের শিরা ফুলে ওঠে আশ্চর্য কম দাম চিৎকার করে বলে
আমাকে নিও না এই ভিড়ের ভেতরে। জেনেছি এ জীবনে
যতটুকু ঐশ্বরিক স্বর শুনে যাব, সেটুকু রয়েছে একা, নিভৃতে, গোপনে
প্রত্ন বালক আমি, যেটুকু নারীগন্ধ সংগ্রহ করে রেখেছি আঁচলে তোমার
সন্ধের এই দানবীয় ভিড়ের ভেতর এভাবে হারিও না
জেনেছি নিজেও গোপনে বহুবার যে প্রজাপতি মানুষের হৃদয় হরণ করেছে ফুলে ফুলে ঘুরে তার আয়ু ক্ষীণ, এমনকী ফুলেরাও তার মৃত্যুদৃশ্যের কাছে দাঁড়ানোর অধিকার পায় না
এই অভিশাপ নিয়ে বেঁচে থাকা, যদি হাত ছেড়ে যাও তবে কোন নারী বলো শেখাবে কাঠকয়লার ওপরে ঐ স্পর্ধিত চলা! কে করাবে স্তন্যপান?
কপালে এপ্রিল ঘাম, সস্তার জামার আকাশে ওঠে উৎসবের চাঁদ
লাইনের নতুন আলোর ভেতরে নামে শাদা শাদা পোকাদের দল
যেন অপ্সরা, বহুকাল স্বর্গের দরবারে নেচে আজ স্বেচ্ছায় নরকে নেমেছে, মৃত্যুকামনায়
দেখ কীভাবে একজন যুবকের দেহ থেকে রক্ত চুষে খায় সন্ধ্যার মশকেরা, তারপর নিজস্ব পাখার শব্দকে গান ভেবে, সুখ ভেবে, উড়ে যায় বহু বহু দূর
আমাকে নিও না ঐ সুখের ভেতরে বারবার, সন্ধের হারমোনিয়াম, দূরে কোনও প্রেতিনীর স্বর হেসে ওঠে অযথা গানের ভেতর
আমার চৈত্রের বয়স আজ যেন গ্রীষ্মের ঘুমন্ত বালিকা
বিক্রয় হয়ে যায় তার ঘুম অনায়াসে সস্তায়, সদ্য যুবকের ফুলে ওঠা শিরার ভেতরে।