আমার বঁধুয়া নয়, তবু রাত জেগে দেখি তার অমন আনবাড়ি যাওয়া ধুলোনদী পার হয়ে, ডিঙিতে পদ্মের ছাপ রেখে কার কুঞ্জে এত রাত? ভাবি একদিন কাছে ডেকে কপট জিজ্ঞাসা করি, ভালোমানুষের ছেলে, শোনো- চোখের দিঘলে এসে নদীশব্দ পেয়েছ কখনও? সে ঢেউ আমার নয়। ভীষণ এই আনচান দিনে না, গাঙ্গিনি নই আর। জল নেই যমুনাপুলিনে। খরার ভিতরে জ্বলে হু...
হেমন্ত এসব গোধূলি আলো স্বজন হারানো লোভে একা পথেই পায়ের ছাপ তারপাশে লিখে রাখা ঘাতক আলোয় আঁকশি ফেরানো চোখে ফেরা যায়! বলো! দেহ নেই! জন্ম নেই মাতৃহননের সুরে কাকেই বা প্রিয় ডাকি, কাকে যে দেবতা ! এসব গোধূলি আলো একা...   সন্ধ্যা কাকে বল ছায়া? আলোর দরজা পেতে, রোজ সেও হেঁটে গেছে জারুল বাগানে মৃত গাছেদের চোখে ঘৃণা জন্ম নিতে দেখে-- চুপচাপ পুঁতে দেয়...
পিকাসোর ছবি একই পথে সব গল্পেরই শেষ বস্তুত একটাই গল্প মাঠের মাঝে তৈরি হচ্ছে নিরবচ্ছিন্ন। শুধুমাত্র মনে হচ্ছে বদলে যাচ্ছে ; মাঠের চারিদিকে বিভিন্ন উচ্চতার ঘিরে আছে যে বাড়িগুলো সেগুলোর বিভিন্ন ছাদ থেকে কেউ দেখছে কান কেউবা একটা চোখ কেউবা নাকের পাশ অথবা মাথার পেছন তাকিয়ে থাকতে থাকতে চোখের ওপর চোখ ঢাকা পড়ে যাওয়া কান ছাদের গুঞ্জন শোনার জন্য উঠে আসছে আর একটি...
মিলন বারবার দেখা হবে আমাদের নদীর ধারে... পাহাড়ের ঢালে... অথবা গ্রন্থাগারের নীরবতায় এই চরাচর ছেড়ে যাচ্ছ যাও— তবে মোহনায় যেও না ওখানে নবীন পলি রাত্রির কারণ বোঝে না জেনে রাখো অভিমান সফল সন্ন্যাসী কামনাসাগর পাড়ি দিয়ে ছুটে যায় অরণ্যে, মোক্ষ লাভের আশায় চিন্তা হয়... যদি পথ হারিয়ে ফেলো প্যাডক গাছের ছায়ায় নাভি ভরা তেজ পথে উগরে দিয়ে, জলপাত্র উজাড় করে ফিরে এসো দেখা হোক আমাদের নাগরদোলায়, দেখা...
সন্ধ্যা তারা পথে পথে জল দুরূহ বেদনা! পথে পথে বেজে যায় গান ক্ষমার মতন অদূরে গোলাপ ভাঙা পাপড়ির শোকে লেখাটি বিহ্বল! বিকেলে পথিক নামে সন্ধ্যার জটলা একা একা তারা উঠেছে আকাশে প্রেমিকার মতো। পুজো সেই লেখাটিকে নতুন পোশাক দেব ভাবি যার নাম, পাঠকের মুখে শুনি। প্রেমিক সে আসেনি এসেছে কুয়াশা বেড়াতে চোখের বাড়ি আমি তাই প্রহরী শুধুই আমার ছায়ার! শূন্যতা জানিল শুধু সে কিছুই জানিলনা! শুধু সুর বুকে নিয়ে গান কিছুটা থমকে ফের বেজে যায় সন্ধের মায়ায়... তুলনা নবীন...
জমাটবাঁধা মেঘের ভিতর দিয়ে যখন সংবাদগুলি উড়ে যাচ্ছিল আমি বিদ্যুৎ পেড়ে আনতে একটা লম্বা আঁকশি বাড়িয়ে দিয়েছিলাম। দেখি,আঁকশি বেয়ে নামছে থিকথিক মাজাভাঙা মানুষ। আমি মার্ক্স পড়িনি। ভরা পেটে তাদের বহুদিন রপ্ত করতে হয়েছে অন্ধ- ভিখিরির পার্ট । বনবিতানের গেটে এখন তারা এনামেলের বাটি নাচাচ্ছে, 'পয়সা দিয়ে হাওয়া কিনব না,কিনব না'। আর মাঙনায় পাওয়া লক্ষ্মীর সরা পেতে দিয়েছে চরাচরে। মুফত পেলে এক কাপ...
