প্রয়াণলেখ: কলিপত্নম রামা রাও (১৯২৪-২০২১)

4160
13491
Kalipatnam Ramarao
কলিপত্নম রামা রাও

দীপায়ন দত্ত রায়: সময়টা ১৯৩৭ সাল। ইশকুলের শিক্ষকের থেকে চেয়ে নিকোলাই গোগোলের গল্পবই পড়তে শুরু করে বছর তেরোর একটি ছেলে। বাড়িতে তার যে ভীষণ পড়াশোনা-বান্ধব পরিবেশ ছিল, তা নয়। বাবা কৃষক, সারাদিন মাঠেঘাটেই কেটে যায়। বয়ঃসন্ধির চৌকাঠে সদ্য পা রাখা পড়ুয়া ছেলেটার অবশ্য বাবার জীবিকা নিয়ে কোনও অভিযোগ, অস্বস্তি নেই। বরং বাড়ির উঠোনে বসে ছুটির দিনে বই পড়ার ফাঁকে বাবাকে ক্ষেতে বীজ ছড়াতে দেখে মজাই লাগে তার।

সেদিনের সেই গোগোল-পড়া ছেলেই পরবর্তীতে হয়ে উঠবে আধুনিক তেলুগু সাহিত্যের অবিসংবাদী পথিকৃৎ কলিপত্নম রামা রাও ওরফে ‘কারা মেস্তারু’, যাঁর নিজের লেখা গল্পই অনূদিত হবে রাশিয়ানে। জন্ম অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীকাকুলাম জেলার পণ্ডুরু গ্রামে। শৈশব ও বাল্যকাল কেটেছে মুরাকায়। কলেজের পাঠ শেষ করেই দরিদ্র পরিবারের সন্তান রামা রাও যোগ দেন চাকরিতে। জীবনের প্রথম বড় চাকরি নেভাল আর্মামেন্টস্ ডিপোতে। কিন্তু, সেই কাজে সৃজনশীলতার বিকাশ ঘটতে পারছে না দেখে মোটা মাইনের এই চাকরি ছেড়ে বিশাখাপত্তনমের সেন্ট অ্যান্থনি স্কুলে মাত্র ৪০টাকার বিনিময়ে গণিতের শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। ১৯৭৯-তে অবসর নেওয়া পর্যন্ত এই স্কুলেই পড়িয়েছেন।

বিদেশি সাহিত্য নিয়মিতভাবে পড়লেও কলিপত্নম অচিরেই বুঝতে পারেন তাঁর চারপাশের নিপীড়িত, দরিদ্র, প্রান্তিক মানুষের সমস্যার কথা সাহিত্যে তুলে ধরতে গেলে তাঁর চাই স্বদেশীয় দীক্ষা। আর ঠিক এই দীক্ষাই ওঁকে দেবেন মার্ক্সীয় ভাবধারায় প্রাণিত অগ্রজ তেলুগু লেখক রাচাকোন্দা বিশ্বনাথ শাস্ত্রী। বিশ্বনাথ শাস্ত্রী একটি চিঠিতে রামা রাও-কে লেখেন, “আর পেলব সাহিত্য নয়, এখন শুধু রক্ত আর আগুন ঝরানো লেখা।” উদ্বুদ্ধ হন রামা রাও, পান সাহিত্য নির্মাণের নতুন দিশা। এই সময়ে পরপর লিখে ফেলেন ‘আরতি’, ‘হিংসা’, ‘বাধা’, ‘ইল্লু’, ‘অভিশাপথুল্লু’, ‘অশিক্ষম্-অবিদ্যম্’, ‘পালায়িথুণ্ডু’, ‘থীরপু’-র মত অসামান্য সব গল্প। এই পর্বের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য কাজ নিঃসন্দেহে ‘যজ্ঞম্'(১৯৬৪), যাকে অনেকসময়ই আয়তনের কারণে ‘গল্প’ না-বলে ‘নভেলা’ বলা হয়।

