যথেষ্ট ব্যথার দেনমোহর দিয়ে তোমার ঋণ চুকিয়েছি কি?
কত অশ্রুর মুক্তো দানা গুনে গুনে বটুয়াতে ভরতে হয় খাজানা চুকিয়ে দিতে, বলো মহাকাল?
তবুও পরোয়া নেই। তুমি বল। বলতে থাকো। হাঁকো নীলামের দস্তুর।
আমি সব কর্জ, দায়, ঋণ পাই পাই চুকিয়ে দেব।
আনা, দুই আনা, অর্থ, অনর্থের মূলে
শুধে দেবো ধার।
পাতো হাত। অঞ্জলিতে পান্না চুনি...
শবের পাশে সবই কেমন অর্থহীন!
শেয়ার বাজার, নিউজ পেপার,সেফটিপিন...
শবের পাশে সবই ভীষণ অর্থহীন।
ভাতের হাঁড়ি,মাসকাবারি,মুড়ির টিন,
ফার্নিশ ফ্ল্যাট,দক্ষিণে রোদ, ফলস সিলিং
পিএনপিসি, ই জেড সি সি,ব্যস্ত দিন...
সেলেব রোয়াব,ফ্যান ফলোয়ারস,লেগ পুলিং...
শবের পাশে সবই বড়ো অর্থহীন।
প্রত্যাখ্যান,প্রতিশ্রুতি অন্তহীন...
উড়োচিঠি,মন্দ কথা, ফোনের রিং...
যুদ্ধবিমান,শান্তির গান, বা পুতিন...
শবের পাশে সবই ভীষণ অর্থহীন।
ঘুমিয়ে থাকা একখানা মুখ কী কঠিন!
এক পৃথিবী হিসেব-নিকেশ অর্থহীন...
শবের...
সুদীপ বসুজন্ম ১৯৬৭ -তে, কলকাতায়। প্রথম কবিতার বই 'অনিন্দিতা বাসস্টপ' প্রকাশ পায় ১৯৯৪ সালে। পরে ক্রমশ প্রকাশিত হয়েছে আরো আটটি মৌলিক কবিতার বই, একটি গদ্যগ্রন্থ ও একটি গল্পসংকলন। বিশ্বসাহিত্যের অনুবাদগ্রন্থ রয়েছে ছয়টি। সম্পাদনা করেছেন অমল চন্দের গল্পসংগ্রহ। সুদীপ 'আন্তর্জাতিক সম্পর্ক' বিষয়ে স্নাতকোত্তর।অকালমৃতার ডায়েরি থেকেমা বলত, ‘তোকে যোগিন্দর সিং-এর কাছে...
১
নীরবতার ভেতর লাল নীল সাদা
পতাকা মিছিল করে। ওড়ে । গান গায়
ঘাসে ঘাসে জলবিন্দু বৃষ্টি হয়ে ঝরে
কাচের ও পিঠে বসে থাকে
কোজাগরী চাঁদ...কে মোহ, কে ভালবাসা?
ধূলায় যে সব অন্ধকার !
২
আলুথালু বারন্দায় ছড়ানো রয়েছে
ধানের শীষের আলপনা
পাশ দিয়ে হেঁটে গেছে চকিত সংসার
দূর থেকে মনে হয় যেন, গৃহিণীর অভিমান।
ঘরের মধ্যেও তাঁর ঘর নেই, লুপ্ত...
তৃতীয় রঙের মতো শিশু বেড়ালেরা ঢুকে পড়েছিল বলে
তুমিও ছায়ার উল্টো দিকে বসে প্রত্যাশিত জমির দখলে
নেমে পড়তে গিয়ে দেখো গোল গোল থাবা ঢুকে গেল কোলে কাঁখে
এবং বেরালে নিয়ে সেই সব শিকারীর স্তনযন্ত্রণাকে
যাতনা মানে তো মুখে অচেনা স্বাদের আনাগোনা চলে আর
শ্রাবণ মাসের মধ্যে রেখে আসা ছোট ছোট পাগল পাহাড়
পাহাড়ের ফুল দোলে,...
