Home বাংলা কবিতা

বাংলা কবিতা

আমি আজ বড়ই একা প্রকৃতির কোলে মাথা রেখে শুয়ে আছি ফুলের ঘ্রাণে মাতাল করেছে আমার মনন বাতাস এসে উড়িয়ে নিয়ে যাচ্ছে বুকের ওড়না তারপর? এক কাপ চা খেয়ে যা শান্তি পাই তোমাদের আপ্যায়নে তা পাই না হাজারো অভিযোগ মেনে নিয়েও যখন ভালোবাসি ভুলে যাই পূর্বের সকল কথোপকথন তারপর? কৃষ্ণচূড়া ফুল দিয়ে পথ ঢেকেছি, হাঁটছি না দাঁড়িয়ে আছি, অপেক্ষায় আছি ঢেউ এসে...
তোমায় দিলাম পদ্মনাভ ভোরের আকুল-বিকুল শিউলি ফুলের ঝরা, তোমায় দিলাম অন্তরঙ্গ ঘোরের রক্ষাকবচ। পাখির রাতচরা দেখাক তোমায় তাদের বুকের ক্ষত গোলাপকাঁটায়,যে যন্ত্রণায় গানের গভীরতায় অরণ্যময় যত বৃষ্টি ঝরায় ছন্ন অভিমানে। তোমায় দিলাম মন খারাপের গলি, বিকেল বেলার মেঘলা প্রতিশ্রুতি, যখন তোমায় মনের কথা বলি বোঝো আমার সমগ্র বিচ্যুতি? ঢের দিয়েছ এতেই বোঝাই খাতা স্বভূমি আজ প্রাচীর দিয়ে ঘেরা তবুও ডাকো অবাধ্য কলকাতা! হৃদয় যখন...
আপেল, ছুরি, জলের পাত্র, না-খোলা খবরের কাগজ আরো কিছু অনাবশ্যক দৃশ্য আর আছো তুমি-নেই ফলের খোসা ছাড়ানোর দৃশ্যের মত— খুব সাবধানে, সন্তর্পণে চেঁছে নেওয়া ফলের অযথা মাংস যেন না ফলের খোসার সঙ্গে যায়… যে-তোমায় সমীচিন করে তুলেছে সে এই ছুরিবিদ্ধ ফলের গায়ে সকালের গমগমে রোদ  
আকাশ সংযত হয়ে নেমে এলো ছাদে অপার মহিমা দেখি ছড়িয়ে রয়েছে মহিমা শব্দের যত আলো তাও এসে এখানে ছড়ালো... শুধু ভাবি— জীবন কি ভরা শুধু বিষে সামনের ভেজা কার্নিশে কনুই নামিয়ে রেখে দূরান্তরে তাকিয়ে থাকার পর ভাবি এখানে বাবার পাশে মা-ও যেন আছে আকাশ রয়েছে তার কাছে৷
দীপ শেখর চক্রবর্তীছায়া সম্পর্কে যতটুকু আমি জানিকিছুদিন ছায়ার কথা না লেখা হলে আমি মোটেই ভালো থাকি না।অযথা লোকের সাথে খিটমিট করি,অথবা গুমরে গুমরে নিজেকে করে তুলি আস্ত একটা ব্যথার পুতুল।ছায়া, যে গা এলিয়ে শুয়ে থাকে, ব্যস্ত হয় না।চারপাশে কড়া রোদের জীবন যাকে দেখে ছিঃ ছিঃ করে-বলে,এতটাও নিশ্চিত থাকা ভালো...
