তোমায় দিলাম পদ্মনাভ ভোরের আকুল-বিকুল শিউলি ফুলের ঝরা, তোমায় দিলাম অন্তরঙ্গ ঘোরের রক্ষাকবচ। পাখির রাতচরা দেখাক তোমায় তাদের বুকের ক্ষত গোলাপকাঁটায়,যে যন্ত্রণায় গানের গভীরতায় অরণ্যময় যত বৃষ্টি ঝরায় ছন্ন অভিমানে। তোমায় দিলাম মন খারাপের গলি, বিকেল বেলার মেঘলা প্রতিশ্রুতি, যখন তোমায় মনের কথা বলি বোঝো আমার সমগ্র বিচ্যুতি? ঢের দিয়েছ এতেই বোঝাই খাতা স্বভূমি আজ প্রাচীর দিয়ে ঘেরা তবুও ডাকো অবাধ্য কলকাতা! হৃদয় যখন...
বইঘরের উদ্বোধনে, ভোরে ঠান্ডায় হাড়হিম, সকলের নিঃশ্বাসে কুয়াশা বাড়ছে, রাস্তায় বইঘরের উদ্বোধনে স্বরচিত জার্মান কবিতা পড়ছেন গিসেলা উইন্টারলিং। এ হেন হিমাঙ্কের মাঝেও ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে ভিড়, সাংবাদিকরা সুদৃশ্য খাতায় তুলে রাখছেন দৃঢ় পঙক্তিগুলি। রাউএনতালার স্ট্রিট বেয়ে বয়ে যাওয়া গাড়িগুলি থামিয়ে নেমে আসছেন, ছুটির সকালে, কিছু লোকজন। প্রতিস্পর্ধী ভিড়টা ক্রমেই বেড়ে উঠছে। কবিতা মধ্যেই করিম ধরলেন...
বিকাশ দাশজন্ম ১৯৬৬ সালের পুরুলিয়া জেলার গোবিন্দপুর গ্রামে। পাঁচটি কাব্যগ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। মানভূম ভাষা নিয়ে গবেষণা করছেন। কয়েকটি সংকলন-গ্রন্থ সম্পাদনা করেছেন। জীবিকা শিক্ষকতা।ধানক্ষেতে ঢুলছে খামারকিছু কিছু ঘুম চেয়ারে বসে পা দোলাচ্ছে ক্লান্তিরা ধান রুইছে নির্মাণেরআকাশ করুণা ঢালছে নিরন্তরআর মাথার উপর উড়ে যাচ্ছে লক্ষ পৃথিবী ।মেঘেদের সঙ্গম দেখে জলপাই রঙের...
কাহিনিতে একটা বোঁচা ছেলে এসে বসেছে। আমি তার নাক লম্বা করার চেষ্টায় রয়েছি। চেষ্টা করেই চলেছি,চেষ্টা। সারারাত চেষ্টা চললো।একটুও সফল হই নি! আকাশে তারারা ফুটলো। জীবন জীবনের চেয়ে বেশি ছুটলো। প্রেম প্রেমের চেয়ে বেশি। সকাল হল।আমি বিদায় নেবো এবার। বোঁচা কাঁদছে। আমি এবার তাকে বললাম,কেঁদো না,কিছু সীমা মানুষের থাকেই। এই যেমন আমার।তোমায় কিছুতেই প্রেমিক ভাবতে পারিনি। আসলে আমরা সবাই বোঁচা।শরীরের...
প্রথম দিনেই কি প্রেমে পড়া যায়? আমি তো পড়িনি। মনে পড়ে সেই অগোছালো দিন টা ভর বিকেলে বটের তলায় দাঁড়িয়ে তুমি, আমার অপেক্ষায় বিমগ্ন। প্রথম দেখার এক অস্থিরতা দুজনাতেই। সামনে এলে কি বলবো তা নিয়ে গভীর দুশ্চিন্তা, সকাল থেকেই। ভাবনা প্রসূত কিছুই ঘটেনি সেদিন । কোনরকম ইস্ত্রি হীন চুড়িদারটা পড়েছি বিহ্বলতার কবলে পড়ে রাস্তার পাথরে হোঁচট খাওয়া— জুতোটাও গেল...
নিমগ্ন দীঘির মুখোমুখি বসে বুনছি রুমাল রুমালে লিখছি চিঠি পিগমিদের মতো তোমার তানপুরায় জাল বুনে চলেছে মাকড়শা সেই জালে সরগম সাধছে বিকেল। বিষণ্ণ মেঘে তিরিতিরি কাঁপে খেপলির জল সেই কম্পনে ধরে রাখতে চাইছি সুর অপেরাঘরের মতো পদ্মপাতার জলে সিমফনি বেজে চলে উদ্দাম চুম্বনের মতো। জোছনা আয়না জুড়ে বেহালায় তর্পণ বাজে জুপযন্ত্রের মতো মৃতদেহ সেলাই করেছি তখনও কাঁপছে দেখি চোখের...
