বড় মুখ করে বললে, সংসারই চলে না
এবার কবিতাটা ছাড়ো
ভিতরটা তোলপাড় করে দিলে
এতদিনের সখ্যটা নিজে-নিজেই খেলে
তোমাকে বোঝানোর ভাষাই নেই
কবিতা নেশাও নয়, কবিতা পেশাও নয়
কবিতার জন্যে মই বাইতে হয় না
কবিতার জন্যে আকাশেও উড়তে হয় না
মাটিতেও টলতে হয় না
আমার সংসার আর কবিতা মাখামাখি
ওরা সহাবস্থান জানে, ওরা রাগ-অনুরাগ জানে
ওরা জানে কবিতা সম্রাটের
আর একটু...
সোনালী ঘোষ জন্ম: ১৯৮৬শূন্য দশক থেকে লেখালিখি।থাকেন কল্যাণীতে।বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় লেখা প্রকাশিত হয়েছে।স্রোত১বৃষ্টি থামার পর,জান্তব ফোঁটাকে জিগ্যেস করেছিলাম,'এত নিখুঁত তালিমপেলি কোথা থেকে?'২প্রচ্ছদ ছেঁড়ার পর,মনের গভীরেযে কষ গড়ায়,সে তো চন্দন ঘষা জল!৩বিদ্রোহ যার কাছে গিয়েনীরব হয়ে আসে,তাকে আমি বলিনিষিদ্ধ প্রেতপুরী।৪কত মুহূর্ত যায় ভেঙেগুঁড়িয়ে যায় হিরোসিমা,অবাধে তৈরি সরণীর কাছেবেফিকর দিল রাখব না...৫দফায় দফায়...
রঙ্গন রায়জন্ম: ১৯৯৮জলপাইগুড়িতে বসবাস।বাংলা সাম্মানিক স্নাতক স্তরে পাঠরত।কাব্যগ্রন্থ: প্রাপ্তবয়স্কতার পূর্বদিকহিরোশিমার প্রেমিকজোয়ান বীজের গানের কাছে আমার অনেক স্মৃতি জমা পড়ে আছে।অনেকদিন পর যখন আমাদের কথা হয় অনেক অনেক দূর থেকেআমি টেকনোলজির কাছে মাথা নত করে ফেলি, আকন্ঠ প্রেম নিবেদন করি--বাড়ি ফেরার প্রতি আকর্ষণ বেড়ে যায়, যখন কিছুক্ষণের জন্য সমস্তসময় অতিক্রম...
দেবাশিস তেওয়ারীজন্ম ১৯৮২২০০২ সালে দেশ পত্রিকায় কবিতা প্রকাশের মধ্যে দিয়ে পাঠকসমাজে পরিচিতি।বিভিন্ন পত্র-পত্রিকাতে নিয়মিত লেখালিখি করেন। অনুবাদ সাহিত্যে আগ্রহী।প্রকাশিত হয়েছে ছয়টি কবিতার বই।নারীভিতরে ভিতরে একটা মেঘের জন্ম হলেবৃষ্টি পড়ে, ঝমঝমিয়ে ভিজতে থাকে পাতাবাহারের পাতা।তোমার রংবেরঙের ইচ্ছেডানা মেলে উড়তে থাকে আরকুর্নিশ জানায় আমার আঁধার রাতের অশনিকে।সামনের লন তখনও ভেজেনি অথচভিতরে ভিতরে...
রঞ্জন ভট্টাচার্যজন্ম: ১৯৮১ সালে শ্যামনগরে।কলা বিভাগে স্নাতকপেশা: শিক্ষকতা।কাব্যগ্রন্থ: ছায়া বিকেলের ঘর (২০১৭) ডাকাডাকি ৩৫তোমাকে আজ পর্যন্ত যা যা বলেছি, বন্ধুরা সব মনোযোগ দিয়ে শুনেছে। তোমাকে সকালের সর্ষে ফুলের মধ্যে বসিয়ে রেখে গোধূলির কচুরিপানার ফুল এনে দিয়েছি। আমি আর তুমি ছোটদের সঙ্গে গোল হয়ে বসে একদিন মিডডে মিল খেয়েছি। একটা মেয়ে...