সন্ধ্যা তারা পথে পথে জল দুরূহ বেদনা! পথে পথে বেজে যায় গান ক্ষমার মতন অদূরে গোলাপ ভাঙা পাপড়ির শোকে লেখাটি বিহ্বল! বিকেলে পথিক নামে সন্ধ্যার জটলা একা একা তারা উঠেছে আকাশে প্রেমিকার মতো। পুজো সেই লেখাটিকে নতুন পোশাক দেব ভাবি যার নাম, পাঠকের মুখে শুনি। প্রেমিক সে আসেনি এসেছে কুয়াশা বেড়াতে চোখের বাড়ি আমি তাই প্রহরী শুধুই আমার ছায়ার! শূন্যতা জানিল শুধু সে কিছুই জানিলনা! শুধু সুর বুকে নিয়ে গান কিছুটা থমকে ফের বেজে যায় সন্ধের মায়ায়... তুলনা নবীন...
ভেবেছিলে ওই পারে শালবন আছে? দীর্ঘ আর ঋজু। তারা কথা বলবে চোখে চোখ রেখে ওই দিকে সুশীতল হাওয়া বয়, নক্ষত্রের ভিড় তোমার নিষ্পত্র শিরে আঁকা হবে জ্যোতির-বলয়? এপার মলিন বড়। আলোহীন রোগা ভালবাসা মাঝারি মাপের, তাই মিহি অজুহাতে ছিঁড়ে ফেলে স্নেহ-রজ্জু, গা থেকে খসিয়ে ফেলে প্রত্নপরিচয় হেঁটে যাচ্ছ ওই পারে, যাও... ওপারে এখন একা, দীর্ঘতর ছায়া পড়ে...
এই দেখ মেয়ে, সামনে দেখ তাকিয়ে -- কি হ'লো, মিললো কথা ? এবার বল তবে বুকে হাত রেখে সত্যি কথা কবিতার সব কথা মিলে গেলো তো ! প্রথমটায় শুধুই করেছিলি অবিশ্বাস আর আমি, বলেছিলাম তো -- জাদু আছে জাদু, দেখিয়ে ছাড়বো দেখ তাকিয়ে, দরজা খুলে গেলো তো -- নে মেয়ে উঁকি দিয়ে দেখ ভিতরে কী সুন্দর ঘরটা দেখ, কতো...
সুব্রত দেবনাথ (Subrata Debnath) ফ্রেম একটি নির্দিষ্ট ফ্রেমে আমার চোখ বাঁধা ফ্রেমের বাইরে চোখ নিতে পারি না চেষ্টা করলে হয়তো পারতাম, কিন্তু সে চেষ্টায় ব্যর্থ । জন্ম থেকেই এই ফ্রেমে বন্দি আমার আর্টিস্ট এভাবেই আমাকে গড়েছে । যতবার ফ্রেমের বাইরে তাকাবার চেষ্টা করেছি পাশের ফ্রেম থেকে আওয়াজ এসেছে ধমকের সুরে ! আর সাহস হয়নি। দেখেছি ফ্রেমের বাইরে যারা তাকাবার দুঃসাহস...
সাম্যব্রত জোয়ারদারপেশায় সাংবাদিক। লেখালিখি শুরু নয়ের দশকে। বিজল্প পত্রিকার সম্পাদনা করেছেন। প্রথম বই ‘পাখিদ্বীপ জাদুওলা বন্ধুপদাবলী’। তিন বন্ধু একসঙ্গে। ছবি আঁকতে, ছবি তুলতে ভালোবসেন। প্রিয় বই: গীতবিতান।নির্বাচিত অংশের প্রতিধর্ষণ ও খুনের লেখা, মুখিয়ার পরগনা শালগাছ পাতা কুড়ানিরা, চুপচাপ চান্দ্রমাসে ঝরে গেছে। ক্যালেন্ডারে গোল চিহ্ন ঋতুস্রাব এলোমেলো শহরের পথ, খাদি...
