Home বাংলা কবিতা

বাংলা কবিতা

দেবাশিস সাহা (Debasish Saha), থাকেন কৃষ্ণনগরে। প্রকাশিত একমাত্র কবিতার বই 'সর্বভূতেষু'। পেশায় শিক্ষক। একা আর নির্জনবাস আমাদের দু'জনা মিলে সুন্দর নির্জনবাস একাকী পিঙ্গলরঙা দোআঁশের ঢিলেমি মাটির শিকড়ে বাড়ে মৃত ফরাসের অবকাশ সবই তো দিয়েছ মুছে হে ঈশ্বর হে অন্তর্যামী! পরজীবী মিথোজীবী অথবা পদস্থল জোড়া ভেসে গেছে মহাপ্রলয়ে নোয়ার নৌকায় সপ্ত ঋষির ন্যায় বেঁচে থাকে যতটুকু প্রাণভোমরা কালোরক্ত বয়ে...
কাহিনিতে একটা বোঁচা ছেলে এসে বসেছে। আমি তার নাক লম্বা করার চেষ্টায় রয়েছি। চেষ্টা করেই চলেছি,চেষ্টা। সারারাত চেষ্টা চললো।একটুও সফল হই নি! আকাশে তারারা ফুটলো। জীবন জীবনের চেয়ে বেশি ছুটলো। প্রেম প্রেমের চেয়ে বেশি। সকাল হল।আমি বিদায় নেবো এবার। বোঁচা কাঁদছে। আমি এবার তাকে বললাম,কেঁদো না,কিছু সীমা মানুষের থাকেই। এই যেমন আমার।তোমায় কিছুতেই প্রেমিক ভাবতে পারিনি। আসলে আমরা সবাই বোঁচা।শরীরের...
এখানে অন্যমনস্কতা নিয়ে কথা বলা হচ্ছে আমার ভিতর এক ছোপ অন্ধকার এসে পড়েছে মেঝেতে। আরও অন্য ঋতু অন্যতর বেলা অব্দি বিছিয়ে আছে অবসান। অবসানের মধ্যে দানীভর্তি ফুল। পাতাগুলি আমায় বললো, যে কাতরতা সাদার ভিতর থেকে সুগন্ধ তুলে আনে – তা তোমার গো সবটাই তোমার আমার বুকের মধ্যে ঢুলে আসে প্রকাণ্ড এক চোখ,...
ঝড়ের পূর্বাভাস পেলে শুরু হয় তার গতিপথ নিয়ে চর্চা গভীর সমুদ্রে মৎস্যজীবীরা ডিঙি-নৌকার অভিমুখ ঘুরিয়ে নেয় উপকূলের দিকে অন্ধকারে ফুঁসে ওঠা সমুদ্রের দিকে চেয়ে রাত জেগে বসে থাকে তাদের গৃহিণীরা আর বিড়বিড় করে জপতে থাকে দুর্গা নাম ঝড়ের পূর্বাভাস পেলে দায়িত্বশীল প্রশাসন মাইকে নির্দেশ দেন উপকূল খালি করার ঝড়ের পূর্বাভাসে নিরীহ পাখিরা অসহায় নাগরিকের মতো পালকের নীচে ঠোঁট গুঁজে দিয়ে অপেক্ষা করে সর্বনাশের তারপর ঝড় থামে যখন সকলে মাথা...
শুভ্রাশ্রী মাইতি (Subhrashree Maiti) শিক্ষিকা। থাকেন পূর্ব মেদিনীপুরে। কাব্যগ্রন্থ-- মনজানালার আকাশ, সুবর্ণসুতোর সম্পর্ক, নিমফুলের নূপুর, মগ্ন জলের মুহূর্তেরা, হারিয়ে যাওয়া নাকছাবিটি। সৃজন মা রুটি বেলে আশ্চর্য কায়দায় বেলন ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে এক একটা নিখুঁত, নিটোল পূর্ণিমা চাঁদের বৃত্ত; গুঁড়ো গুঁড়ো জ্যোৎস্না আটার স্বপ্ন, রুটির গায়ে তেমন রুটি বেলতে পারিনি আমি কোনদিনও; মায়ের রুটি বেলার দিকে তাকিয়ে থাকি আর ভাবি পৃথিবী গড়ে ওঠে...