পৃথিবীর সেরা বেহালা বাদক জসুয়া বেল
ওয়াশিংটনের সাবওয়ে স্টেশনে
ঘন্টাখানেক বেহালা বাজালেন
সাতজন শ্রোতার সামনে ।
তারমধ্যে একজনের বয়স তিন
একজন মাত্র চিনতে পেরেছিলেন তাঁকে।
হুগলির ওভারব্রিজের ওপর দাঁড়িয়ে কবিতা পড়েছিলেন
একজন। যেখানে শ্রোতার সংখ্যা ছয়
একজনের বয়স নয়
কেউ চিনলো না তাকে
কোনো কমেন্ট কোনো শেয়ার কোনো লাইক থাকল না
শুধু দুন আর শতাব্দী এক্সপ্রেস
শব্দ করে চলে গেল দুদিকে
উড়তে...
ব্যর্থতা বড়র দায়, শিশু কি
কখনও ব্যর্থ হয়
হামাগুড়ি দিতে দিতে উঠে দাঁড়ানোর
চেষ্টা
সেও এক এভারেস্ট জয়
আমি সেই জয়ের পতাকা
কুরুক্ষেত্রে নিয়ে গেলে মাটি থেকে
উঠে আসে চাকা
যুবতী মায়ের স্তনে
কানীন পুত্রের জিভ
বলে ওঠে,শেষ নয়,যুদ্ধ শেষ নয়।
তোমাকে দুঃখবোধে ডুবিয়ে রাখতে চাইনি। দোষ আমার! একের পর এক যে তীর আমি মেরেছি, তা এমন নির্মম হয়ে ফিরবে ভাবিনি। তুমি বুঝবে না, তোমাকে ছাড়া রাত-দিন কেমন দুর্বিষহ কঠিন ধাঁধার মতো হয়ে উঠছে। পোড়ো বাড়ির গুমোট অন্ধকার যেমন গলা টিপে ধরে পিছন থেকে। আমি হিসেব মেলাতে পারছি না। চাঁদ...
মাটির যাবতীয় দুঃখঘর আমাদের ব্যর্থতা
সাতসকালে গান গেয়ে যে মাঝি চলে গেছে
আলোর দুয়ার দিয়ে ঝরনা রোদের পাতায় পাতায়
তাকে দেখেনিকো কেউ
দুঃখদুয়ারে যাদের রোজ নামতা মুখস্থ
তারা তার পায়ের শব্দ শুনেছিল
গিঁট খোলা নেই বলে যারা বিরক্ত হয়ে ঘুমিয়ে গেছে
তারা মাঝরাতে স্বপ্ন দেখেছিল
কুয়াশায় ঢেকেছিল সবগুলো খোড়ো চাল
চাঁদ ফুটো হয়ে জ্যোৎস্নার জল এসে
ধুয়ে...
দেবাশিস তেওয়ারীজন্ম ১৯৮২২০০২ সালে দেশ পত্রিকায় কবিতা প্রকাশের মধ্যে দিয়ে পাঠকসমাজে পরিচিতি।বিভিন্ন পত্র-পত্রিকাতে নিয়মিত লেখালিখি করেন। অনুবাদ সাহিত্যে আগ্রহী।প্রকাশিত হয়েছে ছয়টি কবিতার বই।নারীভিতরে ভিতরে একটা মেঘের জন্ম হলেবৃষ্টি পড়ে, ঝমঝমিয়ে ভিজতে থাকে পাতাবাহারের পাতা।তোমার রংবেরঙের ইচ্ছেডানা মেলে উড়তে থাকে আরকুর্নিশ জানায় আমার আঁধার রাতের অশনিকে।সামনের লন তখনও ভেজেনি অথচভিতরে ভিতরে...