ঝড়ের পূর্বাভাস পেলে শুরু হয় তার গতিপথ নিয়ে চর্চা গভীর সমুদ্রে মৎস্যজীবীরা ডিঙি-নৌকার অভিমুখ ঘুরিয়ে নেয় উপকূলের দিকে অন্ধকারে ফুঁসে ওঠা সমুদ্রের দিকে চেয়ে রাত জেগে বসে থাকে তাদের গৃহিণীরা আর বিড়বিড় করে জপতে থাকে দুর্গা নাম ঝড়ের পূর্বাভাস পেলে দায়িত্বশীল প্রশাসন মাইকে নির্দেশ দেন উপকূল খালি করার ঝড়ের পূর্বাভাসে নিরীহ পাখিরা অসহায় নাগরিকের মতো পালকের নীচে ঠোঁট গুঁজে দিয়ে অপেক্ষা করে সর্বনাশের তারপর ঝড় থামে যখন সকলে মাথা...
কোটি কোটি বার বলেছি দাপাতে দাপাতে বলেছি বিছানায় লাট খেতে খেতে বলেছি কাঁদতে কাঁদতে বলেছি গাছেদের পাখিদের দিব্যি খেয়ে বলেছি পাহাড়ের চূড়ায় উঠে বলেছি মাটিতে পিঁপড়ের উচ্চতায় নেমে এসে বলেছি চোখ থেকে যখন আগুন বেরিয়ে আসছে তখন বলেছি বলতে বলতে গলা চিরে গেছে শুধু বলব বলেই ঘুমাইনি দীর্ঘকাল বলার জন্যই আকুল হয়ে থেকেছি সর্বক্ষণ বলতে বলতে আগুন খেয়েছি স্বেচ্ছায় বলার ক্ষমতা আরও...
বুকের ভেতর জাহাজ ডুবেছে যত নীরবতা নিয়ে মরে গেছি বহুবার, আমার চোখেতে নালিশ ছিল না কোনো হেরে যাওয়াটুকু মৃত্যুরই দাবিদার। প্রশ্নতে ছিল অনেক চিহ্ন আঁকা ঘেমেছে চশমা কমেছে জলের দাম, চিরকুটে লেখা লোডশেডিং এর বুলি প্রেম ভালোবাসা ভাঙনেরই সৎ নাম, তাসের ভাগ্যে জোকার এসেছে হাতে জবাব ছিল না, হাসিতেই জাদুঘর কলব্রে-র থেকে নেমে আসে কোনো গাধা পিঠে বাঁধা ছিল আপোসকালীন...
আবির্ভাব ভট্টাচার্য জন্ম ১৯৯৩, বর্ধমান। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর। বর্তমানে সেখানেই গবেষণার সঙ্গে যুক্ত। কবিতার বই রয়েছে দু'টি। টুকরো টুকরো স্যানিটোরিয়াম ১ রক্তপাত হয় এখানে বিকেলবেলায় পশ্চিম আকাশে দেয়ালের গায়ে গায়ে বিয়োগের দাগ আত্মজৈবনিক ক্ষয় জেগে থাকে। ২ আমার পাশের বিছানায় যে ছেলেটি আছে প্রায় দেখি মধ্যরাতে জেগে বসে থাকে! আমাকে সে গোপনে বলেছে তার মন, ইতিহাসে নয় শিক্ষিকার ভ্রমর কাজলে!... ৩ ইস্কুল বিকেল মনে...
"অর্ধেক নগরী তুমি অর্ধেক কল্পনা" (পথে প্রবাসে) প্যারিসে সূর্যের আলো ক্রমশ সন্ধ্যার রঙে মেশে ফরাসি ভাষার মতো নরম, মধুর এই রাত... তোমার হাসিতে দেখি মোনালিসা হেসে ওঠে আজ ল্যুভর মিউজিয়াম --- ছবির দূরত্ব মুছে যায়! এদেশে চাঁদের আলো পূর্ণ মায়ায় মন ভোলে এখানে একলা মন বিদেশ ভ্রমণ করে চোখে এখন মধ্যরাত ---- ওখানে কি চাঁদ ওঠে? প্যারিসে কি বুদ্ধ পূর্ণিমা?