সমরেশ মুখোপাধ্যায়জন্ম সত্তর দশকের প্রথমার্ধে। শিক্ষা ইংরেজি সাহিত্যে এম এ। প্রথম লেখা প্রকাশিত হয় শুকতারা পত্রিকায়। প্রথম কাব্যগ্রন্থ শামুকজন্ম। অন্যান্য কাব্যগ্রন্থ -বিষণ্ণ দাবার কোর্ট, তোমার ইঙ্গিত বুঝি, পুর্বপুরুষের ছায়া, নক্ষত্রবাড়ি, খাদের কিনারে একা। ২০১৫ সালে বনলতা পুরস্কার, ২০১৬ সালে অমিতেশ মাইতি স্মৃতি পুরস্কার, ২০১৭ সালে নতুন কৃত্তিবাস পুরস্কার পেয়েছেন।দীপাবলির...
হাসপাতালের ডিউটি সেরে যে ডাক্তার
নিজের চেম্বারে বিনে পয়সায় রোগী দেখে
ওষুধ কোম্পানি থেকে পাওয়া স্যাম্পেল দেয়
দুস্থ রোগীকে
আমি তাকে স্যালুট করি।
গ্রামীণ হেলথ সেন্টারের যে ডাক্তার
তার ডাক্তার সুলভ ভ্যানিটি বাদ দিয়ে
তার ডাক্তার সুলভ গ্র্যাভিটিকে তোয়াক্কা না করে
ইনফ্রাস্টাকচারের বাহানা না দিয়ে
উন্নত যন্ত্রপাতি ও প্রযুক্তির দোহাই না দেখিয়ে
বাবলা গাছে স্যালাইন ঝুলিয়ে চিকিৎসা করে
আমি তাকে...
তখনও তো ওরা কেউ শরীর বোঝেনি
প্রেমের গন্ধ ছিল টিউশন জুড়ে
এলোমেলো চুল তাতে লাল নীল গার্ডার
সপ্তাহে তিনদিন মন ফুরফুরে।
ওরা কেউ চেনে না কি, আদরের মায়া
শুধু বোঝে কালো শার্ট, নীল চুড়িদারে
একটুও হাত যদি লেগে যায় হাতে
দিনটা দিব্যি কাটে নচিকেতা সুরে।
এইভাবে ফেলে এসে সময়ের ক্ষত
হঠাৎ বজ্রপাত, গড়িয়ার মোড়ে
অটোর লাইনে জ্যাম, মেঘ করে...
মৌসুমী মুখোপাধ্যায়জন্ম সত্তর দশকের প্রথমার্ধে। শিক্ষা ইংরেজি সাহিত্যে এম এ। প্রথম লেখা প্রকাশিত হয় শুকতারা পত্রিকায়। প্রথম কাব্যগ্রন্থ শামুকজন্ম। অন্যান্য কাব্যগ্রন্থ -বিষণ্ণ দাবার কোর্ট, তোমার ইঙ্গিত বুঝি, পুর্বপুরুষের ছায়া, নক্ষত্রবাড়ি, খাদের কিনারে একা। ২০১৫ সালে বনলতা পুরস্কার, ২০১৬ সালে অমিতেশ মাইতি স্মৃতি পুরস্কার, ২০১৭ সালে নতুন কৃত্তিবাস পুরস্কার পেয়েছেন।উদাসীন...
সঙ্গমের সিনে দেখেছি
ক্যামেরার লেন্স আউট অফ ফ্রেম হয়ে যায়
এখনও এত কার্পণ্য
মোমবাতি নিভে যায়,কোথাওবা টিকটিকির আরশোলার শিকার ধরা।
অধ্যাপক মানেই চোখে তার ভারী ফ্রেমের চশমা
দেখেছি,স্কুলে ঢোকার আগে দিদিমণিকে নাকের নোলক
খুলে রাখতে মিনি পার্সে।
এখনো এই ধারণা রয়ে যায় আমাদের বৃহত্তর জীবনে
ভাবতে ভাবতে রক্তকরবী পড়া শেষ হয়ে গেল
খামাকা রঞ্জনকে মারলেন কেন?