সূর্য, ঘোড়া
বরং এবার আলাদা রাখি সূর্য, ঘোড়ার কথা।
মাটির যে ঢাল তেষ্টা চেনে, আইঢাই খুব–
মরতে গেল জলের কাছে। সূর্য তখন
তেষ্টা দ্যাখে, আচমনে সাজিয়ে রাখে খুরের দায়ভার।
ছুটছে আড়াল, ভাসান প্রখর, ডুবছে কাঁপন,
মন্থনবোধ উঠছে অধীর– দরদাম তার খোলস শুধুই
আনকোরা দাগ রেসের আওয়াজ– সাতটা শরীর স্রোতের
ফাঁকে রশ্মি চাটে, হিসেব রাখে, কখন অনুশাসন ভুলে...
রঙ্গন রায়জন্ম: ১৯৯৮জলপাইগুড়িতে বসবাস।বাংলা সাম্মানিক স্নাতক স্তরে পাঠরত।কাব্যগ্রন্থ: প্রাপ্তবয়স্কতার পূর্বদিকহিরোশিমার প্রেমিকজোয়ান বীজের গানের কাছে আমার অনেক স্মৃতি জমা পড়ে আছে।অনেকদিন পর যখন আমাদের কথা হয় অনেক অনেক দূর থেকেআমি টেকনোলজির কাছে মাথা নত করে ফেলি, আকন্ঠ প্রেম নিবেদন করি--বাড়ি ফেরার প্রতি আকর্ষণ বেড়ে যায়, যখন কিছুক্ষণের জন্য সমস্তসময় অতিক্রম...
হাত-বদলের হাসি আমাকে আশ্বস্ত করে নৌকা খুলে রাখে।
এবার পতন হবে: যেমন দক্ষিণা দেবে এই পরপারে
মন্ত্রোচ্চারণে কাঠের তৃষ্ণা তেমনই উজ্জ্বল হবে
অমাবস্যা ঢালা হবে শ্বেতকরবীতে
তুমি কি মাধবী ছিলে?
জলতলে অনাগত নিমগ্ন সূর্যাস্ত?
পাতাবাহারের রাতে কোমল কড়ির খেলা এমন উদিত হবে শ্রীপুষ্পসঙ্কটে
না জানি আকর্ষ তার কার কাছে ভেসে ভেসে যাবে
খুঁটে বাঁধা অভিকর্ষ--এমন আরতি...
তুষার কবিরজন্ম ও বেড়ে ওঠা ঢাকা শহরে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগ থেকে সম্মানসহ স্নাতকোত্তর করার পর তিনি এম.বি.এ. করেছেন মার্কেটিং বিভাগ থেকে। এ যাবত তাঁর ১২টি কবিতার বই এবং একটি কবিতা বিষয়ক প্রবন্ধের বই প্রকাশিত হয়েছে।বেহালাহাওয়ায় উড়ছে শুধুই হাহাকারকোভিড ছড়ানো এ সন্ধ্যায়—গোধূলির লালাভ আলোতে গান গায়এক...
মানিক সাহাজ্বরগালে স্পর্শ পাই। ডুবে যেতে থাকি জ্বরে। আমার কিশোর বয়স। পুটিদি ভরা নদী হয়ে পাশে বসে থাকে। ওর বাঁকগুলি দেখে মনে হয় বাঁশঝাড়ের আড়াল। মনে হয় নির্জন এক কোনে লুকিয়ে রাখা নৌকা। তোমার ঐ নৌকায় আমাকে চড়তে দেবে, কোনদিন বলতে পারিনি। অথচ আমার মাঝি হওয়ার ইচ্ছে ছিল ষোলোআনা।একদিন...
