যথা-রীতি
তোমাকে সোহাগ করব, সাবধানে, কবিতা যেমন
গোড়ায় কোমল ছন্দ, উদ্দাম মাত্রার ধাক্কা শেষে—
শব্দেরও শিরদাঁড়া-ভাঙা,বাঁকা-লিঙ্গ,ছিঁড়ে-নেওয়া-স্তন...
চুমু-শেষে ধাপে-ধাপে অর্গ্যাজমও,আবেশে আশ্লেষে—
ভালোবাসতে এসে দেখি চতুর্দিকে সংবাদমাধ্যম:
হেডলাইনস্ মুহূর্তে সরে ক্রাইমের বৈচিত্র্য শানিয়ে...
কোথাও পূর্বরাগ নেই,কবি সেজে ডেস্কে ব’সে যম...
আদর করছি পরস্পরকে, মুখে মুখে, বানিয়ে বানিয়ে
লাভ-লাইন
দরজা-কপাট ঝপাট খোলা, ঢুকলাম এই—
শরীরভাঙা পাল্লা-গরাদ; আয়, চলে আয়
বাতাস-বাধাও হাপিশ হল হর্ষ পেয়েই—
ঘি...
১
যা হচ্ছে তা হোক
যা হচ্ছে না তা হওয়ার বৃত্ত থেকে
খুলে খুলে পড়ছে শব্দ
মিথ্যের সত্যিরা লুকিয়ে থাকে ডানায়
সত্যির মিথ্যের জেগে থাকে বুকে....
কিছু জটিল শিরশিরানি
মানুষকে বাঁচতে দিচ্ছে গুটিপোকার মতো...
একটা দুটো সত্যি
আকস্মিক ভাগ্যের মুখে থুবড়ে পড়ে হাসে...
কান্নার এক আলোকিত জোর আছে বুকে
এখানে লুডোতে সাপ আর সাপ
সাপের শরীর ধরে মন্ত্র শিখেছি বলে
এখন আমাকে...
ঝড়ের পূর্বাভাস পেলে
শুরু হয়
তার গতিপথ নিয়ে চর্চা
গভীর সমুদ্রে মৎস্যজীবীরা
ডিঙি-নৌকার অভিমুখ
ঘুরিয়ে নেয় উপকূলের দিকে
অন্ধকারে ফুঁসে ওঠা সমুদ্রের দিকে চেয়ে
রাত জেগে বসে থাকে
তাদের গৃহিণীরা
আর বিড়বিড় করে জপতে থাকে দুর্গা নাম
ঝড়ের পূর্বাভাস পেলে
দায়িত্বশীল প্রশাসন
মাইকে নির্দেশ দেন
উপকূল খালি করার
ঝড়ের পূর্বাভাসে
নিরীহ পাখিরা
অসহায় নাগরিকের মতো
পালকের নীচে ঠোঁট গুঁজে দিয়ে
অপেক্ষা করে সর্বনাশের
তারপর ঝড় থামে যখন
সকলে মাথা...
ভালোবাসা যায় কিনা, ভালোবাসা থাকে কি, জানি না
স্মৃতির পুরোনো খামে গ্রহণের রেণু লেগে আছে
জুড়িয়েছে চোখ আর মাটি পুড়ে গেছে খোলা পায়ে
কীভাবে কাউকে, বলো, এতখানি ভালোবাসা যায়?
চোখের সামনে থেকে না-দেখার ভান করে দেখি
চোখের আড়াল হলে সে দৃশ্য সহ্য হয় না
বলি তো অনেক কথা, না-বলাটুকুই বেশি বলি
চলি ভাঙা-ভাঙা পথে, পথে পথে...
পোড়া রুটি ও কয়েকটি কবিতা
দ্বিতীয় ঢেউ
ভালো লাগছে না বলতে নেই
বলো লড়াই-ই জীবন
মৃত্যুর মুখে দাঁড়িয়ে মৃত্যুকে অস্বীকার করার
শক্তিকে বাঁচিয়ে রাখাটাই চিয়ার্স
বাকি সবকিছু আবর্জনা
টান মেরে ছুঁড়ে ফেলো
হাসো,লুটোপুটি খাও
কোনো নিউজ চ্যানেলের দিকে তাকিও না
বরং নিজেই একটা নিউজ হয়ে যাও
অদৃশ্য বিভীষিকাকে ছেয়ে ফেলুক আমাদের
অট্টহাসি...