কলিপত্নম রামা রাও-এর লেখায় ‘অবাধ প্রগলভতার প্রশ্রয়’ (শঙ্খ ঘোষ) কোনওদিনই ছিল না। সংখ্যার নিরিখেও ওঁর লেখার পরিমাণ কম। দীর্ঘ ছ’দশকের কর্মজীবনে রামা রাও তো শুধুই লেখেননি, করেছেন শিক্ষকতা, অজস্র সমাজসেবামূলক কাজকর্ম। প্রথম গল্প লেখেন ১৯৫৫ সালে, পরিত্যক্ত একটি পোস্টকার্ডের পিছনে, গল্পের নাম ছিল ‘চিত্রগুপ্ত’। সেই গল্প তাঁর নিজেরই পছন্দ না-হওয়ায় পরের আট বছর লেখালেখি বন্ধ রাখেন। তাই ‘যজ্ঞম্’ এক অর্থে তাঁর প্রত্যাবর্তনের গল্প। এই গল্পে ঘটনার কেন্দ্রস্থল অন্ধ্র উপকূলের ছোট্ট গ্রাম সুন্দরপলম্। এই গ্রামেরই অন্ত্যজ মালা সম্প্রদায়ের মানুষকে কিভাবে শোষিত হতে হয় ধনী গোপন্নাদের হাতে, তার ভয়াবহ বিবরণ এই লেখার উপজীব্য। গল্পের আয়রনি এখানেই যে, শ্রীরামুলু নাইডুর মত ভালো মানুষ যখন মালা সম্প্রদায়ভুক্তদের পাশে দাঁড়াতে চায়, তখন তাঁকে নিজেদের শ্রেণীশত্রু ভাবতে শুরু করে চিরশোষিত অপাংক্তেয় মানুষগুলো। ‘যজ্ঞম্’-এর বিচক্ষণ যুবক আপ্পালারামুদু চরিত্রটি রামা রাও-এর মানবতাবাদী দর্শনেরই মুখপাত্র।

রামা রাও-এর পরবর্তী সময়ে লেখা গল্পগুলোর মধ্যে ‘পালায়িথুণ্ডু’ বেশ উল্লেখযোগ্য। গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র রাজশেখরম্-এর বাবা ছিলেন স্বাধীনতা সংগ্রামী, গান্ধীজির বিশ্বস্ত অনুগামী। কিন্তু, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সমাজের পুঁজিবাদী উদাসীনতায় কম রোজগেরে, আদর্শবাদী রাজশেখরেরা আজ গুরুত্বহীন, ব্রাত্য। শুধু সর্বহারা নয়, মধ্যবিত্ত শিক্ষিত মানুষেরও অস্তিত্ব আজ বিপন্ন, অর্থসর্বস্ব সমাজে আদর্শ আজ বিস্মৃত ফসিল।

১৯৬৭ সালে বাংলার নকশালবাড়ি আন্দোলন এবং তার ঠিক পরেই শ্রীকাকুলামে সংঘটিত কৃষক অভ্যুত্থান বিশেষ প্রভাব ফেলে রামা রাও-এর মনে। তিনি উপলব্ধি করেন, “মূলধারার উপমহাদেশীয় সাহিত্যে কৃষিজীবন কখনোই প্রাধান্য পায়নি।” ঠিক করেন, তিনি লিখবেন কৃষক, মজুরদের নিয়ে। তবে, মানবদুর্দশার সামগ্রিকতার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে থাকা এই বিদ্রোহী গল্পলেখক কৃষক, মজুরদের নিয়ে লিখেই থেমে থাকেননি, বরং সমস্ত অন্তেবাসী, প্রান্তিক মানুষের জীবনের মর্মছোঁয়া যাপনচিত্র এঁকেছেন।