শেখর বন্দ্যোপাধ্যায় জন্ম জলপাইগুড়ি শহরে। প্রকাশিত কবিতাবই আজান সংগ্রহের ঘর, ঘুম কারখানা, জলবিষুব জংশন, যাব রাঙালিবাজনা। প্রকাশিত উপন্যাস বর্ষাদুয়ার, গল্প সংগ্রহ গল্প। নয় রকমের শীত ডুয়ার্সের জঙ্গলে নয় রকমের শীত আমি জানি; ঘন শীতের রাতে কুকুর ডাকে ভুটান পাহাড়ে, যেন প্রথম শব্দ ভুমিষ্ঠ হল এই মাঘের রাতে; তারপর হামাগুড়ি দিয়ে রাত চলে আসে আমার কম্বলে;...
রিয়া চক্রবর্তীজন্ম ও বেড়ে ওঠা কলকাতায়। দুটি কবিতার বই প্রকাশ পেয়েছে ‘নিয়ন আলোর দৃশ্যরা’ এবং ‘রাই পদাবলী’। দক্ষিণ কলকাতার একটি কলেজে অধ্যাপনা করেন।আলোর গল্পআমার পাঁজর থেকে একটা একটা করে খুলে নিচ্ছ হাড়,আর বাঁধ ভেঙে ছড়িয়ে পড়ছে আমার বুক ভরা স্বপ্নেরা...দু হাতের আঙুল থেঁতলে দিচ্ছো,যাতে না কোনও দিন স্ফুলিঙ্গরা দাবানল...
ছোটনাগপুর থেকে পথ ফিরে এলে সমতলে সমবেগে যেতে যেতে মায়া ধাক্কা দেয় উঁচু আর নিচু লাগোয়া লাগোয়া ছোটাছুটি মন নেমে আসে মন উঠে যায় হুটোপুটি সার ধীরে ধীরে গতি কমে শিথিলতা আসে চোখেমুখে চড়া রোদ, খুব শীত এইসব শীর্ষে যাওয়ার মতন উত্তেজনা থাকে না কোথাও নদী খাল ঝরনার স্ফূলিঙ্গ গায়ে এসে লাগে হাত-পা-শরীর কেঁপে ওঠে আচমকাই মনে পড়ে...
না - ই বা থাকলো শরীর,আমার ভাবনাছবি ইতস্তত                          রইলো পড়ে ঝর্ণা,নদী,গ্রামের স্নিগ্ধ দীঘির মতন ঢেউ তো ছিলোই লোকায়ত,অদৃশ্য,ভূমধ্যসাগর                                    ভ্রু - সন্ধিতে...
জীবনের গান   প্রত্যাখ্যানের মধ্যে সমস্ত আশ্চর্য রাস্তাগুলো লুকিয়ে আছে পৃথিবীর বুকে জর্জ বিশ্বাসের গানকে জড়িয়ে ধরে দীর্ঘ করছে আয়ু রেখা ছেঁড়াতার বেঁধে ফেলতেও চান কেউ কেউ কিন্তু, ওই যে মন আর মস্তিষ্কের 'ম' আলাদা তাই, যাকে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসো তাকে বলো না কখনও, 'ভালোবাসি!'     অভিসম্পাত শব্দের সঙ্গে বহুকাল সম্পর্ক না থাকলে দূরত্ব বাড়ে ভেতর ভেতর ভয় তাড়া করে যদি কোনও...