মধুদা ডাকছে মধুদা ডাকছে সবাই বলছে, মধুদা ডাকছে মধুদার এরিয়ায় থাকি ঘাড়ে একটাই মাথা কিন্তু ভয় পাব না আর এখন আঙুল তুলতে হবে এখন প্রশ্ন করতে হবে কী হবে এই আবছা স্বাধীনতার দেশে ফালতু বেঁচে থেকে? যেখানে মহাত্মা গান্ধী টাকা হয়ে লুকিয়ে থাকেন বাথরুমের দেওয়ালে? ভয় পাওয়ার কিছু নেই আমরা রাজনীতি করি না রাজনীতি আমাদের করে রাজনীতি উপভোগ করে আমাদের...
এই সেই গলি এইখানে বাঁয়ে বেঁকে কী সরু কী সরু,দুদিকে দোকান গাড়ি ঢোকে না, হাতে হাতে ধরে… তারপর সেই মুখ, সাধ না মেটা দেখা অঙ্গে বস্ত্র নেই জলস্নান জলস্নান কে? কে? কে? কে খায়নি নুন? মাসি পিসি কাকা জ্যাঠা আত্মীয়কুটুম শুধু মেয়ে বলে সে— মুখে দেবে না আগুন?
ও হাওয়া, আমার মুখ মুছিয়ে দাও এইসব অলৌকিক জানালার ধার, বাড়ি ফেরার ট্রেন ফেরিওয়ালা আপেল নীল চশমার ফ্রেম জীববিষয়ক আগ্রহ বা নদীবিষয়ক দিল ঢুঁন্ডতা হ্যায় ফির ওহী... এ এক আশ্চর্য উড়ান অস্থির মায়াচোখ বা নেহাত নিরাসক্ত ঘরবাড়ি মেঘ মেঘ বিচ্ছেদ বিচ্ছেদ পাখিডানা হুইসল বা অনুরূপ সমবৃত্তীয় অঙ্গ এইসব অনন্ত দ্বিধা ঘাম হয়ে ফুটে থাকে মুছিয়ে দাও... স্টেশন নিকটে এলে বিরহী কদম অকালেই ঝরে...
সাউথ সিটি মল 'তোমার হৃৎপিণ্ড যেন বিনামূল্যে ওয়াই ফাই জোন ফ্রি সিগন্যাল যাবে তাই, সারাক্ষণ ফোনে রাখি চোখ' এই বলে দুজনেই অক্টোপাস খেতে ঢুকে গেল লিরিল যুবতী আর তার সঙ্গে ডেনিম যুবক মনুমেন্ট কলকাতা শুয়ে থাকা, তীব্র এক রাক্ষসের নাম মনুমেন্ট তার উথ্বিত শিশ্ন, ত্বক ভেদ করে ভরা পূর্ণিমার রাতে মাতালেরা যখন ঘুমিয়ে, শিশ্নমুখ চুঁইয়ে রক্ত মাখা গাঢ় বীর্য ঝরে পড়ে ফ্রি স্কুল স্ট্রিট মিসেস ব্রিগান্জা...
একদিন সমস্ত সহজ হবে , জানি। লিখতে লিখতে হবে, সে তো। লেখা এক স্বরাজ রাজধানী। লেখা এক মস্ত বড় সেতু। সেতুবন্ধ করেছি শরীরে। হাত আর পায়ের ভিতরে কাজ আর বিশ্রাম পুরেছি। শিশু হয়ে মাঠে নেমে গেছি। এই ত সফল বিদ্যালাভ। এই ত সজীব প্রতি কোষ। হাত আর পায়ের মিলনে এই ত ভুলেছি আক্রোশ। শরীরকে করেছি মন্দির হাত জুড়ে হয়ে আছি স্থির সমস্ত সহজ...
এসেছ আষাঢ় তাই, কৃষ্ণ সেজে আজ হোলিখেলা   ভিজে যাচ্ছে মাটি আর খুলে যাচ্ছে সব ঘর দোর এতদিন ধুয়ে মুছে যা রেখেছি,   সব শুধু তোর   খসে পড়ছে পলেস্তরা, জেনে গেছে পাড়া প্রতিবেশি নিভৃত ঘরে আজ বসে আছে   দুই সন্নেসী!   এসেছ আষাঢ় তাই, রাই আজ শ্যামসঙ্গ করে, হয়েছে কলঙ্কিনী এইবার বানপ্রস্থে যাবে…   শরীরেই মোক্ষ তার, বৈধব্যে দারুণ অনিহা   রাধা রাধা করে শ্যাম, রাই শুধু...
কাহিনিতে একটা বোঁচা ছেলে এসে বসেছে। আমি তার নাক লম্বা করার চেষ্টায় রয়েছি। চেষ্টা করেই চলেছি,চেষ্টা। সারারাত চেষ্টা চললো।একটুও সফল হই নি! আকাশে তারারা ফুটলো। জীবন জীবনের চেয়ে বেশি ছুটলো। প্রেম প্রেমের চেয়ে বেশি। সকাল হল।আমি বিদায় নেবো এবার। বোঁচা কাঁদছে। আমি এবার তাকে বললাম,কেঁদো না,কিছু সীমা মানুষের থাকেই। এই যেমন আমার।তোমায় কিছুতেই প্রেমিক ভাবতে পারিনি। আসলে আমরা সবাই বোঁচা।শরীরের...