‘শান্তি’ গল্পে দেখিয়েছেন কিভাবে উচ্চপদস্থ পুলিশ, সরকারি আমলারা হাত মিলিয়ে শোষণ করে গ্রামের অসহায় নিরক্ষর মানুষদের। ‘ভয়ম্’ গল্পটি আরও সাংঘাতিক। গ্রামের নির্ভীক তরুণ সত্যইয়া বীণ্ বাজিয়ে সাপের খেলা দেখায়। সত্যইয়ার উদ্দেশ্য সাপ সম্বন্ধে গ্রামের মানুষের মনে যে-সমস্ত ভয়, কুসংস্কার এবং অবৈজ্ঞানিক বিশ্বাস রয়েছে, সেগুলোকে দূর করা। দুর্ভাগ্যবশত একদিন খেলা দেখাতে গিয়ে সত্যইয়া নিজেই বিষধর সাপের কামড় খায়। গ্রামের সবাই তাকে ওই অবস্থাতেই ফেলে রেখে এক-এক করে চলে যায়। গল্পের তরুণ কথক সোম্মুলা গুরাভাদু পাঠকের উদ্দেশে শ্লেষাত্মকভাবে বলে, “গ্রামবাসীরা সবাই খেলা দেখে মজা নিত। এখন সত্যইয়াকে মরতে ফেলে রেখে সকলে চলে গেল। এ-ও এক দারুণ খেলা, বলুন!”

‘চাভু’ গল্পে সমাজের শীর্ণ কঙ্কালের মলিন ছবিটি আরও প্রকট। নীচু জাতের বিধবা বুড়ির গোটা জীবন কেটেছে ঠান্ডায়। চরম শীতের দিনে আগুনে হাত সেঁকে নেওয়ার অধিকারটুকুও ছিলনা তার। দিনের পর দিন শীতার্ত এই বৃদ্ধা অবশ্যম্ভাবী নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মারা যান। তাঁর সম্প্রদায়ের নিয়মানুযায়ী তাঁকে কবর দেওয়া উচিত হলেও বৃদ্ধার শেষ ইচ্ছা একটাই : জীবদ্দশায় যেহেতু তাঁর আগুনের তাপ নেওয়ার অধিকার ছিল না, আজ তাই সে চায় নিয়ম ভেঙে তাঁর ছেলে যেন তাঁকে চিতায় পোড়ায়, যাতে অন্তত মৃত্যুর পর তাঁর শরীর খানিক উত্তাপ পেতে পারে। কিন্তু সমস্যায় পড়ে মৃত বিধবার ছেলে। ওই গ্রামে দলিতদের চিতায় চন্দনকাঠে পোড়ার অধিকার নেই। কি করে মায়ের সৎকার করবে সে? গোটা সম্প্রদায় বিদ্রোহ ঘোষণা করে গ্রামের প্রভুদের বিপক্ষে। একজন অতিনগণ্য দেহাতি বৃদ্ধার মৃত্যু জন্ম দেয় অপ্রত্যাশিত গণ-অভ্যুত্থানের। এইসময়েই লেখা ‘জীবনধারা’ গল্পটি রামা রাও-এর লেখকজীবনে একটি মাইলফলক। এই গল্পে দেখি, বিত্তশালী ব্রাহ্মণেরা গরিবদের জলপান করার অধিকার কেড়ে নিচ্ছে। পেয় জলের অভাবে মৃত্যু হচ্ছে গ্রামবাসীর। আর অনন্যোপায় বঞ্চিতরা বেছে নিচ্ছে বিদ্রোহের পথ। নিপীড়িতদের সমবেত ডাক ভেসে আসছে কানে — “নীরু লেদা মরণম্” (হয় জল নয় মৃত্যু)। অন্যান্য গল্পগুলোর মধ্যে ‘স্নেহম্’, ‘বাধা’, ‘কুত্রা’, ‘মহাদাসীর্বচনম্’, ‘কুরুপাবানাল্ল’ (বর্ষাকাল), বিষয়বস্তুর বৈচিত্র‍্যে ও অভিনবত্বের কারণে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।

১৯৭৯-তে শিক্ষকতার চাকরি থেকে অবসর নেন সব ছাত্রের প্রিয় ‘লেক্কালা মেস্তারু’ (গণিতের শিক্ষক) রামা রাও। অবসর গ্রহণের পর থেকে সমাজসেবামূলক কাজকর্মে আরও বেশি করে নিজেকে জড়িয়ে নেন মানবিক এই সাহিত্যপ্রণেতা। ওঁর অনাড়ম্বর জীবনযাপন ভোগসমৃদ্ধ এ-যুগে শিক্ষণীয় এবং দৃষ্টান্তমূলক। আত্তাদা আপ্পালা নাইডুর লেখা থেকে জানা যায়, দীর্ঘ সাতানব্বই বছরের জীবনে নিজের নামে একটি বাড়ি পর্যন্ত ছিল না রামা রাও-এর। ১৯৯৫-তে ‘যজ্ঞম্ থো থোম্মিদি’ ( যজ্ঞম্ এবং আরও নয়টি গল্প) সংকলনের জন্য পাওয়া সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কারের সমস্ত অর্থমূল্যই দান করেন একটি গ্রন্থাগার নির্মাণের জন্য জমি কিনতে। এর ঠিক দ’বছর পর, এই গ্রন্থাগার তেলুগু সাহিত্যচর্চার জগতে এক নতুন ইতিহাস তৈরি করবে।