আজ এই অসমাপ্ত রাতের আধারে জোনাকি ও তৃণদল, কুয়াশা ও গানের লিরিক থেকে সময়ের বেশকিছু আগে জন্ম নিল সবেমাত্র রক্তমাখা ক্ষীণদেহী মেয়ে এখন দীর্ঘ মাস রেখে দেবে কৃত্রিম উষ্ণতার ঘরে ছোটো ছোটো পাঁজরের ওপর মসৃণ ত্বকের আবরণ ক্ষুদ্র হাত নল দিয়ে ঢাকা হৃৎপিণ্ড, লাবডুব, দূর থেকে স্পষ্ট বোঝা যায় অধীর স্পর্শের গায়ে লীন অপেক্ষাগুলোকে আজ মুড়ে রাখছে পুতুলবালিশে উষ্ণতার ঘর...
সৈকত ঘোষরূপকথা নয়ঘটনাটা এভাবে ব্যাখ্যা করা যেতে পারে,পৃথিবীর সব সম্পর্ক একটা জায়গায় এসে শেষ হয়নিজেকে গোপন করলেঅনুশোচনা বাড়ে মাত্রঘটনাটা এভাবে ব্যাখ্যা করা যেতে পারেজোয়ারের পর যেমন ভাঁটা আসেতেমনি তোমার লাবন্য খুঁজিদীর্ঘ বৃষ্টির পরসিনেমা থেকে উঠে আসা চরিত্রগুলো ঘুরপাক খায়আমি জীবিত,মৃত্যু লিখি ...জরাসন্ধের বিছানাভূ-ত্বকের নীচে ক্রমাগত বিস্তার পাচ্ছে অধিকারবোধআমাদের জামাগুলো...
নিজের শর্তে কলার তুলে বাঁচার মধ্যে একটা অদৃশ্য ডুয়েল থাকে পঁয়তাল্লিশ ডিগ্রির গনগনে খিদে নিয়ে কুড়িতলার হাসিখুশি নির্মাণ করে যারা তারাও তো জীবনকে দুয়ো দেয় আমি তো স্বপ্নের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে ব্যাস সূর্যকে চাঁদ ধরে নিচ্ছি একুশের চন্দ্রদোষ রাশিচক্র বরাবর সব অঙ্ক ঘেঁটে দেয় ওহে হাইহিল মেবলিন দুহিতা পকেটে হিমালয় নিয়ে জন্মানো তোমার দিব্বি দু-চোখে লোডশেডিং হলে আমিও মগ্ন মৈনাক দুপুর...
শরতের হাওয়া বইতে শুরু করলেই কাগজে কাগজে তার চিহ্ন ফুটে ওঠে এ'দুয়ের মাঝে কোন মিল আছে বুঝি! হয়তবা আছে, ভোরের শিউলি ফোটে মায়ের প্রতিমা তৈরি থেকে শুরু করে দীপাবলি পর্যন্ত ছবি তৈরি হয়ে যায় কাগজপত্রে, পুজো সংখ্যা কত কত কবিতার ঝুরি, শব্দের বন্যা বয়ে যায়, কে পড়ে? কারা? নাকি পড়ে থাকে টেবিলে? আমিত্বের বিজ্ঞাপন সংখ্যা গুনে নেয় কটা হল! কেউ কাউকে কি মনে...
ভারভারা রাও | জন্ম ১৯৪০ সালের ৩ নভেম্বর ভারভারা রাও একজন সমাজকর্মী, প্রখ্যাত কবি, সাংবাদিক, সাহিত্য সমালোচক এবং সুবক্তা। ১৯৪০ সালের ৩ নভেম্বর তেলেঙ্গানায় তাঁর জন্ম। তাঁকে তেলেগু সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সমালোচক বলে মনে করা হয়। বিগত প্রায় ষাট বছর ধরে তিনি কবিতা লিখে চলেছেন। এখানে অনুদিত ‘মেধা’ কবিতাটি তাঁর অন্যতম...