অতৃপ্ত সঙ্গম শেষে...
নিজের মতো এক সন্ধ্যায় কেটে ফেলি হাতের শিরা
ভ্রম এসে আমাদের ন্যুব্জ করে গেল
তার দস্তানার ভিতর লুকোনো ছিল মেঘের পাহারা
তারও ভিতর ক্রোধ, মামুলি অস্ত্র
চাঁদের দুধ পড়ে পুড়ে গেছে শস্য। আমি সেদিকে যাইনি আজ
ধোঁয়া-ওঠা সেই প্রান্তর বীভৎস এক অলৌকিক হয়ে আছে
নিজস্ব শিল্পের মতো কেটে ফেলেছি হাতের শিরা। শ্বাস বুজে আসার আগেও
একবার...
উত্তম চৌধুরীসত্তর দশকের শেষে কবিতা লেখার শুরুপ্রকাশিত বই ১৪ টিসম্পাদিত পত্রিকা: দৃশ্যমুখপেশা: শিক্ষকতাবসবাস আলিপুরদুয়ারে প্রতিভার মুদ্রাগুলোবুকের পাঁজর থেকে শীতল বরফ সরিয়ে দিই,উষ্ণতা জমা থাক হৃদয়ের গভীর দেরাজে।কাজে কি অকাজে খুব খরচ করেছসকালের আলোয় বেড়ে ওঠা প্রতিভার মুদ্রাগুলো।চালচুলোহীন মাঠকে ডেকে বলছ, চলো।অথচ তুমি ও সে পাথর আর নদীর গাঢ় সমার্থক।এখন চোখ...
তোমার পিছুটানে লেগে আছে গাঢ় নিশীথ
তবু তুমি গোপনীয় বলে এঁকে ফেলেছো শরীরের মূর্ছনা
অথচ রোমাঞ্চ ভেঙে বহুজন্মের বিষাদ জেগে আছে,আজন্মকাল
কিন্তু সরোদের কম্পন এসব ঘটনায় ভোরের কুয়াশা, নন্দনতত্ত্ব
এবারে আমার মিশে যাওয়ার পালা
যেন অদূরে আলোর আভাস উদীয়মান সারাক্ষণ
এসেছি, প্রেম অতীত বলে তুলে দিই আদিগর্ভ স্পর্শ
সঙ্গে শেষ সমুদ্রস্নানে লেগে থাকা নিয়ন আলো
জীবনের সহজ...
স্পন্দন চট্টোপাধ্যায়উত্তরপাড়া রাষ্ট্রীয় উচ্চ বিদ্যালয় থেকে পাশ করে এবং পরে ন্যাশানাল ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজি, আগরতলা থেকে স্নাতকোত্তর পাঠক্রম সম্পূর্ণ করেন ২০১৭ সালে। প্রকাশিত বই: ‘রিটার্ন টিকিট নেই’, ‘ক্লিভেজ জুড়ে দেওয়াল লিখন হোক’। বর্তমানে মুম্বইয়ে Cine Riser Digital Media Pvt. Ltd.–এ Content Writer, Editor & Social Media Executive হিসেবে কর্মরত।ছায়াসবারই...
পৃথিবীর সেরা বেহালা বাদক জসুয়া বেল
ওয়াশিংটনের সাবওয়ে স্টেশনে
ঘন্টাখানেক বেহালা বাজালেন
সাতজন শ্রোতার সামনে ।
তারমধ্যে একজনের বয়স তিন
একজন মাত্র চিনতে পেরেছিলেন তাঁকে।
হুগলির ওভারব্রিজের ওপর দাঁড়িয়ে কবিতা পড়েছিলেন
একজন। যেখানে শ্রোতার সংখ্যা ছয়
একজনের বয়স নয়
কেউ চিনলো না তাকে
কোনো কমেন্ট কোনো শেয়ার কোনো লাইক থাকল না
শুধু দুন আর শতাব্দী এক্সপ্রেস
শব্দ করে চলে গেল দুদিকে
উড়তে...