সালটা ১৯৯৬। কলিপত্নমের অভিন্নহৃদয় বন্ধু কবি মধুরত্নকম রাজারাম অনেক খুঁজেও তেলুগু সাহিত্যের ইতিহাস-সম্বলিত একটি বই পাচ্ছিলেন না। শরণাপন্ন হন কলিপত্নমের। কিন্তু তাঁর কাছেও ছিল না সেই বই। অতঃপর, সাময়িক হাপিত্যেশের পর্ব কাটিয়ে দুইবন্ধু ঠিক করেন তৈরি হবে ‘কথা নিলয়ম্’ (কথা নিলয়) — এমন এক পাঠাগার যেখানে তেলুগু সাহিত্যের প্রায় সমস্ত খ্যাত, অখ্যাত বই সাধ্যমত সংগৃহীত হবে। বন্ধুযুগলের এই কমযজ্ঞে দোসর হন কলিপত্নমের স্ত্রী কবি রামালক্ষ্মী রাও-ও। ২২শে ফেব্রুয়ারি ১৯৯৭ পথ চলা শুরু করে ‘কথা নিলয়ম্’। বর্তমানে লক্ষাধিক তেলুগু বইয়ের সংগ্রহে ঋদ্ধ এই গ্রন্থাগার দেশবিদেশের অগণিত তেলুগু সাহিত্যের গবেষকদের কাছে সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য প্রতিষ্ঠান।

সাহিত্য অকাদেমি প্রাপ্তির একবছর পর ১৯৯৬ সালে ‘না কথা রায়াদম্ ভেনুকা কথা’ (আমার গল্প লেখার গল্প) শীর্ষক বক্তৃতায় বলেছিলেন, “আমি গল্প লেখা ছেড়ে দিলেও অন্য আরও অনেকে গল্প লিখবেন। মাঝে-মাঝে মনে হয়, গল্পকার অনেক আছে, ভালো শ্রোতা বরং কম।” গত ৪ঠা জুন উনি আমাদের ছেড়ে চলে যাওয়ার পর থেকে শুধু এটাই মনে হচ্ছে বারবার : আমরা আদৌ ‘ভালো শ্রোতা’ হয়ে উঠতে পেরেছি তো? যদি এখনও না পেরে থাকি, তাহলে আর কবে পারব?

4160 COMMENTS

  1. hello my lovely stopforumspam member

    What are the Types of Loans in Ohio depending on the purpose
    Specific purpose payday loans in Ohio. Funds received in debt may be spent only for a specific purpose specified in the loan agreement.
    Non-purpose loan. The debtor may spend the money received at his discretion.
    Most popular specific purpose payday loans in Ohio are:

    House loan. The most common, of course, is a mortgage when the purchased property acts as collateral for a loan. Sometimes a youth loan is issued, with lighter conditions for debtors. Still quite common is a housing loan that does not imply purchased housing in the form of collateral.
    Car loan – payday loans in Ohio to a car or similar vehicle. The key is often the purchased goods, making the terms of the loan better. Also, loan conditions are improved: car insurance, life and health insurance of the borrower, and receiving a salary to the account of the creditor bank.
    Land loan. To purchase a plot for construction or agricultural activities.
    Consumer. For purchases in modern supermarkets, equipment stores, you can take a personal loan right at the point of sale. Often, specialists located there can contact the bank and get a regular or fast payday loans. Borrowed funds automatically pay for the goods, and the consultant explains when and how to re-pay the debt.
    Educational loan. It is issued to students, as well as to applicants who have passed the competition, to pay for tuition at universities, colleges, etc.
    Broker loan. For the circulation of securities, payday loans in Ohio are issued to an exchange broker, se-curities are purchased securities.
    Others. Objectives not related to those listed, but agreed and approved by the creditor.

