উত্তম চৌধুরী (Uttam Chowdhury) জন্ম: ১৯৬২। ইংরেজি ভাষা-সাহিত্যে স্নাতকোত্তর,বি এড। প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ: ২১টি। উল্লেখযোগ্য: শব্দবাহক, সনেট আটচল্লিশ, করতালি ধরে রাখবেন, চূর্ণ কবিতারা প্রভৃতি। পুরস্কার প্রাপ্তি: বিনয় পদক, ত্রিবৃত্ত, চিকরাশি, মন্দাক্রান্তা প্রভৃতি। টুকরো টুকরো প্রকৃত আলোর কাছে প্রস্তাবিত দিন সাঁকোর ডামি নিয়ে সড়ক পেরিয়ে যায়। ডিএমইউ ট্রেনের মতো দু'মুখো চিন্তায় ভরে উঠছে যাত্রাপথ, গন্তব্য আর গতিশীল...
যেখানে সেখানে মরব না আমি। যেমন তেমন করেও নয়। অনেক আর্তি, অনেক কাতর ভিক্ষা, বহু আনত জ্যোৎস্না মাড়িয়ে, এতৎকালের জমানো সব পুত্তলিকাপ্রবাহ; দু হাতের নখে ছিঁড়ে ছিঁড়ে ফেলব শ্মশানচারী শৃগালের মত। যত পলাতক পরীদের দল, আর রক্ষে থাকবে না হাহাকারে। যত আমন্ত্রণ, যত নিহত শিশু পঙ্গপাল সব সব ছত্রভঙ্গ হবে - দানব হুঙ্কারে। হে ক্ষত্রদেবতা,...
সন্দীপন চক্রবর্তী (Sandipan Chakrabarty) অবৈধ স্রোত কুর্তি গায়ে ফূর্তি এলো নেচে যদি ফিরতে পারি বেঁচে এটুক লিখে রাখবো-- তোমায় ভালোবেসেছিলাম খেয়াল হতেই হাজার ভয়ে নিজেই নিজের টিপে ধরছি গলা চোখের পাতা শুকনো নদী হঠাৎ রজস্বলা ঝাঁপাতে গিয়ে তুমি থমকে গেলে; বুঝলে কিছু ঘটেছে গোলমেলে কথা ছাড়াই বসলে এসে পাশে হাত ডোবালে স্রোতে-- আঙুল তোমার ছন্দ পেলেই নাচে হাত তুললে স্মৃতির ভিতর থোকায় থোকায় অপারগতা... রক্ত লেগে আছে হিংস্র মানুষ মানুষের মাংস প্রকাশ্যে...
তখনও তো ওরা কেউ শরীর বোঝেনি প্রেমের গন্ধ ছিল টিউশন জুড়ে এলোমেলো চুল তাতে লাল নীল গার্ডার সপ্তাহে তিনদিন মন ফুরফুরে। ওরা কেউ চেনে না কি, আদরের মায়া শুধু বোঝে কালো শার্ট, নীল চুড়িদারে একটুও হাত যদি লেগে যায় হাতে দিনটা দিব্যি কাটে নচিকেতা সুরে। এইভাবে ফেলে এসে সময়ের ক্ষত হঠাৎ বজ্রপাত, গড়িয়ার মোড়ে অটোর লাইনে জ্যাম, মেঘ করে...
কাবেরী নদীর তীরে আমি তাকে পাইলাম ছোট শীর্ণ গল্পগুলি, তাকে চাইলাম
রোজ রোজ ভুলে যেতে চাই তবুও সেই অবাধ্য পিছুটান, প্রতিদিনের আশ্বাসে হারিয়ে ফেলেছি নিজস্বতা, স্তূপীকৃত জঞ্জাল থেকে তুলে নিয়ে ছিলাম পরম সমাদরে, গঙ্গাজলে ধুইয়ে দিয়েছিলাম গা, সর্বাঙ্গে ছড়িয়ে দিয়েছিলাম বাদশাহী আতর। লুডো খেলায় দানটা চেলে ছিলাম প্রথম থেকেই ভুল। কখনো কখনো তিন ছক্কা ও তোমাকে নিরাশ করতে পারে, সামান্য একটা পুঁট জিতে নেয় জীবনের বাজী। কেউ খুশি তোষামোদে, কেউবা আভিজাত্যে...
কবিতা লিখে খুব বেশি হাসিখুশি থাকা সম্ভব নয় কবিতার মধ্যে এক ধরণের বিপন্নতাবোধ আছে হিংস্র জন্তু যেমন আগুনকে ভয় পায় তেমনি সুখী মানুষ কবিতাকে এড়িয়ে চলে কবিতাগ্রস্ত লোকেদের ভর হয় ভূতে পাওয়ার মত তারা আছাড়ি পিছাড়ি লেখে কল্পনা করে চরমতম অসুখের কবিতার মধ্যে যে শোক যে আঘাত যে মাথাব্যথা সেসব লিখে লিখে কত কবির যে ঘর সংসার ভেসে গ্যাছে সে খেয়াল তাঁদেরই...