কামাল চৌধুরী | জন্ম ১৯৫৭ বাংলা ভাষার অগ্রগণ্য কবি। তাঁর কয়েকটি বইয়ের নাম এই পথ এই কোলাহল, এই মেঘ বিদ্যুতে ভরা, রোদ বৃষ্টি অন্ত্যমিল, পান্থশালার ঘোড়া ইত্যাদি। ২০১২ সালে পেয়েছেন বাংলা একাডেমী পুরস্কার। বসবাস ঢাকায়। সরকারি চাকরি থেকে অবসর নিয়েছেন ২০১৭ সালে। একটি দাদাবাদী কবিতা ভেতরে ভেতরে দাদা, তুমি দাদা ভেতরে ভেতরে পরাবাস্তব ইটা...
পরাজিত হয়েছেন। এর মানে প্রস্তুতি নিয়েছিলেন। দক্ষতাও অর্জন করেছিলেন। নিজেকে তীক্ষ্ণ কিরণসম্পন্ন করে তুলে নেমেছিলেন যুদ্ধে। লড়েছিলেন। সর্বস্ব দিয়ে লড়েছিলেন। এর পর এল পরাজয়। বিপক্ষ শক্তিশালী বেশি অথবা ভাগ্যের কোনো দুর্ভেদ্য চলন। আপনি পরাজিত হলেন মানে লড়ে হেরেছেন। এ তো বীরত্বের কথা। আমি এমন অনেককে জানি যাঁরা পরাজিত হবার ভয়ে কোনোদিন যুদ্ধক্ষেত্রেই নামেন...
একটা সাদা-কালো ছবিতে আমি সযত্নে রেখে দিয়েছি রক্তকরবী! যদিও আমার কল্পনা কোনো অবয়বে ধরতে পারেনি সে ফুল! রঙ দিতে পেরেছে কেবল...লাল, খুব গাঢ় সমস্ত ছবিটায় ওই রঙটুুকু জানান দিয়ে বলবে ঠোঁটে অমন করে লিপস্টিক আঁকার কারণ শরীর থেকে শুকিয়ে যাবার আগে হেমন্তের শিশির ওষ্ঠে ধারণ করো... একটা কোনো ধ্রুব ইশারা তো চাই তারই জন্য এমন রক্তকরবী। তুমি নেবে? কবিরা শুনেছি ফেরায়...
টুইটারে ২৩ লক্ষ ভিউ আরও বেড়ে যাবে, নেতাদের তেজী হুঙ্কার, ক্ষতিপূরণের চেক পৌঁছে গিয়েছে। যার যায়, সে-ই জানে, বাকিরা মাংস ভাত, বাকিরা মাইক, বাকিরা মন্ত্রী আর সেনাপতি হয়— যারা যারা হাঁটছিল, যারা চোখ রাখছিল, দুই মেয়ে, খোলা স্তন, তার নীচে ইনিবিনি, উল্লাস, উল্লাস! যেন ছয়, ফের ধোনি, ভারত না ইন্ডিয়া, শ্রীরাম না ডাকাতিয়া, মেয়েরাই জানে। ধানখেতে যেইখানে, রক্তের ফোঁটা ঝরে, সেইখানে পুরুষেরা নাচছে ভাসানে।...
সমরেশ মুখোপাধ্যায়জন্ম সত্তর দশকের প্রথমার্ধে। শিক্ষা ইংরেজি সাহিত্যে এম এ। প্রথম লেখা প্রকাশিত হয় শুকতারা পত্রিকায়। প্রথম কাব্যগ্রন্থ শামুকজন্ম। অন্যান্য কাব্যগ্রন্থ -বিষণ্ণ দাবার কোর্ট, তোমার ইঙ্গিত বুঝি, পুর্বপুরুষের ছায়া, নক্ষত্রবাড়ি, খাদের কিনারে একা। ২০১৫ সালে বনলতা পুরস্কার, ২০১৬ সালে অমিতেশ মাইতি স্মৃতি পুরস্কার, ২০১৭ সালে নতুন কৃত্তিবাস পুরস্কার পেয়েছেন।দীপাবলির...