সাউথ সিটি মল
'তোমার হৃৎপিণ্ড যেন বিনামূল্যে
ওয়াই ফাই জোন
ফ্রি সিগন্যাল যাবে তাই,
সারাক্ষণ ফোনে রাখি চোখ'
এই বলে দুজনেই
অক্টোপাস খেতে ঢুকে গেল
লিরিল যুবতী আর তার সঙ্গে ডেনিম যুবক
মনুমেন্ট
কলকাতা শুয়ে থাকা,
তীব্র এক রাক্ষসের নাম
মনুমেন্ট তার উথ্বিত শিশ্ন,
ত্বক ভেদ করে
ভরা পূর্ণিমার রাতে
মাতালেরা যখন ঘুমিয়ে,
শিশ্নমুখ চুঁইয়ে রক্ত মাখা গাঢ় বীর্য ঝরে পড়ে
ফ্রি স্কুল স্ট্রিট
মিসেস ব্রিগান্জা...
এই সেই গলি
এইখানে বাঁয়ে বেঁকে
কী সরু কী সরু,দুদিকে দোকান
গাড়ি ঢোকে না, হাতে হাতে ধরে…
তারপর সেই মুখ, সাধ না মেটা দেখা
অঙ্গে বস্ত্র নেই
জলস্নান জলস্নান
কে? কে? কে? কে খায়নি নুন?
মাসি পিসি কাকা জ্যাঠা আত্মীয়কুটুম
শুধু মেয়ে বলে সে—
মুখে দেবে না আগুন?
সাম্যব্রত জোয়ারদারপেশায় সাংবাদিক। লেখালিখি শুরু নয়ের দশকে। বিজল্প পত্রিকার সম্পাদনা করেছেন। প্রথম বই ‘পাখিদ্বীপ জাদুওলা বন্ধুপদাবলী’। তিন বন্ধু একসঙ্গে। ছবি আঁকতে, ছবি তুলতে ভালোবসেন। প্রিয় বই: গীতবিতান।নির্বাচিত অংশের প্রতিধর্ষণ ও খুনের লেখা, মুখিয়ার পরগনা শালগাছ পাতা কুড়ানিরা, চুপচাপ চান্দ্রমাসে ঝরে গেছে। ক্যালেন্ডারে গোল চিহ্ন ঋতুস্রাব এলোমেলো শহরের পথ, খাদি...
যেকটি বৃক্ষের কাছে ক্ষমাভিক্ষা করেছি ক্ষয়িষ্ণু রীতি মেনে,
যেকটি প্রার্থনাগীতি স্বরলিপি খাতা জুড়ে আলো,
যেকটি হননসাধ একান্তে অপূর্ণ থেকে গেছে─
সেসব অধ্যায় যোগ করে করে
পৃষ্ঠা গুনে গুনে তুমি জীবনের অদাহ্য আখ্যান রচেছিলে।
এই যে বিজন রাত কিছুই দেখে না খুঁজে, সঙ্গোপনে শুধু
স্থির সর্বনাশ হয়ে জেগে থাকে স্বপ্নের ভেতরে─
মেঘে কুয়াশায় ছাওয়া উঁচু-নীচু অবাস্তব গ্রাম...
এই যে নিশঃব্দের ঘরে অজ্ঞাতবাস আমার
একথা আমি কাউকে বলিনি। আমার বাহির
আমার অন্তরের থেকে অনেক দূরে বসবাস করে।
তুমি আমার বাইরের মানুষটাকে ভালোবাসলে,
আমার অন্তরকে খুঁজে দেখলে না।
একটাই ক্ষীণ দুয়ার দিয়ে হাওয়া চলাচল করে,
একটাই দুয়ার ফিরে আসার, তুমি হাওয়ার কাছে
নিজেকে প্রশ্ন করো,
কেন অক্ষরের বিষ আমি পান করেছি।
কেনই বা আলেয়া ও অতি আলোর...
সুমন মল্লিকজন্ম ১৯৮৫ সালে কোচবিহারে৷ বর্তমানে শিলিগুড়িবাসী৷ ইংরেজি সাহিত্যে স্নাতকোত্তর পেশায় শিক্ষক৷ প্রকাশিত কবিতার বই পাঁচটি ৷ শখ : ভ্রমণ, গান শোনা, সিনেমা দেখা, ছবি তোলা এবং বই পড়া ৷সেসব কথাসেসব কথা জানে শুধু প্রিয় নদী৷চাঁদের আলোর মাঝে কীভাবেএকটুকরো অন্ধকারে আমি আর তুমিচকোর হয়ে যেতাম...কীভাবে আমাদের বুকের ছলাৎছলমিশে গিয়ে...
আমি আজ বড়ই একা
প্রকৃতির কোলে মাথা রেখে শুয়ে আছি
ফুলের ঘ্রাণে মাতাল করেছে আমার মনন
বাতাস এসে উড়িয়ে নিয়ে যাচ্ছে বুকের ওড়না
তারপর?