ব্যর্থতা বড়র দায়, শিশু কি কখনও ব্যর্থ হয় হামাগুড়ি দিতে দিতে উঠে দাঁড়ানোর চেষ্টা সেও এক এভারেস্ট জয় আমি সেই জয়ের পতাকা কুরুক্ষেত্রে নিয়ে গেলে মাটি থেকে উঠে আসে চাকা যুবতী মায়ের স্তনে কানীন পুত্রের জিভ বলে ওঠে,শেষ নয়,যুদ্ধ শেষ নয়।
সেতু নদীটার নাম টুংটুং এ নাম তুমি দিয়েছিলে। লোকাল কোন নামতো নিশ্চিত আছে অথবা ভৌগোলিক যা ইচ্ছে হোক এ নদীর নাম টুংটুং। সালটা মনে নেই। পুজোর একটু আগে পরিকল্পনাহীন পৌঁছে গেছিলাম পাহাড় দেখব বলে। নদীতীর ছুঁয়ে আছি চার হাত দিয়ে নদীজল আমাদের উত্তরমাঠের বিপিনকাকা,পেশায় বাউল, বলেছিল, নদীজলে পা দিও না মেয়েমানুষের হৃদয়ের মতো নদী ব্যাথা পায় তাই দুজনে ছুঁয়ে আছি জল...
ভেবেছিলে ওই পারে শালবন আছে? দীর্ঘ আর ঋজু। তারা কথা বলবে চোখে চোখ রেখে ওই দিকে সুশীতল হাওয়া বয়, নক্ষত্রের ভিড় তোমার নিষ্পত্র শিরে আঁকা হবে জ্যোতির-বলয়? এপার মলিন বড়। আলোহীন রোগা ভালবাসা মাঝারি মাপের, তাই মিহি অজুহাতে ছিঁড়ে ফেলে স্নেহ-রজ্জু, গা থেকে খসিয়ে ফেলে প্রত্নপরিচয় হেঁটে যাচ্ছ ওই পারে, যাও... ওপারে এখন একা, দীর্ঘতর ছায়া পড়ে...
সবর্না চট্টোপাধ্যায়প্রকাশিত বই ‘চারদেওয়ালি চুপকথারা’।বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায়, দৈনিক এবং ওয়েব ম্যাগাজিনে লেখালিখি।প্রবন্ধ লেখেন বিভিন্ন বিষয়ে।কিশোর সাহিত্যে আগ্রহ রয়েছে।দেশলাই১.পলকা টোকায় ভেঙে গেল জলের পাঁচিল…দুটো পা বালির ভেতর।পাড় ভাঙছে হুড়মুড় করে...যে চোখ স্তব্ধতায়, অস্থির…আবার একবার সতীদাহ। গভীর খাদে একসঙ্গে ঝাঁপ…২.কত পথ হেঁটেছে একা সময়। কেঁদেছে আড়াল!ক্ষয়ে গেছে হাড়। মৃত শব্দের যন্ত্রণায় কাঁথা...
সৌমাভ জন্ম পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুকে। বিশ্বভারতী, শান্তিনিকেতন থেকে এম ফিলের পর দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি সাহিত্যে গবেষণারত। প্রকাশিত কবিতার বই 'যতটা না ছিলে সম্পর্কে', 'জল, জানালা ও জন্নত'। দিল্লি ২০২০ ভারতবর্ষ কোন দিকে (২৫ ফেব্রুয়ারি, সকাল ১১টা) আজাদ মার্কেট, আইস ফ্যাক্টরি পেরিয়ে ডানদিকে মালকাগঞ্জ ঢোকার আগেই সবাইকে বাস থেকে নামিয়ে দেওয়া হল, ‘উস তরফ নেহি যায়েগা ...জলদি...
বিকেল-আকাশে ‘দৃষ্টিপ্রদীপ ’ উপন্যাসের আশ্চর্য মেঘেরা শেয়ালদাস্টেশনের থেকে বনগাঁলোকাল ছেড়ে দিল … ভিড় কামরায় কে আমি , কে সীতা, কে যে  দাদা , কে বা পাগল -হয়ে -যাওয়া বাবা আর ছেঁড়া -শাড়ি- পরা মা আমার ? ট্রেনের হু হু - হু হু- হু হু - জানলা গুমা- বিড়া- হাবড়ার বিড়িটানা চাঁদ  হারমোনিয়াম বাজিয়ে রসের ভিয়েন...
মতলবটা তোমার বুঝে ফেলেছি চাঁদবদন হাড়-পাঁজর আছে ক'খান তা-ও চিবিয়ে খাবে হেঁশেলে তো আগেই ঢুকে পড়েছো বাছাধন ভাতের হাঁড়িটাকেই আখেরে কেড়ে নিয়ে যাবে। জানি গো কত্তা, ভাতে মারার কৌশল তোমাদের গাওনা গাওয়ার আগে করো কত্ত ধানাইপানাই! গরিবগুর্বো, ভাতের হাঁড়িটাই সম্বল আমাদের তারচে' বেশি চাওয়া পাওয়ার অধিকার তো নাই। প্রেম বিলাতে এসেছো, সেজে নদেরই নিমাই প্রেমের আগুনে পুড়ে যদি...
