সাম্যব্রত জোয়ারদার

6586
20802


সাম্যব্রত জোয়ারদার

পেশায় সাংবাদিক। লেখালিখি শুরু নয়ের দশকে। বিজল্প পত্রিকার সম্পাদনা করেছেন। প্রথম বই ‘পাখিদ্বীপ জাদুওলা বন্ধুপদাবলী’। তিন বন্ধু একসঙ্গে। ছবি আঁকতে, ছবি তুলতে ভালোবসেন। প্রিয় বই: গীতবিতান।

নির্বাচিত অংশের প্রতি

ধর্ষণ ও খুনের লেখা, মুখিয়ার পরগনা শালগাছ পাতা কুড়ানিরা, চুপচাপ চান্দ্রমাসে ঝরে গেছে। ক্যালেন্ডারে গোল চিহ্ন ঋতুস্রাব এলোমেলো শহরের পথ, খাদি ও গ্রামোদ্যোগ লেদ মেশিনের কারখানা, তারও পরে মে-দিবসে হাড়ভাঙা শ্রমের নিশীথে, তিয়াসায় চাঁদ পায় হাসনুহানা ছাতিমের ঘ্রাণে।

নতুন বলার কিছু নেই প্রফেসর, অধুরি কহানি সব বিচ্ছিন্ন প্রহর। মধ্যরাত বনফায়ারের শিসপাখি আগুন স্তিমিত আঁচ, পোড়ারুটি শুকানো মরিচ, কোথায় লবণ আর কতদূর হ্রদের নিকটে— পাতাপোড়া গন্ধ ওঠে ধোঁয়ার উত্তাপ, আমাদের তাঁবু নেই নিশাচর শিশির ও শবনম পাশাপাশি লিখে রাখি।

হরতাল ছড়িয়ে পড়েছে বিক্ষোভ ও সমাবেশে ঢুলি বাহকেরা আজ সেজেছে নতুন গোধূলির মেঘস্তম্ভ ধীরে উড়ে যায় চিমনি ও চুল্লিছাই বার্নিংঘাটের ক্ষৌরকাজে টাকা গোনে ব্রাহ্মণ ও ডোম পরিবার হরিবাসরের সভা দরদিয়া জিন্দাবাদ করে।

তাহলে শেখান বুজরুকি জুতোসেলাইশিক্ষা কসাইয়ের ভাষাব্যবহার, ছালচামড়ার মতো রোদ্দুরে ঝুলে উপহাসের গন্দিনালা শ্রেণির তলায় যাঁরা খুদকুঁড়ো— গ্রামদেশ দিয়েছে বিধান ম্লেচ্ছ কাঠামোর দেবী স্নান নেই জটপড়া অশ্বত্থের থান রেশনকার্ডের কাছে তাঁর কোনও আজ আর কৈফিয়ত নেই।

এলিট ক্লাসের বিভূতির ম্যানুফ্যাকচারিং বোধ পুরোভাগে জমি দখলের পূর্ণ স্বরাজ ক্ষয় নেই হে রাজন ভয় নাই জনসংখ্যায় অন্ধজন চালাও কামান জয় করো পুনঃপুনঃ বর্ডারের দিক।

শুধু তোমাকেই বলতে পারি এ’সমস্ত মাত্রাছাড়া যদিও এখন নিরক্ষর জৈষ্ঠ্যে এমনকি শ্রাবনেও শরীরে লবণ জমে ওঠে একা ঘর বাঁশের বেড়ায় ওই পতঙ্গেরা শব্দ করে মাটির উপরে ছায়া বড় হয় উড়োজাহাজের।

জাতীয় আয়ের পাতকুয়া সিঁড়ি গুনে গুনে নামে। জনসংখ্যা ভাবে মিলিটারি যুদ্ধ যাবে। স্বামী-স্ত্রীর বনিবনা অগ্নিদগ্ধ হবে না কক্ষণও। কপিকল নেই, খালি বালতির দড়ি নাগরদোলায় ওঠে প্রমোশন হাতছানি দেয়, জাতীয় ব্যয়ের মূর্তি দেশনায়কেরা হেঁইয়া হো হেঁইয়া হো ম্যারাপে টাঙায়।