এই প্রথম গোটা একখানা মহামারির
ময়না তদন্তের রিপোর্ট ঘুরে বেড়াচ্ছে
মানুষের হাতে...
জীবনের গান
প্রত্যাখ্যানের মধ্যে সমস্ত আশ্চর্য রাস্তাগুলো লুকিয়ে আছে
পৃথিবীর বুকে জর্জ বিশ্বাসের গানকে জড়িয়ে ধরে দীর্ঘ করছে আয়ু রেখা
ছেঁড়াতার বেঁধে ফেলতেও চান কেউ কেউ
কিন্তু,
ওই যে মন আর মস্তিষ্কের 'ম' আলাদা
তাই, যাকে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসো
তাকে বলো না কখনও, 'ভালোবাসি!'
অভিসম্পাত
শব্দের সঙ্গে বহুকাল সম্পর্ক না থাকলে দূরত্ব বাড়ে
ভেতর ভেতর ভয় তাড়া করে
যদি কোনও...
রাশিয়া আমার স্বপ্নের দেশ
ছোটোবেলা থেকে ওর সঙ্গে আমার পরিচয়।
সোভিয়েত দেশ চিনিয়েছিল নিজেকে
চিনিয়েছিল আরও অনেককে।
বিস্ফারিত চোখে ম্যাপে দেখতাম ওর বেড়ে ওঠা শরীর
উজবেকিস্তান, কাজিকিস্তান, লাতভিয়া,
এস্তোনিয়া, বেলারুশ, ইউক্রেন আরও আরও.....
গান্ধারীর সন্তান ছিল রাশিয়া।
বড় হয়ে দেখলাম--
বড় বিষণ্ণ আর ক্ষণস্থায়ী এই দুনিয়া।
যা চোখে দেখা যায় না, যা কানে শোনা যায়
তা শুধু কান্না ও হাহাকার।
এ...
ভষ্মমাখা আমাদের আশ্রয়
১
ঘর বলতে সামান্য এই সন্তানহীন বৃক্ষের মতো পায়ের পাতার কাছে জমে থাকা শূন্যতাটুকু। শেষ রাত্রির গূঢ় অনুশোচনার মতো আজ স্তবকের পর স্তবক ভেঙে রক্ত গড়িয়ে গেল। বিষও উঠে এল কিছু। সান্ধ্য ভ্রমণের বোধহীন চিহ্নগুলি খুলে রেখেছে এক একটি স্পর্শের মতো অজানা সংলাপ। আমার জামা ছিঁড়ে গিয়ে বুকের...
জাংশানে খুঁজি রোজ গজমতি মালা
প্রেমের ঘোড়ার সাজ চেতকের মতো
ছাই মেখে বসে আছে সাগর মেলায়
ভগীরথ এনে দেবে পয়োমন্ত জল
অপেক্ষা ফিরে যায় মুখ ভার করে
টেবিলে ডুকরে কাঁদে বেলিফুল সুগন্ধি রুমাল
মাছের পেটের খাঁজে রাজার আংটি খুঁজি আমি
বিদূষক কৌতুকে হিসেবের বিল দিয়ে যায়
গজমতি মালা হায় কখন পরাবে প্রিয়তমা
জরুরি বিভাগ বলে হাতে বড় অল্প...
এখানে অন্যমনস্কতা নিয়ে কথা বলা হচ্ছে
আমার ভিতর
এক ছোপ অন্ধকার এসে পড়েছে মেঝেতে। আরও অন্য ঋতু অন্যতর বেলা অব্দি বিছিয়ে আছে অবসান। অবসানের মধ্যে দানীভর্তি ফুল। পাতাগুলি আমায় বললো, যে কাতরতা সাদার ভিতর থেকে সুগন্ধ তুলে আনে – তা তোমার গো সবটাই তোমার
আমার বুকের মধ্যে ঢুলে আসে প্রকাণ্ড এক চোখ,...