কত ছদ্মবেশ জানে তোমার প্রতিভা
অহংকারে নষ্ট এক নিষেধের মতো নেশায় আকুল হই। কত বিপ্রতীপে
ঘাই মারে মাছের স্বভাবে মন
ডুবে ডুবে জল খাওয়া চরিত্রের পেটে
এত বুদ্ধি ধরো তবু এত রাগ সামলাও কী করে!
তোমাকে নেব না ভেবে টেনে আনি ছোঁব না আঘাত
তবু দাও কলতলায় যেভাবে বালিশ পেতে
ধুয়ে দিলে মুখ্যুসুখ্যু ভ্রমে অন্ধ চোখের...
আলোর মতো রাত্রি নামে, উপচে পড়ে ঘর,
স্বপ্ন জুড়ে জাগল কি মর্মর?
চাঁদের মতো হাঁড়ির ভিতর গান ধরেছেন তাপ,
খিদের ছায়া মারল এসে ঝাঁপ।
ঝাঁপ দিয়েছে হাজারো চোখ, ঝাঁপ দিয়েছে দেশ,
এক হাঁড়িতেই মস্তানি সব শেষ।
যুদ্ধ কেবল অন্ধকারের, যুদ্ধ কেবল নিজের।
যত হারজিত খিদের রক্তবীজে।
আলোর মতো রাত্রি নামে - পরনে রাজবেশ
হাঁড়ির ভেতর, জলের ভেতর ফুটছে...
ওয়াহিদা খন্দকারবেশ কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় কবিতা লিখছেন ওয়াহিদা।বাস্তব ও অতিচেতন মিলে তাঁর কবিতা হয়ে ওঠে বিপন্ন পৃথিবীর গল্প।এর আগে প্রকাশিত হয়েছে ‘নীরব দশমিকের ভিড়’।তাঁর নতুন কবিতার বই ‘বিবর্ণ সিলেটের সমীকরণ’। হ্রেষাবারবার ভেঙে যায় সাজানো দাবার ঘরবাড়ি।সংস্কারের পর,প্রত্যেকবার ভেবেছি গুছিয়ে খেলব।বেঁচে থাকার এ খেলায়সাদা সাদা গাছ। পাখি, সমুদ্র, জনতা...সবই...
বুকের ভেতর জাহাজ ডুবেছে যত
নীরবতা নিয়ে মরে গেছি বহুবার,
আমার চোখেতে নালিশ ছিল না কোনো
হেরে যাওয়াটুকু মৃত্যুরই দাবিদার।
প্রশ্নতে ছিল অনেক চিহ্ন আঁকা
ঘেমেছে চশমা কমেছে জলের দাম,
চিরকুটে লেখা লোডশেডিং এর বুলি
প্রেম ভালোবাসা ভাঙনেরই সৎ নাম,
তাসের ভাগ্যে জোকার এসেছে হাতে
জবাব ছিল না, হাসিতেই জাদুঘর
কলব্রে-র থেকে নেমে আসে কোনো গাধা
পিঠে বাঁধা ছিল আপোসকালীন...
নরম মাটির ভেতর কেবল মিলিয়ে যাচ্ছো তুমি। মিলিয়ে যাচ্ছে তোমার অস্তিত্বের উড়ন্ত ডানা। রৌদ্রজ্জ্বল সমস্ত দিন বসে আছে তোমার সরলতার পাশে। অথচ তুমি মেলে দিয়েছো শুকনো গাছের ডালে একফালি জটিল অন্ধত্ব। তোমার কাঠবেড়ালি রঙ, দৃষ্টিহীন চোখ ও লুকোচুড়ির সমস্ত সমীকরণ আমাদেরকে একটু একটু করে বিকারহীন নদীর কাছে বসতে শেখায়।...