এ লেখার প্ররোচনা নেই, ব্যক্তিগত কেউ কেউ বলবেন সম্পদের অর্ধেকের বেশি বাংলা কবিতার… তবু বলি— বিমারি ভুখমারি অওর মওত, হমরী হাত নহী হ্যায় ম্যানেজারসাব। হুগলি নদীর তীরে পতাকা ছোপান হয় সারারাত, শিফটের বারনার জ্বলে…

মূলধন আমার খনি প্রতিষ্ঠার বহু আকরিক। তবু ফলিডল খায় নিমাই সরকার। ভরদুপুরে ক্যারম খেলে কর্মহীন মজদুর। দেশ আরও ততোধিক দেশে হাটে ও বাজারে পোকামারা বিষ বিক্রয়কেন্দ্রগুলি— কৃষকের ঘুম চুরি করে, এ’বছর বিক্রি নেই হিমঘর থেকে আলু ছড়িয়েছে পথে।

দৈনিক পত্রিকা বিক্রি কমে যাচ্ছে কমরেড শোনো লক্ষমাত্রা ঠিক রাখো ছাড়ো অহেতুক ঝোঁক জেলা তহবিল থেকে লোন ব্যবস্থাও হয়ে যাবে ঠিকা শ্রমিকের দলে সংগঠন কেন নয় মজবুত না কমরেড এখনই আপনাদের হাতে পিস্তল তুলে দিতে পারছি না দৈনিক কর্মকাণ্ডে মিটিং মিছিল জমায়েত নির্বাচন নির্বাচন আরও কিছু নির্বাচন পরে হে মার্কেটের শ্রমের আগুন প্রকৃত কমিউনিস্টের কাছে হতাশার কোনও স্থান নেই তাই চিঠি লিখে যেতে হবে দূর কোলিয়ারি চাবাগান থেকে ভাল আছি শ্রদ্ধাস্পদেষু ও মাননীয়।

প্রদীপের তলপেট চিরে ভুঁইফোঁড় কোনওরকম খবরাখবর ছাড়া এসেছি দুর্যোগে রাতে পথচলতি সরাইখানায় বাইরে যা ঝড়জল তদুপরি সিগারেট ভিজে দেশলাইও হাতের আঙুল আর নখগুলো নীল করোগেট ঢেউখেলা পকেটের অবস্থাও ভাল নয় তবু এসেছি যখন টেবিল সাফের পর ডিশ ধুয়ে গরিবির গন্ধের ভিতর মনে হয় কিছুদিন টিকে থেকে যাব ঘিনঘিনে নালি নর্দমার তেলাপোকা।

এইবার নাচ শুরু মাথা খাড়াইয়া হাঁটবার জানি পানিট্যাঙ্কি বহুদূর আত্মজীবনীর অংশে এইবার পার হতে হবে সাঁকো বর্ষাডুবি ওই বুঝি বরানগরের গলি কিশোর অষ্টার লাশ আঁচলে জড়িয়ে ঢিমনি ও বেবুশ্যেরা নাচ শুরু করে দেবে কিন্তু ঢিমনি বনাইল কেডা বচ্ছরভর বানভাসি বন্যায় কারা শালা ব্যারাজের গেট খুলে দেয়।

এসেছি হরতাল দিনে গণভোট পার করে বিড়ির দোকানে মার খাওয়া সরকারি বাসের ড্রাইভার জীবনবিমার রক্ত জামার হাতায় মুছে অস্ত্রবিরতির পর ডিপোর স্টার্টারে প্রফেসর এই দেখুন কুড়িয়ে এনেছি প্রস্তরযুগের অস্ত্র থানইট

হরিজন চায়ের দোকান ভোর নাম গোত্রহীন। পিচরাস্তা তৈয়ারির তাঁবুগুলি কাসির দমকে ধোঁয়া ওঠে। ইটের উনুনে আঁচ তখনও জ্বলেছে ধিকিধকি। ফিরে গেছে ট্রামশ্রমিকেরা মুসাফির চাবুকের দাগটানা ভোর বরাবর।