বৃষ্টি ও চাঁদের মাঝে
মোমবাতি জ্বেলে
মধ্য জুলাই আমার বুকে
শস্যবীজ রেখে গেছে কবে!
এমনই অন্ধকারে জলের রং
চিনিয়েছিল অস্ফুট ভ্রূণাধার।
সোঁদা মাটিতে স্নেহের গন্ধ শুঁকে
পৌঁছে গেছি কত অচিন পুকুর—
সেখানে সেই হাতের চপলতা নেই,
নেই কোনও শ্বাসের প্রলেপ
হে জুলাইয়ের জন্মবার
আমাকে নিয়ে চলো রোমকূপের বনে!
আদিম ঘাস যেখানে
লোকাতীত আলোর অপেক্ষায়
গর্ভের কলুষহীন মাঠও
আরেকবার নিশ্চুপ হতে চায়,
হাত ধরে বলে—
‘তৃষ্ণার্ত পারাপার...
তোমাকে লিখিনি আমি প্রেমের কবিতা একদিনও
ওয়েব সিরিজের মতো ভেসে আসে ছবিময় শুধু
সে ছবির ক্যানভাসে ভেসে আসে মুখ মণ্ডলী
অর্ধেক কালো তার,অর্ধেক মুখোশেই ঢাকা।
প্রেমের কবিতা কেন লিখিনা প্রশ্ন করেছিলে
লিখেছি অনেক উড়ো চিঠি রোজ যাতায়াতপথে
সে সব চিঠিতে নেই স্বাক্ষর মুঠোছাপ কারও
যে হাত ধরতে গেছি সেই হাত ছেড়ে চলে গেছে ।
মাটি ভেদ করে...
সূর্য, ঘোড়া
বরং এবার আলাদা রাখি সূর্য, ঘোড়ার কথা।
মাটির যে ঢাল তেষ্টা চেনে, আইঢাই খুব–
মরতে গেল জলের কাছে। সূর্য তখন
তেষ্টা দ্যাখে, আচমনে সাজিয়ে রাখে খুরের দায়ভার।
ছুটছে আড়াল, ভাসান প্রখর, ডুবছে কাঁপন,
মন্থনবোধ উঠছে অধীর– দরদাম তার খোলস শুধুই
আনকোরা দাগ রেসের আওয়াজ– সাতটা শরীর স্রোতের
ফাঁকে রশ্মি চাটে, হিসেব রাখে, কখন অনুশাসন ভুলে...
खून की निशानी
मल्लिका सेनगुप्ता
अनुवाद: रेशमी सेन शर्मा
मैंने तो कभी तुमपर हाथ नहीं उठाया,
पहली बार,
जिसदिन तुमने मेरे सीने को चीरकर
खून की निशानियाँ भेंट की थी मुझे,
उसदिन दर्द तो हुआ था ,पर तुमसे कुछ नहीं कहा
शुष्क जमीन पर
न गुलाब खिलता है और न नाचता है मोर l
फिर भी हमेशा से ही...
সেতু
নদীটার নাম টুংটুং
এ নাম তুমি দিয়েছিলে।
লোকাল কোন নামতো নিশ্চিত আছে
অথবা ভৌগোলিক
যা ইচ্ছে হোক এ নদীর নাম টুংটুং।
সালটা মনে নেই। পুজোর একটু আগে
পরিকল্পনাহীন পৌঁছে গেছিলাম পাহাড় দেখব বলে।
নদীতীর ছুঁয়ে আছি চার হাত দিয়ে নদীজল
আমাদের উত্তরমাঠের বিপিনকাকা,পেশায় বাউল,
বলেছিল, নদীজলে পা দিও না
মেয়েমানুষের হৃদয়ের মতো নদী ব্যাথা পায়
তাই দুজনে ছুঁয়ে আছি জল...
