আমেরিকা সাত, ইউরোপ পাঁচ, রাশিয়া সাকুল্যে চার দিন
জীবনের বাকি দিনগুলো আমি চেয়েছিলাম তোমাকে দিতে
ফোড়নের মতো দপ করে জ্বলে উঠে
তুমি, কয় মন অসন্তোষ ঢেলে দিলে...
অথচ আমাকে ধরে রাখতে চেয়েছে, সমুদ্দুর
সামুদ্রিক ফ্যানা, সে-ই আরব্যরজনী, এক একলা আকাশ
চীনের প্রাচীর
আজও দেখো রয়েছে একই
কত পর্যটক প্রতিদিন আসে যায়!
ব্যবধান গড়েছে সময়
শীতের শহরে, বস্তা, আরাম যখন
রূপকথা...
মণিদীপা বিশ্বাস কীর্তনিয়া (Manidipa Biswas Kirtaniya)
স্পর্শ স্বর
সা লাগাও ফিরসে
মাথার ভেতর ফিসফিস করে কে
গাছের অন্ধকারে জমে থাকে লয়
ক্ষত থেকে শাদারঙ আখর গড়ায়
সুরের ভঙ্গি.. তবে সুর ঠিক নয়
চাকলা ওঠা কাটা দাগ যতটা গভীর
জমাট আঠায় কোঁকড়ানো আর্তনাদ
যতদূর বয়ে নিতে পারো খালি পায়
মরা গান কাঁধে অন্ধ বেহালা ততদূর সুর নিয়ে যায়
ঘোলা লাগে জোছনা...
ঝড়ের পূর্বাভাস পেলে
শুরু হয়
তার গতিপথ নিয়ে চর্চা
গভীর সমুদ্রে মৎস্যজীবীরা
ডিঙি-নৌকার অভিমুখ
ঘুরিয়ে নেয় উপকূলের দিকে
অন্ধকারে ফুঁসে ওঠা সমুদ্রের দিকে চেয়ে
রাত জেগে বসে থাকে
তাদের গৃহিণীরা
আর বিড়বিড় করে জপতে থাকে দুর্গা নাম
ঝড়ের পূর্বাভাস পেলে
দায়িত্বশীল প্রশাসন
মাইকে নির্দেশ দেন
উপকূল খালি করার
ঝড়ের পূর্বাভাসে
নিরীহ পাখিরা
অসহায় নাগরিকের মতো
পালকের নীচে ঠোঁট গুঁজে দিয়ে
অপেক্ষা করে সর্বনাশের
তারপর ঝড় থামে যখন
সকলে মাথা...
একদিন সমস্ত সহজ হবে , জানি।
লিখতে লিখতে হবে, সে তো।
লেখা এক স্বরাজ রাজধানী।
লেখা এক মস্ত বড় সেতু।
সেতুবন্ধ করেছি শরীরে।
হাত আর পায়ের ভিতরে
কাজ আর বিশ্রাম পুরেছি।
শিশু হয়ে মাঠে নেমে গেছি।
এই ত সফল বিদ্যালাভ।
এই ত সজীব প্রতি কোষ।
হাত আর পায়ের মিলনে
এই ত ভুলেছি আক্রোশ।
শরীরকে করেছি মন্দির
হাত জুড়ে হয়ে আছি স্থির
সমস্ত সহজ...
“in the silence behind what can be heard lies the answers we have been saerching for so long’’
Andreas fransson
একটা পোকার ভোঁ ভোঁ আওয়াজ অনেকক্ষণ মাথার মধ্যে বাজছিল।
খুব সহজেই ওকে দেখেও না দেখার ভান করে চলে যেতে পারতাম আমি।হয়ত,সেটাই ও চেয়েছিল।
গরমের দিন সন্ধেবেলায় আশ্চর্য হাওয়াটার জন্য অথবা অন্য কোনও কারণে,জানি...
লহর
কীভাবে লহর চলে মেঘশঙ্খরোদে!