  2. hello my lovely stopforumspam member

    Welcome to Grosvenor Casinos, where you can play a wide range of casino games, from slots to poker, blackjack, and roulette! There’s something for everyone here – become a member of the casino to have the best of online casino gaming. Our Sportbook offers a range of sports betting odds and is available for pre event or in play bets 24/7 and 365 days of the year. Whether you’re here for football tournaments or the latest betting odds for horse racing, Tennis, Golf, Cricket and even Rugby Union, you are covered.

  3. Normally I do not read post on blogs, but I wish to say that this write-up very pressured me to check out and do so!
    Your writing taste has been surprised me. Thank you, quite nice post.

  4. Howdy! Do you use Twitter? I’d like to follow you if that would be okay.
    I’m undoubtedly enjoying your blog and look forward to new
    posts.

  5. Good day! This is kind of off topic but I need some advice from an established
    blog. Is it hard to set up your own blog? I’m not very
    techincal but I can figure things out pretty fast.
    I’m thinking about making my own but I’m not sure where to begin. Do you have any
    tips or suggestions? Thanks

  6. I’ve read a few good stuff here. Definitely worth bookmarking for revisiting.
    I wonder how a lot effort you set to create this type of excellent informative website.

  7. Hey would you mind sharing which blog platform you’re using?
    I’m looking to start my own blog soon but I’m having a tough time making a decision between BlogEngine/Wordpress/B2evolution and Drupal.
    The reason I ask is because your design seems different then most blogs and I’m looking for
    something unique. P.S Apologies for being off-topic but I had to ask!

  8. I think this is among the most significant info for me. And i am
    glad reading your article. But want to remark on few general things, The web site style is great, the articles is really excellent : D.
    Good job, cheers

  9. Wow, amazing blog layout! How lengthy have you ever been blogging for?
    you made blogging glance easy. The overall glance
    of your site is fantastic, let alone the
    content material!

  10. I think this is among the most important information for me.
    And i am glad reading your article. But wanna remark on some general things, The web site style is ideal, the articles is
    really nice : D. Good job, cheers

  11. Hey There. I found your blog using msn. This is a very well written article.
    I’ll make sure to bookmark it and return to read more of
    your useful information. Thanks for the post. I’ll certainly
    comeback.

  12. Woah! I’m really digging the template/theme of this blog.

    It’s simple, yet effective. A lot of times it’s
    very hard to get that “perfect balance” between user friendliness and appearance.

    I must say that you’ve done a very good job with this. Additionally, the blog loads very fast for me on Firefox.
    Excellent Blog!

  13. This is a very good tips especially to those new to blogosphere, brief and accurate information… Thanks for sharing this one. A must read article.

  14. Hello, you used to write fantastic, but the last several posts have been kinda boring?K I miss your tremendous writings. Past few posts are just a bit out of track! come on!

  15. What’s up i am kavin, its my first occasion to
    commenting anyplace, when i read this post i thought i could also make comment due to this good
    article.

  16. Every weekend i used to go to see this site, for the reason that i wish for enjoyment, as this
    this site conations truly nice funny material too.

  17. Excellent site you have here.. It’s hard to find good quality
    writing like yours nowadays. I truly appreciate individuals like you!
    Take care!!

  18. It’s actually a nice and helpful piece of information. I’m happy that you shared this useful information with us. Please stay us informed like this. Thanks for sharing.

  19. I was wondering if you ever considered changing the structure of your website? Its very well written; I love what youve got to say. But maybe you could a little more in the way of content so people could connect with it better. Youve got an awful lot of text for only having one or two images. Maybe you could space it out better?

  20. I and also my buddies came reviewing the best advice located on your site and then developed a horrible suspicion I had not expressed respect to you for those secrets. All of the people are actually for that reason warmed to study them and have clearly been making the most of these things. Many thanks for simply being so thoughtful and also for choosing this kind of incredible useful guides millions of individuals are really desirous to understand about. Our own honest regret for not expressing gratitude to earlier.