এই হল আমার দেশ কবিতা প্রলাপ, ঘুমন্ত অবস্থায় পুলিশের লাথি। নাপিত ধোপাদের পরছা ওয়ারেন্ট লাগে না। সালিশি সভার টিকিধারী পঞ্চায়েত, হলুদ দাঁতের মোড়লেরা, বলেছে প্যারেড কর, নাঙ্গা কর, গ্রামে গ্রামে ঘোর শালা পিছনে পিছনে ঘেয়ো কুকুরেরা— এই তোরা ভিডিও কর-ফটো কর-ল্যাংটা ছবি তোল: এই হল আমার লেখা কবিতা প্রলাপ কবিযশোপ্রার্থনাও এই।

অথবা চেরেনোবিল রিঅ্যাক্টার ফোর চুলমাংসগলাজ্বালাপোড়া রেডিও অ্যাক্টিভ নেড়াগাছ ওহ্ মাই গড হোলিফাক বিকলাঙ্গ ফসলের বীজ স্কিন গ্রাফটিংয়ের পর স্কিন গ্রাফটিং কুড়ানকুলামে সরকার মাইবাপ মাইকিংয়ে বলে গেছে কুলিংমেশিন রক্ষাকবচ সব মৎস্যজীবীদের ভুল পথে নিয়ে যাচ্ছে পশ্চিমের এনজিও মিথাইল আইসোসায়ানেট পোকা মারার ওষুধ একরাতেই তিন হাজার পোকা সাফ।

পয়সা বোলতা হ্যায় মাইবাপ পতাকার কতই বা মূল্য ভাড়া করা শ্রমিকের সূর্যাস্ত সফর শেষে কতই বা রোজগার সাইকেলে খোঁপায় যারা সান্ধকালে নাকছাবি মালা ফুলহার গ্র্যাচুইটি পেনশন বৃদ্ধ ঢোঁড়া সাপ খোলস ছেড়েছে মাঠে এ’বছর ভাই লোগ বাজাও হাততালি কিষাণ ক্রেডিট কার্ড এসেছে বাজারে।

৪৮ গড়িয়াহাট রোডে যারা গিয়েছিল শ্রাবণের মাসে, যারা দেখেছিল অজস্র ফড়িং। বিপন্ন মানুষ যারা বরিষণ পার করে উড়ে যাওয়া ভোর, হাসপাতাল বারান্দা এনআরএস ৭ নম্বর ঘরের সামনে বসে একা… যে গল্পে বাসখারাপ হয়ে যায় মনও মেলানকলিক, তুই আর রাজীব— যে গল্পে ডাক্তার প্রশ্ন করে মাস্টারবেটিং। শহিদ বেদির পাশে পিছনে দু’হাতমোড়া এক কিশোর, মাথার ভিতরে যার অকারণ নুড়ি পাথরেরা ব্যাঙবাজি করে। অসুখের সরু নদী বাড়ি পৌঁছতে পৌঁছতে বড় দেরি হয়ে যায়।

6586 COMMENTS

  1. Attractive section of content. I just stumbled upon your website and in accession capital to assert that I acquire in fact enjoyed account your blog posts. Anyway I will be subscribing to your feeds and even I achievement you access consistently fast.|

  2. Thanks a bunch for sharing this with all of us you actually know what you are speaking approximately! Bookmarked. Please additionally talk over with my web site =). We could have a hyperlink exchange agreement between us|

  3. Hi, I think your site could possibly be having web browser compatibility issues. Whenever I take a look at your website in Safari, it looks fine however, if opening in Internet Explorer, it has some overlapping issues. I simply wanted to provide you with a quick heads up! Aside from that, great blog!|

  4. Hey! I know this is kinda off topic but I was wondering which blog platform are you using for this site? I’m getting sick and tired of WordPress because I’ve had issues with hackers and I’m looking at alternatives for another platform. I would be awesome if you could point me in the direction of a good platform.|