সৈকত ঘোষরূপকথা নয়ঘটনাটা এভাবে ব্যাখ্যা করা যেতে পারে,পৃথিবীর সব সম্পর্ক একটা জায়গায় এসে শেষ হয়নিজেকে গোপন করলেঅনুশোচনা বাড়ে মাত্রঘটনাটা এভাবে ব্যাখ্যা করা যেতে পারেজোয়ারের পর যেমন ভাঁটা আসেতেমনি তোমার লাবন্য খুঁজিদীর্ঘ বৃষ্টির পরসিনেমা থেকে উঠে আসা চরিত্রগুলো ঘুরপাক খায়আমি জীবিত,মৃত্যু লিখি ...জরাসন্ধের বিছানাভূ-ত্বকের নীচে ক্রমাগত বিস্তার পাচ্ছে অধিকারবোধআমাদের জামাগুলো...
উড়ালের আগে যতটা আড়াল যেভাবে গান মিহি হয়ে আসে রাতের দক্ষিণে নামে বেনামে চিনে নিতে থাকি মানচিত্র সুড়ঙ্গেরও নিচে, যেখানে টান জন্ম নেয় ডাকে, ডাকে, ডাকতেই থাকে আর কত নিচে নামবো! প্রতিবর্তে স্পষ্ট হই রোজ
আকাশ অংশত বাকিটা না হয় রইল উহ্য ইচ্ছেমত শব্দ রেখো অথবা চুপচাপ সাবধানে চলাফেরা কোরো দৃষ্টির তীক্ষ্মতা মাছের চোখের মত ক্লান্ত কোন বাণে বিঁধবে তাকে? শীতকাল ফিরে এলো ভাস্করের পাতায় পাতায় তারপর কিছু সূত্র অথবা সমীকরণ শুধু মনে রেখো যে পাতা ঝরল অতর্কিতে তার আর পুনর্জন্ম নেই যে আসবে সে নতুন কেউ!
এখন আর কিছুই পড়ে নেই পোড়া বসন্ত সারারাত স্মৃতিহীন অতীতের কথা বলার চেষ্টা করে, কিন্তু পারে না দেওয়ালে তার পিঠ ঠেকে গেছে ! বুকের ভিতরে বাতাস ছিল এখন সে বাতাস অন্ধকার শীতলতম হিম! তোমার সঙ্গেও আর দেখা হবে না কোনওদিন লাস্য হারাতে হারাতে তুমি আজ লাশ হয়ে গেছ!
বৃষ্টি ও চাঁদের মাঝে মোমবাতি জ্বেলে মধ্য জুলাই আমার বুকে শস্যবীজ রেখে গেছে কবে! এমনই অন্ধকারে জলের রং চিনিয়েছিল অস্ফুট ভ্রূণাধার। সোঁদা মাটিতে স্নেহের গন্ধ শুঁকে পৌঁছে গেছি কত অচিন পুকুর— সেখানে সেই হাতের চপলতা নেই, নেই কোনও শ্বাসের প্রলেপ হে জুলাইয়ের জন্মবার আমাকে নিয়ে চলো রোমকূপের বনে! আদিম ঘাস যেখানে লোকাতীত আলোর অপেক্ষায় গর্ভের কলুষহীন মাঠও আরেকবার নিশ্চুপ হতে চায়, হাত ধরে বলে— ‘তৃষ্ণার্ত পারাপার...
ওয়াহিদা খন্দকারবেশ কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় কবিতা লিখছেন ওয়াহিদা।বাস্তব ও অতিচেতন মিলে তাঁর কবিতা হয়ে ওঠে বিপন্ন পৃথিবীর গল্প।এর আগে প্রকাশিত হয়েছে ‘নীরব দশমিকের ভিড়’।তাঁর নতুন কবিতার বই ‘বিবর্ণ সিলেটের সমীকরণ’। হ্রেষাবারবার ভেঙে যায় সাজানো দাবার ঘরবাড়ি।সংস্কারের পর,প্রত্যেকবার ভেবেছি গুছিয়ে খেলব।বেঁচে থাকার এ খেলায়সাদা সাদা গাছ। পাখি, সমুদ্র, জনতা...সবই...
জিরাফের পায়ে জল দিতে দিতে গলা লক লক করে আকাশের মেঘ ছুঁয়ে ভাবে, এই তার দেশ ধুলো মেখে পরে আছে আমার স্বদেশ... আমার পায়ের নীচে পাথরের জমি আমার জমির পাশে হাড় কঙ্কাল জিরাফ দেখেছে তাকে! সে কি আজ ভুলে গেছে মায়াময় নদী ভুলে গেছে ধ্যান রত সাধুর আদেশ! ধুলো মেখে পরে আছে আমার স্বদেশ...
আজকাল সহবত শিখছি  ১ যে সমস্ত শূন্যতাকে নিজের বলে দাবি করতাম, নিতান্তই আবেগ... আয়নার দিকে তাকালে বলিরেখা বাড়ে। সময়ের কোলে পরপর যুক্তাক্ষর। হেঁটে চলি শরীরে সহজপাচ্য রোদ্দুর এরপর আয়ুযোগ হলে, ধরাকে সরা জ্ঞান করবো। চেসবোর্ডে লিখে ফেলবো সূর্যগ্রহণের নিরক্ষর কারণ। ২ সরে যায় কর্কটক্রান্তি দাগ, চেনা সংসার, ছক বাঁধা বিকেল। টুকরো অনুঘটক নিয়ে কেউ বেঁচে ফেরে,...