কীভাবে লহর চলে সম্ভাবনা ছাড়া!
ক্রমশঃ পলির দিকে ম্যাজিক সমূহ...পাখি...
পাখি...
সীমান্ত হাত পেরিয়ে যায়...ঐ যায় হুলুস্বর
হংসধ্বনি গোক্ষুরজল
যায় বেজুবান ও নৃশংস ছুরিকা
তবে এসো,কথা হোক মদিরা-শ্রমণ,
রণকৌশলের ব্যপারে তুমি কী ভেবেছিলে,
কোথায় কোথায় ঘটবে ঘনবসতি বিভ্রম?
করোজ্জ্বল
করোজ্জ্বল ভবচরাচরে তুমি হে কৃপাময় একমাত্র লিবিডো,ভর করেছো সমগ্র গগনমণ্ডলে।
ভূধরে শ্যামা ঘাস তার ফসিল হারালো, বীর্য হারালো...
কিছুই চাই না আমি
শুধু একটা গাঢ় নীল পর্দা টানা ঘর
লাল রঙের একটি টেপ রেকর্ডার
যেখানে একসঙ্গে সবুজ হলুদ
আর নীলাভ সংগীত বেজে উঠবে।
মধ্যাহ্নে গুঞ্জরনময় বৈদ্যুতিক পাখা থেকে
ঝড়ে পড়বে সোনালি বৃষ্টি
শিরায় বইতে থাকবে তীব্র স্রোত
রক্তগোলাপের
সমস্ত দরজা অপরূপ রহস্য নিয়ে
বন্ধ হয়ে যাবে।
আমার ভেতরে বেড়ে ওঠা
নিবিড় সুগন্ধগুলো
কোথাও পৌঁছবে না কোনোদিন।
কোমল বেগুনি রঙের বিছানায় লীন...
রাজু আলাউদ্দিনন্যানো কাব্যতত্ত্বের জনক কবি, প্রাবন্ধিক ও অনুবাদক। জন্ম ৬ মে ১৯৬৫ সালে শরিয়তপুরে। লেখাপড়া এবং বেড়ে ওঠা ঢাকা শহরেই। কর্মজীবনের শুরু থেকেই সাংবাদিকতা পেশার সঙ্গে জড়িত। মাঝখানে বছর দশেকের জন্যে প্রবাসী হয়েছিলেন ভিন্ন পেশার সূত্রে। এখন আবার ঢাকায়। ইংরেজি এবং স্পানঞল ভাষা থেকে বিস্তর অনুবাদের পাশাপাশি দেশি ও...
মানিক সাহাজ্বরগালে স্পর্শ পাই। ডুবে যেতে থাকি জ্বরে। আমার কিশোর বয়স। পুটিদি ভরা নদী হয়ে পাশে বসে থাকে। ওর বাঁকগুলি দেখে মনে হয় বাঁশঝাড়ের আড়াল। মনে হয় নির্জন এক কোনে লুকিয়ে রাখা নৌকা। তোমার ঐ নৌকায় আমাকে চড়তে দেবে, কোনদিন বলতে পারিনি। অথচ আমার মাঝি হওয়ার ইচ্ছে ছিল ষোলোআনা।একদিন...
আকাশ সংযত হয়ে নেমে এলো ছাদে
অপার মহিমা দেখি ছড়িয়ে রয়েছে
মহিমা শব্দের যত আলো
তাও এসে এখানে ছড়ালো...
