জীবনের গান   প্রত্যাখ্যানের মধ্যে সমস্ত আশ্চর্য রাস্তাগুলো লুকিয়ে আছে পৃথিবীর বুকে জর্জ বিশ্বাসের গানকে জড়িয়ে ধরে দীর্ঘ করছে আয়ু রেখা ছেঁড়াতার বেঁধে ফেলতেও চান কেউ কেউ কিন্তু, ওই যে মন আর মস্তিষ্কের 'ম' আলাদা তাই, যাকে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসো তাকে বলো না কখনও, 'ভালোবাসি!'     অভিসম্পাত শব্দের সঙ্গে বহুকাল সম্পর্ক না থাকলে দূরত্ব বাড়ে ভেতর ভেতর ভয় তাড়া করে যদি কোনও...
নিবিড় নিঃসঙ্গ হয়ে যাও এখনো ভিড়ের মাঝে ? কেন? কতটুকু ব্যথার ঘ্রাণ পেয়েছো কোলাহলে? গা থেকে কিশোরীগন্ধ মুছে দিয়ে অরণ্যে যাও, আলিঙ্গন করে এসো গাছ শিখে নেবে কত বড় বড় কাজ শান্তভাবে নীরবে নিভৃতে করা যায়। সেইক্ষণে মনও ভরে যাবে ফুল ফল পাখির কূজনে। ফিরে এসো জনসভা থেকে ফিরে এসো ভিড় থেকে বুকে থাক অরণ্যের পাতার মর্মর ধ্বনি এখনো ভিড়ের মাঝে...
অরিন্দম রায় জন্ম: ১৯৮০ সালে। হাওড়ার বাসিন্দা।এখন কর্মসূত্রে মুর্শিদাবাদবাসী।ইংরেজি সাহিত্যে স্নাতকোত্তর।প্রকাশিত কবিতার বই: অষ্টধাতুর পৃথিবী,শবসাধনা, রোজনামতা, নির্বাচিত শূন্য।সম্পাদিত পত্রিকা: লালন। গীতিকাসমকাল ভরা চাতুরীইতিহাস ছিল মিথ্যেহ্যান্ডেল ভাঙা হাতুড়িফাংগাস মম চিত্তে!সকলেই ভালো চেয়েছেকেউ তো মন্দ চায় নাপেট ভরে যত খেয়েছেতত বেড়ে গেছে বায়না!মেঘের ওপরে কাকেরাউঠে ত্যাগ করে বিষ্ঠাতুমি তাকে ভাবো চন্দনতুমি তাকে ভাবো...
নিমগ্ন দীঘির মুখোমুখি বসে বুনছি রুমাল রুমালে লিখছি চিঠি পিগমিদের মতো তোমার তানপুরায় জাল বুনে চলেছে মাকড়শা সেই জালে সরগম সাধছে বিকেল। বিষণ্ণ মেঘে তিরিতিরি কাঁপে খেপলির জল সেই কম্পনে ধরে রাখতে চাইছি সুর অপেরাঘরের মতো পদ্মপাতার জলে সিমফনি বেজে চলে উদ্দাম চুম্বনের মতো। জোছনা আয়না জুড়ে বেহালায় তর্পণ বাজে জুপযন্ত্রের মতো মৃতদেহ সেলাই করেছি তখনও কাঁপছে দেখি চোখের...
মতলবটা তোমার বুঝে ফেলেছি চাঁদবদন হাড়-পাঁজর আছে ক'খান তা-ও চিবিয়ে খাবে হেঁশেলে তো আগেই ঢুকে পড়েছো বাছাধন ভাতের হাঁড়িটাকেই আখেরে কেড়ে নিয়ে যাবে। জানি গো কত্তা, ভাতে মারার কৌশল তোমাদের গাওনা গাওয়ার আগে করো কত্ত ধানাইপানাই! গরিবগুর্বো, ভাতের হাঁড়িটাই সম্বল আমাদের তারচে' বেশি চাওয়া পাওয়ার অধিকার তো নাই। প্রেম বিলাতে এসেছো, সেজে নদেরই নিমাই প্রেমের আগুনে পুড়ে যদি...
বিসর্জনের পর বিষাদের সাথে মদ খেতে যাই                                                                                     ...
শরতের হাওয়া বইতে শুরু করলেই কাগজে কাগজে তার চিহ্ন ফুটে ওঠে এ'দুয়ের মাঝে কোন মিল আছে বুঝি! হয়তবা আছে, ভোরের শিউলি ফোটে মায়ের প্রতিমা তৈরি থেকে শুরু করে দীপাবলি পর্যন্ত ছবি তৈরি হয়ে যায় কাগজপত্রে, পুজো সংখ্যা কত কত কবিতার ঝুরি, শব্দের বন্যা বয়ে যায়, কে পড়ে? কারা? নাকি পড়ে থাকে টেবিলে? আমিত্বের বিজ্ঞাপন সংখ্যা গুনে নেয় কটা হল! কেউ কাউকে কি মনে...