সন্দীপন চক্রবর্তী (Sandipan Chakrabarty) অবৈধ স্রোত কুর্তি গায়ে ফূর্তি এলো নেচে যদি ফিরতে পারি বেঁচে এটুক লিখে রাখবো-- তোমায় ভালোবেসেছিলাম খেয়াল হতেই হাজার ভয়ে নিজেই নিজের টিপে ধরছি গলা চোখের পাতা শুকনো নদী হঠাৎ রজস্বলা ঝাঁপাতে গিয়ে তুমি থমকে গেলে; বুঝলে কিছু ঘটেছে গোলমেলে কথা ছাড়াই বসলে এসে পাশে হাত ডোবালে স্রোতে-- আঙুল তোমার ছন্দ পেলেই নাচে হাত তুললে স্মৃতির ভিতর থোকায় থোকায় অপারগতা... রক্ত লেগে আছে হিংস্র মানুষ মানুষের মাংস প্রকাশ্যে...
বেবী সাউমূলত কবিতা ও প্রবন্ধ লেখেন। প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ বনঘাঘরা, ইউথেনেশিয়া, গান লেখে লালনদুহিতা, ছয় মহলা বাড়ি, একান্ন শরীরে ভাঙো। এছাড়াও পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ-পশ্চিম সীমান্ত অঞ্চলের এক লুপ্তপ্রায় লোকসঙ্গীত নিয়ে প্রকাশিত হয়েছে তাঁর গবেষণা গ্রন্থ- ‘কাঁদনাগীত: সংগ্রহ ও ইতিবৃত্ত।’ভোটঅবিশ্বাস ঘুরে ঘুরে আসে গোলচত্বরের পাশে বিপ্লবের দেহমাছি ওড়ে উৎসুক জনতা তারাক্ষোভ নেই, শান্তি নেইশুধু...
কত ছদ্মবেশ জানে তোমার প্রতিভা অহংকারে নষ্ট এক নিষেধের মতো নেশায় আকুল হই। কত বিপ্রতীপে ঘাই মারে মাছের স্বভাবে মন ডুবে ডুবে জল খাওয়া চরিত্রের পেটে এত বুদ্ধি ধরো তবু এত রাগ সামলাও কী করে! তোমাকে নেব না ভেবে টেনে আনি ছোঁব না আঘাত তবু দাও কলতলায় যেভাবে বালিশ পেতে ধুয়ে দিলে মুখ্যুসুখ্যু ভ্রমে অন্ধ চোখের...
জীবনের গান   প্রত্যাখ্যানের মধ্যে সমস্ত আশ্চর্য রাস্তাগুলো লুকিয়ে আছে পৃথিবীর বুকে জর্জ বিশ্বাসের গানকে জড়িয়ে ধরে দীর্ঘ করছে আয়ু রেখা ছেঁড়াতার বেঁধে ফেলতেও চান কেউ কেউ কিন্তু, ওই যে মন আর মস্তিষ্কের 'ম' আলাদা তাই, যাকে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসো তাকে বলো না কখনও, 'ভালোবাসি!'     অভিসম্পাত শব্দের সঙ্গে বহুকাল সম্পর্ক না থাকলে দূরত্ব বাড়ে ভেতর ভেতর ভয় তাড়া করে যদি কোনও...
যথেষ্ট ব্যথার দেনমোহর দিয়ে তোমার ঋণ চুকিয়েছি কি? কত অশ্রুর মুক্তো দানা গুনে গুনে বটুয়াতে ভরতে হয় খাজানা চুকিয়ে দিতে, বলো মহাকাল? তবুও পরোয়া নেই। তুমি বল। বলতে থাকো। হাঁকো নীলামের দস্তুর। আমি সব কর্জ, দায়, ঋণ পাই পাই চুকিয়ে দেব। আনা, দুই আনা, অর্থ, অনর্থের মূলে শুধে দেবো ধার। পাতো হাত। অঞ্জলিতে পান্না চুনি...