শুধু ভাবি— জীবন কি ভরা শুধু বিষে
সামনের ভেজা কার্নিশে কনুই নামিয়ে রেখে
দূরান্তরে তাকিয়ে থাকার পর ভাবি
এখানে বাবার পাশে মা-ও যেন আছে
আকাশ রয়েছে তার কাছে৷
কুমারেশ তেওয়ারী জন্ম আসানসোলের কন্যাপুরে। পড়াশোনা বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে। বিভিন্ন পত্রিকায় লেখালিখি করেন। প্রকাশিত কবিতার বই: ‘জুড়ন পুকুর’, ‘ব্যালেরিনা ও নকশি কাঁথায় নষ্ট গন্ধ’, ‘শব্দ স্নানে বেজেছে এস্রাজ’।আট পংক্তির কবিতাযাপনপ্রকৃত সংলাপে থাকে নাটকের প্রানবন্ত রূপথিয়েটারে মায়া ওড়ে ছায়া ঢাকে কুয়াশার ঋণরূপের অরূপে থাকা যাপনের নেশাটি রঙিনঅন্তরালে পুড়ে যায় সুগন্ধের পরিযায়ী...
ব্রহ্মজিৎ সরকারপ্রথম দশকের কবি। সীমান্ত ঘেরা ছোট্ট জনবসতি হলদিবাড়িতে বেড়ে ওঠা। বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় লেখালিখি। প্রকাশিত কবিতার বই ‘জড়িয়ে আছি কাঁটাতার’।চেপে রাখা কান্নাএকটা সকাল এসে, হাওয়া আর মেঘ এসেবন্ধ জানালা খুলে দিকপৃথিবীতে কি কারণে ঘুমঅন্ধ কুয়োর মত মজে আছে!পুরুষেরা কেন আজ বামন হয়ে গেছে?স্বপ্নের ভেতর যারা পেরিয়ে এসেছে নদীসেই সাঁকো...
পারমিতা মুন্সীকবিপক্ষ দগ্ধ বৈশাখে মিশে থাকে কাঁঠালচাঁপা বাস-যেমন প্রেমের মধ্যে লুকিয়ে থাকে লোভ-প্রজাপালকের অপ্রীতি জুড়ে থাকে তারঠোঁট ভাঁজ করা হাসি-তেমনই তোমারমধ্যে থাকা অন্য 'তুমি'-কে খুঁজে চলি-ভালো আছেন? কতখানি ভালো?আপনার চোখের নীচে জমাট কেন ধূসর?দন্ডসারস উল্টে গেল টের পেলেন না?কুজ্ঝটিকা ও মায়াদর্পণের এই খেলাচলতে থাকে দেখা হলেই...স্বত্ত্বেওকিছু জিনিস একঘেঁয়ে লাগে...
সন্ধ্যা তারা
পথে পথে জল
দুরূহ বেদনা!
পথে পথে বেজে যায় গান
ক্ষমার মতন
অদূরে গোলাপ
ভাঙা পাপড়ির শোকে
লেখাটি বিহ্বল!
বিকেলে পথিক নামে
সন্ধ্যার জটলা
একা একা তারা
উঠেছে আকাশে
প্রেমিকার মতো।
পুজো
সেই লেখাটিকে নতুন পোশাক দেব ভাবি
যার নাম, পাঠকের মুখে শুনি।
প্রেমিক
সে আসেনি
এসেছে কুয়াশা
বেড়াতে চোখের বাড়ি
আমি তাই
প্রহরী শুধুই
আমার ছায়ার!
শূন্যতা জানিল শুধু
সে কিছুই জানিলনা!
শুধু সুর বুকে নিয়ে গান
কিছুটা থমকে
ফের বেজে যায়
সন্ধের মায়ায়...
তুলনা
নবীন...
সে যেন খুব সীমান্তবর্তী গাছ
শিকড় এপারে ডুবে খানিক ওপারে
ফলের বসত ঘিরে যত আলোচনা
মাঠের নোনতা মাখে আচমন সারে
মালায় প্রশ্ন আসে এর কিছু পরে
জ্বালানির ঘ্রাণটুকু পেলে আজ তাকে
ফাঁকা জমি চুষে ফেলা বেহিসেবি রোদ ...