বড় মুখ করে বললে, সংসারই চলে না
এবার কবিতাটা ছাড়ো
ভিতরটা তোলপাড় করে দিলে
এতদিনের সখ্যটা নিজে-নিজেই খেলে
তোমাকে বোঝানোর ভাষাই নেই
কবিতা নেশাও নয়, কবিতা পেশাও নয়
কবিতার জন্যে মই বাইতে হয় না
কবিতার জন্যে আকাশেও উড়তে হয় না
মাটিতেও টলতে হয় না
আমার সংসার আর কবিতা মাখামাখি
ওরা সহাবস্থান জানে, ওরা রাগ-অনুরাগ জানে
ওরা জানে কবিতা সম্রাটের
আর একটু...
মধুমিতা চক্রবর্তী
রিমি দে
অনিন্দিতা গুপ্ত রায়
মনোনীতা চক্রবর্তী
মাধবী দাস পঞ্চ কবির কবিতাকেন যাবমধুমিতা চক্রবর্তীযাব না কোথাও,ভেজা মাটির সোঁদা গন্ধ মেখে নিশিন্দা পাতার মত লেপটে পড়ে থাকবপোরবস্তিতে, ডিমা নদীর তীরে।ডলোমাইট ভেসে আসা সাদা জলে চাল ধুয়ে ভাত বসাব,চারটে ভাত ছ'জন মিলে খাব, গেঁড়ি গুগলি মেটে আলু সেদ্ধ মেখে...বর্ষা বাদলা হিম জোনাকির আলো নিয়ে...
বিশ্বজিৎশব্দের বিপরীতে১চুপ থাকাএক অসম্ভব শিল্প।জানি,কেউ কারোর ধার ধারে নাকেউ কারোর ঘর চালায় না।তবুও টিকিটএকই স্টেশনের দিকে…২অসুখ-বিসুখেতুমি থাকাটা জরুরি।তুমি নামটাই সব…সারাদিন পারদ ওঠে-নামেতুমিও ওঠা,নামার ভেতরপৃথিবীজুড়ে একটা কার্ফু চলছে৩জন্ম নিয়ে প্রশ্ন বাড়েশিক্ষার কোনও শেষ নেই।শূন্য বাড়তে বাড়তেসংখ্যারাও মুখোমুখি ভাস্কর্যে…৪মৈথুন শেষেসব অভিমান কেটে যায়।দিন বদলে আলোর কাছাকাছিছুঁয়ে যাই…একে অপরের মুহুর্ত
টুইটারে ২৩ লক্ষ ভিউ
আরও বেড়ে যাবে,
নেতাদের তেজী হুঙ্কার,
ক্ষতিপূরণের চেক পৌঁছে গিয়েছে।
যার যায়, সে-ই জানে,
বাকিরা মাংস ভাত, বাকিরা মাইক,
বাকিরা মন্ত্রী আর সেনাপতি হয়—
যারা যারা হাঁটছিল,
যারা চোখ রাখছিল,
দুই মেয়ে, খোলা স্তন,
তার নীচে ইনিবিনি,
উল্লাস, উল্লাস!
যেন ছয়, ফের ধোনি,
ভারত না ইন্ডিয়া,
শ্রীরাম না ডাকাতিয়া,
মেয়েরাই জানে।
ধানখেতে যেইখানে,
রক্তের ফোঁটা ঝরে,
সেইখানে পুরুষেরা নাচছে ভাসানে।...
স্বপ্ন যদি তর্ক করে
আমি তার দু'ঠোঁটে আঙুল
না রেখে বুঝিয়ে দেব
বাস্তবের সবক'টা ভুল;
কিন্ত ভুল ঠিক করব না।
বালির ভিতরে থাকা সোনা
গয়না হয়ে যদি ফিরে আসে
ছোট বউ গায়ে দিয়ে,
আবারও পালিয়ে যাবে
সরল বিশ্বাসে...
কবিতা তো জটিল বিষয়
অনেকের হয় না
কিন্তু কারও কারও হয়।
যার হয়, তার হাতে থালা দিয়ে বাড়ো মাছ-ভাত;
যার হয়...