নিজের শর্তে কলার তুলে বাঁচার মধ্যে একটা অদৃশ্য ডুয়েল থাকে পঁয়তাল্লিশ ডিগ্রির গনগনে খিদে নিয়ে কুড়িতলার হাসিখুশি নির্মাণ করে যারা তারাও তো জীবনকে দুয়ো দেয় আমি তো স্বপ্নের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে ব্যাস সূর্যকে চাঁদ ধরে নিচ্ছি একুশের চন্দ্রদোষ রাশিচক্র বরাবর সব অঙ্ক ঘেঁটে দেয় ওহে হাইহিল মেবলিন দুহিতা পকেটে হিমালয় নিয়ে জন্মানো তোমার দিব্বি দু-চোখে লোডশেডিং হলে আমিও মগ্ন মৈনাক দুপুর...
হাসপাতালের ডিউটি সেরে যে ডাক্তার নিজের চেম্বারে বিনে পয়সায় রোগী দেখে ওষুধ কোম্পানি থেকে পাওয়া স্যাম্পেল দেয় দুস্থ রোগীকে আমি তাকে স্যালুট করি। গ্রামীণ হেলথ সেন্টারের যে ডাক্তার তার ডাক্তার সুলভ ভ্যানিটি বাদ দিয়ে তার ডাক্তার সুলভ গ্র‍্যাভিটিকে তোয়াক্কা না করে ইনফ্রাস্টাকচারের বাহানা না দিয়ে উন্নত যন্ত্রপাতি ও প্রযুক্তির দোহাই না দেখিয়ে বাবলা গাছে স্যালাইন ঝুলিয়ে চিকিৎসা করে আমি তাকে...
ফিরে আসা মানে পুরোপুরি আসা নয় একবার চলে যাওয়া মানে যেতে থাকা চোখে রাখা থাকে অশ্রুর সঞ্চয় জেনো, কিছু কিছু নদীদেরও আছে শাখা কেন যে অতল... কেন যে শ্রাবণমাস... এত স্রোত, এত সন্দেহ, চোরাবালি ভালোবাসা মানে হৃদয়ের সন্ত্রাস অক্ষরে ব্যথা অনুবাদ করে গালিব খুন হয়ে যাওয়া ছায়াটার পাশে তবু আলগোছে পড়ে থাকে শরীরের ঋণ প্রেমিকের পায়ে মাথা নত কোরো,...
ব্যর্থতা বড়র দায়, শিশু কি কখনও ব্যর্থ হয় হামাগুড়ি দিতে দিতে উঠে দাঁড়ানোর চেষ্টা সেও এক এভারেস্ট জয় আমি সেই জয়ের পতাকা কুরুক্ষেত্রে নিয়ে গেলে মাটি থেকে উঠে আসে চাকা যুবতী মায়ের স্তনে কানীন পুত্রের জিভ বলে ওঠে,শেষ নয়,যুদ্ধ শেষ নয়।
দু পাত্র ঘিয়ের মধ্যে ঢেলেছো আগুন, দাউদাউ ফূর্তি হলো রাত থেকে ভোর, হোমে কিংবা যজ্ঞে ভেবে তুমি হেসে খুন; ভোরবেলা বাগানে ঢোকে দুই ফুলচোর! হাতের ছোঁয়ায় তারা ভরে তোলে সাজি, তুমি দেখে নিদ্রা যাও, আমি গাঁথি মালা, বিগ্রহ কালো রঙের এবং মেজাজি, ঘিয়ের শিশির পাশে নৈবেদ্যর থালা৷ ঘুম ভেঙে হঠাৎ তুমি হাত দিলে ওটায়, আগুনও দাউদাউ জ্বলে ঘিয়ের...
বিনোদিনী ১ এ চাওয়া আমার আসতনা যদি আমাদের প্রেমটা পূর্ণতা পেত। না পাওয়ার একটা মায়া আছে আলাদা, যেটা কাটানো কঠিন। এরকম একটা বৃষ্টির সন্ধেবেলার জন্যে যেগুলো তোলা থাকে... ২ আমাদের কোনোদিন দেখা হবেনা একান্তে। কিন্তু যদি হতো ! ভাবতে ভাবতে মাথার ক্লিপটা আমি খুলে চুলটা উড়িয়ে দিলাম হাওয়ায়। আমরা একসাথে ভিজতাম না, ভিজলে...
ছোটদের ছবি ওর ছোটবেলাকার কোনও ছবি নেই ছোটবেলা নেই? না না, ছবি নেই ছোটবেলাটা কি ছবির মতো নয়? সে আর ক'জনেরই বা হয়! তা বলে ছবি থাকবে না? হয়তো ক্যামেরা ছিল না সেই সব দিনে কটা বাড়ি ছবি তুলত ক্যামেরা কিনে? স্কুল নেই? বিয়ে বাড়ি? আত্মীয়স্বজন? পুজো বা জন্মদিন? খাওয়া? আয়োজন? বান্ধববর্জিত নাকি! ছিল না এসবের প্রয়োজন? প্রয়োজন না থেকে কারও পারে! হয়তো...