জাহিদ সোহাগমানুষএ-ও এক বিশ্বাস, যারা আগুনের অবশেষ দেখে ছাই; আমি এর উল্টো দেখি। যেমন, মানুষ স্থির, গাছ ভ্রমণশীল : রক্তপাত ও আদর্শ তাদের দরকার।মানুষের কিছু নেই বুক ফাটিয়ে সোনালু জন্ম দেয়া ছাড়া, অন্য সময়ে লাল। যেমন প্রেমের চেয়ে পরিখার কুমির সহনীয়।  সিরিয়া সারাদিন শূন্যে তাকিয়েছিলাম। মনে হলো রুটিবৃষ্টি হবে শিগগিরই। রাত মানে...
সমরেশ মুখোপাধ্যায়জন্ম সত্তর দশকের প্রথমার্ধে। শিক্ষা ইংরেজি সাহিত্যে এম এ। প্রথম লেখা প্রকাশিত হয় শুকতারা পত্রিকায়। প্রথম কাব্যগ্রন্থ শামুকজন্ম। অন্যান্য কাব্যগ্রন্থ -বিষণ্ণ দাবার কোর্ট, তোমার ইঙ্গিত বুঝি, পুর্বপুরুষের ছায়া, নক্ষত্রবাড়ি, খাদের কিনারে একা। ২০১৫ সালে বনলতা পুরস্কার, ২০১৬ সালে অমিতেশ মাইতি স্মৃতি পুরস্কার, ২০১৭ সালে নতুন কৃত্তিবাস পুরস্কার পেয়েছেন।দীপাবলির...
দেবাশিস সাহা (Debasish Saha), থাকেন কৃষ্ণনগরে। প্রকাশিত একমাত্র কবিতার বই 'সর্বভূতেষু'। পেশায় শিক্ষক। একা আর নির্জনবাস আমাদের দু'জনা মিলে সুন্দর নির্জনবাস একাকী পিঙ্গলরঙা দোআঁশের ঢিলেমি মাটির শিকড়ে বাড়ে মৃত ফরাসের অবকাশ সবই তো দিয়েছ মুছে হে ঈশ্বর হে অন্তর্যামী! পরজীবী মিথোজীবী অথবা পদস্থল জোড়া ভেসে গেছে মহাপ্রলয়ে নোয়ার নৌকায় সপ্ত ঋষির ন্যায় বেঁচে থাকে যতটুকু প্রাণভোমরা কালোরক্ত বয়ে...
সূর্য, ঘোড়া বরং এবার আলাদা রাখি সূর্য, ঘোড়ার কথা। মাটির যে ঢাল তেষ্টা চেনে, আইঢাই খুব– মরতে গেল জলের কাছে। সূর্য তখন তেষ্টা দ্যাখে, আচমনে সাজিয়ে রাখে খুরের দায়ভার। ছুটছে আড়াল, ভাসান প্রখর, ডুবছে কাঁপন, মন্থনবোধ উঠছে অধীর– দরদাম তার খোলস শুধুই আনকোরা দাগ রেসের আওয়াজ– সাতটা শরীর স্রোতের ফাঁকে রশ্মি চাটে, হিসেব রাখে, কখন অনুশাসন ভুলে...
কত ছদ্মবেশ জানে তোমার প্রতিভা অহংকারে নষ্ট এক নিষেধের মতো নেশায় আকুল হই। কত বিপ্রতীপে ঘাই মারে মাছের স্বভাবে মন ডুবে ডুবে জল খাওয়া চরিত্রের পেটে এত বুদ্ধি ধরো তবু এত রাগ সামলাও কী করে! তোমাকে নেব না ভেবে টেনে আনি ছোঁব না আঘাত তবু দাও কলতলায় যেভাবে বালিশ পেতে ধুয়ে দিলে মুখ্যুসুখ্যু ভ্রমে অন্ধ চোখের...
বেশ কিছু কথা দিয়ে না রাখা ফুল দিতে অপারগ যে শাখা হাত ধরে-থাকা সেই বোবা হাত থাকতে চেয়েও শেষে না থাকা নেশাতুর, বেলাগাম সে রাতে আদুরে ওমের লোভ পোহাতে সোহাগের চৌকাঠ লঙ্ঘন বিবেকের বেমক্কা জেহাদে শীতঘুমে কুয়াশারা খেলাপি ভুলে থাকা মানুষের থেরাপি বসন্তে বিচ্ছেদ বেসোয়াদ অপমান, বোকাদের সেরা ফি! সময়কে হতে দাও নেশাড়ু সংসারে সবাই তো দাবাড়ু শেষ কথা শেষ চাল : কিস্তি মৌত...