মনে মনে অধীন থাকা সহজ অনায়াসে চরণ ধূলায় লীন ফুলচয়ন, গাগরিভরন সবই কল্পসম্ভব যদি তুমি রাখো। কোথায় রাখবে শ্যামরায়? তোমার দু'পা গলে গেছে ওই পাহাড় বনের ধারে এদিকে বেলা নেমে এলো আমি সাজে বসি শেষ দিনে এসো ছায়ার মত পাশে রেখো যা দেবে তা-ই স্বীকার্য সেদিন, কী পিপাসু এই দাস্যভাব! চোখ গেঁথে রাখলাম মাটিতে যে চোখে জল এলে ভেবো গান-- বৃন্দাবনী সারং
কোন অনুতাপ বা অভিযোগ ছাড়াই আমি এঁকে ফেলি চাঁদ, চুম্বন আর মরণাপন্ন বেহালা তুলির টানে সম্পূর্ণ করি নদীর বাঁক, মন্দার বন এই ক্যানভাস আর গৃহস্থালি আমি মেলাতে পারিনা সমস্ত দিনের শেষে নোনাধরা দেয়াল, হয়তো বা অনায়াসে ছেড়ে চলে যাই ভাঙনের শহর... তোমারও কি মনে পড়ে পুরুষালি ভ্রমণকাহিনী সূর্যাস্তের মুহূর্ত, গানের কলি, জৈব রসায়ন রোদের নামতা, ছায়ার নামতা,...
ওরা জন্ম নেয় মৃত্যুর তাগিদে, সাঁতার শেখেনি বলে জলকে দূর থেকে দেখে বুকের বোতাম যদি ভুলে যায় পোশাকের প্রয়োজন আমরা কী ওদের হব না কোনদিন ? বালিশের গভীরতর তুলো‌ বাঁচতে চায় না যেমন চাকা ঘুরছে বাম থেকে ডানে, আমি ঘুরছি মাথার ভিতরে অন্ধকার পুষে আলোর থেকে দূরে... মহড়ায় সাতদিন গিয়েছি । দু'হাতের মুঠিতে এনেছি ছাই ভস্ম পরিমাণ মতো, লাট্টুর...
বিশ্বজিৎ চট্টোপাধ্যায়হৃদরোগ ও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক।কবি, গল্পকার, গদ্য লেখক এবং অনুবাদক। প্রকাশিত বই সংখ্যা ১৪সম্পাদনা করেছেন একাধিক বাঙলা ও ইংরেজি পত্রিকা।কবিতার জন্য পেয়েছেন দু’টি পুরস্কার।ভালো শহরখারাপ শহর থেকে ভালো শহরের দিকে কবে যাব?যে পথ দেখাবে সেওপথ হারিয়েছে।কালো চশমা পরে আমিহাসপাতালের গেটে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে রয়েছি।পথে কেউ নেই।প্রতিটি পায়ের শব্দ, এ শহরে, সন্দেহজনক।কেউ...
জাংশানে খুঁজি রোজ গজমতি মালা প্রেমের ঘোড়ার সাজ চেতকের মতো ছাই মেখে বসে আছে সাগর মেলায় ভগীরথ এনে দেবে পয়োমন্ত জল অপেক্ষা ফিরে যায় মুখ ভার করে টেবিলে ডুকরে কাঁদে বেলিফুল সুগন্ধি রুমাল মাছের পেটের খাঁজে রাজার আংটি খুঁজি আমি বিদূষক কৌতুকে হিসেবের বিল দিয়ে যায় গজমতি মালা হায় কখন পরাবে প্রিয়তমা জরুরি বিভাগ বলে হাতে বড় অল্প...
ঠেলা নিয়ে হাঁক দেয় যে নাঙা কাবাড়ি তার সঙ্গে সাঙা হলে সুখে থাকা দায় সূর্য জলে ধোয় পুন্না, রঙের খোঁয়ারি ঝেড়েঝুড়ে ভোরবেলা আকাশে টাঙায় সংসার সহজ বড়, সংসার কঠিন কাবাড়ি যে কিনে ফেরে টুটাফুটা মন বউটি ঝালাই জানে, অগ্নিদাহে সেঁকে বিধিমতে সারানোর করে আয়োজন পদ্মাসনোস্থিত যোগী, দেহপদ্ম নিয়ে রোজ ভেসে থাকে কন্যা বিবাহের জলে আশহর দুঃখ কাঁধে কেউ ঘরে...
কুমারেশ তেওয়ারী জন্ম আসানসোলের কন্যাপুরে। পড়াশোনা বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে। বিভিন্ন পত্রিকায় লেখালিখি করেন। প্রকাশিত কবিতার বই: ‘জুড়ন পুকুর’, ‘ব্যালেরিনা ও নকশি কাঁথায় নষ্ট গন্ধ’, ‘শব্দ স্নানে বেজেছে এস্রাজ’।আট পংক্তির কবিতাযাপনপ্রকৃত সংলাপে থাকে নাটকের প্রানবন্ত রূপথিয়েটারে মায়া ওড়ে ছায়া ঢাকে কুয়াশার ঋণরূপের অরূপে থাকা যাপনের নেশাটি রঙিনঅন্তরালে পুড়ে যায় সুগন্ধের পরিযায়ী...