সুদীপ দে সরকার (Sudip De Sarkar)
আত্মপ্রকাশ
দাঁড়াও
কথাগুলোকে মাজাঘসা করে নিই একটু
তোমরা বোসো
ফোনের সুইচ্টা অফ্ করাই থাক্, বড্ড বিরক্তিকর---
এটা তো জানোই যে আমার
দেরি হয়ে গেছে বেশ খানিকটা
ওই যে জানলা-দিয়ে-মুখ-বাড়ানো রোদ্দুর
ওই যে অসময়ের ডাক, কোকিলের ---
ওরা জানে
একবার যখন আমি পা বাড়িয়েছি
তখন আর কেউ
দাবায়ে রাখতে পারবে না আমারে।
ফুটো পকেট থেকে
এতটা সময় পড়ে গেছে
ঝরে...
অন্য জন্মে ফিরে আসি যদি,
মানুষ নয় আর।
মানুষের নামে ধিক্কার ধিক্কার।
পরজন্মে স্কারলেট ম্যাকাও হবো আমি।
নীল পিঠে লাল পালক জ্বলজ্বল করবে,
আর, ওপরের হলুদ ডানার কিনারে
সবুজ রঙ লেগে থাকবে।
দীর্ঘ সময় উড়ে বেড়াবো আমি
এপ্রান্ত ওপ্রান্ত।
আমার ঠোঁটগুলো সাদা হবে,
আর, ডগাটি কালো।
বাঁকা ঠোঁটে আমি অগ্রাহ্য করে যাবো
পৃথিবীর যাবতীয় আঁচড়।
পরজন্মে আমি মানুষ হবো না আর।
মানুষ নষ্ট...
পাসপোর্ট রিনিউ করা হয়নি।
মাস্টারমশাইদের কাছ থেকে পড়তে নেওয়া বই,
ফেরত দিইনি তাদের কয়েকটা!
কতো মানুষের কাছে ছোটো-বড়ো ঋণ
শুধব কীভাবে? তাঁরা এই পৃথিবীর কোনওখানে
অবশিষ্ট নেই!
যেন কাঁটাতারবিহীন সীমান্তে মিথ্যা পাহারা
দুটো পানকৌড়ি এসে বসত টানা বারান্দায়
ছবি এঁকে রাখিনি তাদের!
শুধু স্মৃতির দরজায় ঘাই মারে সংশপ্তক
অরক্ষিত ন্যাড়া ছাদ। ঝুঁকে পড়া নারকেলগাছের
ডালে ঝোড়ো ভিজে হাওয়া…
যে ছাদ শিখিয়েছিল...
পিরিতে বর্ষা লেগে আছে
শ্রাবণ বাতাসে গলে অভিমান
জর্দা চোয়ানো রঙে থমথমে জল
বেপাত্তা ভেসেছি এতদূর,
জোছনাবাটিতে কারা রাত্রি জাগে?
পাহাড়তলিতে পড়ে থাকে পদচিহ্ন
গাঁয়ের মোড়লের চাবুক বাজাচ্ছে প্রাণে
ভুল হল তবে এতখানি ভালোলাগা?
কংসাবতীর জলে কাদা বাড়ায় ধর্মাবতার
পাখিরা হেসে উঠেছিল
তারপর বনপথে ছাতা খুলে দাঁড়ায় করম পরব
ভাদরিয়া ঝুমুর গীতে বাড়ে উদাসি মায়া
বেবী সাউমূলত কবিতা ও প্রবন্ধ লেখেন। প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ বনঘাঘরা, ইউথেনেশিয়া, গান লেখে লালনদুহিতা, ছয় মহলা বাড়ি, একান্ন শরীরে ভাঙো। এছাড়াও পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ-পশ্চিম সীমান্ত অঞ্চলের এক লুপ্তপ্রায় লোকসঙ্গীত নিয়ে প্রকাশিত হয়েছে তাঁর গবেষণা গ্রন্থ- ‘কাঁদনাগীত: সংগ্রহ ও ইতিবৃত্ত।’ভোটঅবিশ্বাস ঘুরে ঘুরে আসে গোলচত্বরের পাশে বিপ্লবের দেহমাছি ওড়ে উৎসুক জনতা তারাক্ষোভ নেই, শান্তি নেইশুধু...