অহ নওরোজ জন্ম বাংলাদেশের যশোরে। বর্তমানে ঢাকায় বসবাস। চাকুরিসূত্রে সম্পাদনার সঙ্গে জড়িত। প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ তিনটি। সর্বশেষ প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ ‘অতিলৌকিক কবিতাসমূহ’ জার্মান ভাষায় অনূদিত হয়েছে। কাব্যগ্রন্থ ছাড়াও জ্যোতির্বিজ্ঞানের উপর একটি বই লিখেছেন। ফুলদের যাতায়াত গোলাপ কীভাবে ফোটে কিংবা ঝরে যায় সেসব জেনেছে যারা অথবা জানেনি সরু-গোল দুটি চোখে কখনো দ্যাখেনি অথবা অনেকবার গহীন সকালে যখন ডুবেছে চাঁদ...
কোন অনুতাপ বা অভিযোগ ছাড়াই আমি এঁকে ফেলি চাঁদ, চুম্বন আর মরণাপন্ন বেহালা তুলির টানে সম্পূর্ণ করি নদীর বাঁক, মন্দার বন এই ক্যানভাস আর গৃহস্থালি আমি মেলাতে পারিনা সমস্ত দিনের শেষে নোনাধরা দেয়াল, হয়তো বা অনায়াসে ছেড়ে চলে যাই ভাঙনের শহর... তোমারও কি মনে পড়ে পুরুষালি ভ্রমণকাহিনী সূর্যাস্তের মুহূর্ত, গানের কলি, জৈব রসায়ন রোদের নামতা, ছায়ার নামতা,...
আলোর মতো রাত্রি নামে, উপচে পড়ে ঘর, স্বপ্ন জুড়ে জাগল কি মর্মর? চাঁদের মতো হাঁড়ির ভিতর গান ধরেছেন তাপ, খিদের ছায়া মারল এসে ঝাঁপ। ঝাঁপ দিয়েছে হাজারো চোখ, ঝাঁপ দিয়েছে দেশ, এক হাঁড়িতেই মস্তানি সব শেষ। যুদ্ধ কেবল অন্ধকারের, যুদ্ধ কেবল নিজের। যত হারজিত খিদের রক্তবীজে। আলোর মতো রাত্রি নামে - পরনে রাজবেশ হাঁড়ির ভেতর, জলের ভেতর ফুটছে...
বিশ্বজিৎ চট্টোপাধ্যায়হৃদরোগ ও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক।কবি, গল্পকার, গদ্য লেখক এবং অনুবাদক। প্রকাশিত বই সংখ্যা ১৪সম্পাদনা করেছেন একাধিক বাঙলা ও ইংরেজি পত্রিকা।কবিতার জন্য পেয়েছেন দু’টি পুরস্কার।ভালো শহরখারাপ শহর থেকে ভালো শহরের দিকে কবে যাব?যে পথ দেখাবে সেওপথ হারিয়েছে।কালো চশমা পরে আমিহাসপাতালের গেটে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে রয়েছি।পথে কেউ নেই।প্রতিটি পায়ের শব্দ, এ শহরে, সন্দেহজনক।কেউ...
১ আনারকলিকে ঘিরে গাথা হচ্ছে পাথর সেলিমের কথা বলতে গিয়ে বারবার ধরে আসছে বাবার গলা আর ঘুমের মধ্যে তলানি হয়ে যেতে যেতে বাদশাহের নির্দেশ মিশে গেল লতা মঙ্গেশকরের রেকর্ডে ২ ঘোরানো সিঁড়ি দিয়ে একে একে নেমে যাচ্ছে বিষণ্ণ জোকারেরা শীতে শাস্তি পাওয়া ছেলেদের কথা ভেবে আর ফিরবে না তারা শুধু মরচে পড়বে উৎসব ৩ শেষপর্যন্ত দ্বিচারিতাই থেকে যায় বিশেষত এই পাখির উড়ে যাওয়া সূর্যাস্তের...
তাপস কুমার রায় যুক্তরাষ্ট্র সরকারের অর্থনীতির গবেষক তাপস কুমার রায়। তিনি একজন চিত্রশিল্পীও। প্রকাশিত হয়েছে কবিতার বই 'ঘর খোঁজা সন্ধ্যারা'। দ্বন্দ্ব রাধার ঘরে কৃষ্ণ আঁধার, ভক্তের মনে সুখ বৈষ্ণবেরা বুঝতো যদি আয়ান ঘোষের দুখ। মৃত্যু নরম পায়ে নদীর ঘরে হাঁটতে গেলো মেয়ে প্রথমে দাঁড়ি পরে কমা ক্রমে বিন্দু হতে চেয়ে চোখের সাদায় সন্ধ্যা ঘনায় শব্দহীন পথে আবছা তরল...