কবিতা লিখে খুব বেশি হাসিখুশি থাকা সম্ভব নয় কবিতার মধ্যে এক ধরণের বিপন্নতাবোধ আছে হিংস্র জন্তু যেমন আগুনকে ভয় পায় তেমনি সুখী মানুষ কবিতাকে এড়িয়ে চলে কবিতাগ্রস্ত লোকেদের ভর হয় ভূতে পাওয়ার মত তারা আছাড়ি পিছাড়ি লেখে কল্পনা করে চরমতম অসুখের কবিতার মধ্যে যে শোক যে আঘাত যে মাথাব্যথা সেসব লিখে লিখে কত কবির যে ঘর সংসার ভেসে গ্যাছে সে খেয়াল তাঁদেরই...
দিব্যেন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়জন্ম: ১৯৯২ ২০১৭ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর।প্রকাশিত কবিতার বই:আমি অলকানন্দা ও ডায়েরির নীল পাতা (২০১৮)ভালবাসার ডাকপাখি (২০১৯)যেখানে নেমেছে রাত্রিযেখানে নেমেছে রাত্রিযেখানে নিবিড় গন্ধমাখা পুরনো কিছু বিকেলশ্মশান ধোঁয়ার অভিসার আতরের মতোঘুমে বুঁদ হয়ে থাকা কৃষ্ণচূড়ার প্রেমিকসুইসাইড নোটের না লেখা পাতাআর প্রশ্ন...রাইন নদীর তীরে শীততখনও সকাল হয়নিশুকনো পাতারা হাওয়ার স্রোতেতোমার...
শুদ্ধেন্দু চক্রবর্তীজন্ম: ১৯৮০, কলকাতাপ্রথম কাব্যগ্রন্থ: আকাশপালকঅন্যান্য কবিতার বই: শিকারতত্ত্ব, আড়বাঁশির ডাক, জনিসোকোর ব্রহ্মবিহার, কানাইনাটশালাকবিতাথেরাপি নিয়ে গবেষণামূলক বই: ষষ্ঠাংশবৃত্তি সম্পাদিত পত্রিকা: শামিয়ানাচিড়িয়াতাপুভোর ভোর বেরিয়ে পড়েছি। লম্বা সফরচেক পয়েন্ট পার করে গেলেই দেখা যাবেসপসপে জাড়োয়া শরীরস্তন দেখা যাবে যোনি দেখা যাবেতেল সপসপে খোলামেলা মৈথুন দেখা যাবেওদের দেখতে দেখতে আমরা নিজেদেরদেবরাজ ভাবব পয়গম্বর...
রাজু আলাউদ্দিনন্যানো কাব্যতত্ত্বের জনক কবি, প্রাবন্ধিক ও অনুবাদক। জন্ম ৬ মে ১৯৬৫ সালে শরিয়তপুরে। লেখাপড়া এবং বেড়ে ওঠা ঢাকা শহরেই। কর্মজীবনের শুরু থেকেই সাংবাদিকতা পেশার সঙ্গে জড়িত। মাঝখানে বছর দশেকের জন্যে প্রবাসী হয়েছিলেন ভিন্ন পেশার সূত্রে। এখন আবার ঢাকায়। ইংরেজি এবং স্পানঞল ভাষা থেকে বিস্তর অনুবাদের পাশাপাশি দেশি ও...
চারিদিকে নিস্তব্ধ অন্ধকার আলগোছে উড়ে চলেছে মেঘ ভেঙে পড়েছে ধৈর্য্যের সীমানা দুই দেশের মাঠের ওপর ভরা পূর্ণিমা। এখানে রাত জেগে থাকে দিনের আলোর মত অন্ধকার ঘুরে বেড়ায় গুটি পায় আলো এক হানাদারীর নাম গোপনে ধ্বংস করে আবেগের গোপনীয়তা। তোমার পরিশ্রম ধোয়া শীতল জলে একফোঁটা নোনতা স্বাদ লেগেছিল সন্ধ্যা নামার আগে পাখিরা ফেরার আগে ভাবে মাটির ভেতর থেকে জলের ভেতর থেকে সবটুকু সুখ ছেঁচে নিয়ে...
বড় মুখ করে বললে, সংসারই চলে না এবার কবিতাটা ছাড়ো ভিতরটা তোলপাড় করে দিলে এতদিনের সখ্যটা নিজে-নিজেই খেলে তোমাকে বোঝানোর ভাষাই নেই কবিতা নেশাও নয়, কবিতা পেশাও নয় কবিতার জন্যে মই বাইতে হয় না কবিতার জন্যে আকাশেও উড়তে হয় না মাটিতেও টলতে হয় না আমার সংসার আর কবিতা মাখামাখি ওরা সহাবস্থান জানে, ওরা রাগ-অনুরাগ জানে ওরা জানে কবিতা সম্রাটের আর একটু...