সন্দ্বীপের চর
বাবা নেই। মা নেই। শ্মশানের রাত। হেঁটমুণ্ড ছায়াবাহকেরা হরিধ্বনি তুলে মিশে গেল চুল্লির দ্বারে। একটা রাক্ষসী আগুন দুহাত বাড়িয়ে গিলে নিতে চায় চরাচর। কাকজ্যোৎস্নায় শিস দিতে দিতে পিশাচিনী তার পুঁজ-রক্ত-কফ রেখে গেল মাটির মালসায়। আশ্চর্য এ জীবনের কাঁথা-কানি কড়ি ও কোমল। নরম তালুতে রাখা বেলকাঁটার ভাব-ভালোবাসা। পুনর্জন্মের আশা...
বইঘরের উদ্বোধনে, ভোরে
ঠান্ডায় হাড়হিম, সকলের নিঃশ্বাসে কুয়াশা বাড়ছে,
রাস্তায় বইঘরের উদ্বোধনে স্বরচিত জার্মান কবিতা পড়ছেন গিসেলা উইন্টারলিং।
এ হেন হিমাঙ্কের মাঝেও ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে ভিড়, সাংবাদিকরা সুদৃশ্য খাতায় তুলে রাখছেন দৃঢ় পঙক্তিগুলি।
রাউএনতালার স্ট্রিট বেয়ে বয়ে যাওয়া গাড়িগুলি থামিয়ে নেমে আসছেন,
ছুটির সকালে, কিছু লোকজন। প্রতিস্পর্ধী ভিড়টা ক্রমেই বেড়ে উঠছে।
কবিতা মধ্যেই করিম ধরলেন...
বাস্তুতন্ত্র
একটা নেড়ি কুত্তা সারাক্ষণ কুঁই কুঁই করছে বুকের ভিতরে
এই বুঝি বেরিয়ে এল প্রকাশ্যে
ভয় পেতে পেতে প্রতিদিন বুকের রক্ত হিম হয়ে আসে
চতুর্দিকে ঘোরা বিড়ালগুলো ল্যাজ ফোলায়,ঘাড় মোটা করে ঘোরে...
একটা বাস্তু দাঁড়াশ ঢুকে আসে ঘরে
দূরে লাফিয়ে পড়ে ব্যাঙ
আর এভাবেই ব্রম্ভময় হয়ে ওঠে জগত..
তোমার ভিতরে পোষা অ্যালসিসিয়ানের ছায়া চমকে দেয় আমাকে!
বিষ
ছোট হতে...
আপোষ
তোমার মুখে মুখোশ পরা— আমার মুখে মুখোশ
একটি চুমুর জন্য না হয় একটু করি আপোষ
একটু ছুঁয়ে তোমার হাত– সাবান জলে ধুই
ভ্যাক্সিন নেয়া প্রেমিক আমি; মন সেলাইয়ের সুঁই
প্রণয়ঘরে
আমি কেবল কান্না করি– যেদিন থেকে তুলো হলে! উড়ছো কেবল, ঘুরছো কেবল হাওয়ায়–হাওয়ায়— তেপান্তরে। বৃষ্টি রাতে পাই না কাছে, কুসুম কলির ঘ্রাণ উবে যায়!...
এভাবেও চলে যাওয়া যায়!
যেভাবে মেলার ভিড়ে পাঁচ বছরের ছেলেকে
কোনও দোকানের সামনে দাঁড় করিয়ে রেখে
বাবা দু'মিনিট আসছি বলে নিরুদ্দেশ,
যেভাবে বৌয়ের হাতে সকালের চা খেয়ে
ঘুমন্ত ছেলেমেয়েকে রেখে মর্নিং ওয়াকে গিয়ে
মানুষটা ফেরে না আর,
সেভাবেই আমাদের ফেলে চলে গেলে।
রোদ্দুরে আর অঝোর বৃষ্টিতে
আশ্রয়হীন পথ চলার
প্রস্তুতি নেওয়ার সময়ও দিলে না।
এখন এত রক্তক্ষরণ,এত নিঃশব্দ শ্রাবণ নিয়ে
কী...