এক কাপ চা খেয়ে যা শান্তি পাই
তোমাদের আপ্যায়নে তা পাই না
হাজারো অভিযোগ মেনে নিয়েও যখন ভালোবাসি
ভুলে যাই পূর্বের সকল কথোপকথন
তারপর?
কৃষ্ণচূড়া ফুল দিয়ে পথ ঢেকেছি, হাঁটছি না
দাঁড়িয়ে আছি, অপেক্ষায় আছি
ঢেউ এসে...
একটা উত্তরকে প্রতিউত্তরের দিকে ঠেলে নিয়ে যাই
অপরাধের সূত্র ধরে কাঁচের ওপর দিয়ে হাঁটি
সন্তর্পণ জানালার বিচারক্ষেত্রের দিকে ঘুরে দেখি
স্পর্শের দক্ষিণ, থম মেরে দাঁড়িয়ে আছে সিলিং ফ্যান
কণ্ঠার মৃদু হাড়ের ওপর জমে আছে অস্পষ্ট আঙুল
পোড়া মেঘের ছায়া এসে লাগে কাঁচের ওপর
আমি মুখ নামাই, জিভের করুণা খুঁজি,
খুঁজে দেখি পারা ওঠা আয়নার ওপর অবশ্যম্ভাবী...
সমরেশ মুখোপাধ্যায়জন্ম সত্তর দশকের প্রথমার্ধে। শিক্ষা ইংরেজি সাহিত্যে এম এ। প্রথম লেখা প্রকাশিত হয় শুকতারা পত্রিকায়। প্রথম কাব্যগ্রন্থ শামুকজন্ম। অন্যান্য কাব্যগ্রন্থ -বিষণ্ণ দাবার কোর্ট, তোমার ইঙ্গিত বুঝি, পুর্বপুরুষের ছায়া, নক্ষত্রবাড়ি, খাদের কিনারে একা। ২০১৫ সালে বনলতা পুরস্কার, ২০১৬ সালে অমিতেশ মাইতি স্মৃতি পুরস্কার, ২০১৭ সালে নতুন কৃত্তিবাস পুরস্কার পেয়েছেন।দীপাবলির...
জানো, ভিক্ষুক এই তিনদিন
আকাশ হয়েছে, প্রভু সিন্নির
পাত্রে মিশিয়ে খেয়েছে অনেক
মায়া-প্রবন্ধ--- জানে জনে-জনে…
বিদ্বান হল দেহ-মন তাই!
প্রতিটি পাতায় সংকেত পাই
রোদ ওঠে রোদ পড়ে যায় জলে
সন্ধ্যা আসেন, প্রবন্ধ বলে:
‘আমার মধ্যে প্রতিষ্ঠা কর’
যত নারীস্রোত, ততদূর নর
প্রবন্ধকার তুলসি-মালিকা
আমি আশ্রিত, তিনিই চালিকা
তবু ভিক্ষুক অসম সাহসী
কাঁধে টিয়া পাখি, ডাকনাম: শশী
তিনদিন ধরে ওরা খড়কুটো
আগলে রেখেছে ঝড়ের উঠোন
বাকি...
প্রথম দিনেই কি প্রেমে পড়া যায়?
আমি তো পড়িনি।
মনে পড়ে সেই অগোছালো দিন টা
ভর বিকেলে বটের তলায় দাঁড়িয়ে তুমি,
আমার অপেক্ষায় বিমগ্ন।
প্রথম দেখার এক অস্থিরতা দুজনাতেই।
সামনে এলে কি বলবো তা নিয়ে
গভীর দুশ্চিন্তা, সকাল থেকেই।
ভাবনা প্রসূত কিছুই ঘটেনি সেদিন ।
কোনরকম ইস্ত্রি হীন চুড়িদারটা পড়েছি
বিহ্বলতার কবলে পড়ে রাস্তার পাথরে হোঁচট খাওয়া— জুতোটাও গেল...
মাটির যাবতীয় দুঃখঘর আমাদের ব্যর্থতা
সাতসকালে গান গেয়ে যে মাঝি চলে গেছে
আলোর দুয়ার দিয়ে ঝরনা রোদের পাতায় পাতায়
তাকে দেখেনিকো কেউ
দুঃখদুয়ারে যাদের রোজ নামতা মুখস্থ
তারা তার পায়ের শব্দ শুনেছিল
গিঁট খোলা নেই বলে যারা বিরক্ত হয়ে ঘুমিয়ে গেছে
তারা মাঝরাতে স্বপ্ন দেখেছিল
কুয়াশায় ঢেকেছিল সবগুলো খোড়ো চাল
চাঁদ ফুটো হয়ে জ্যোৎস্নার জল এসে
ধুয়ে...
শবের পাশে সবই কেমন অর্থহীন!
শেয়ার বাজার, নিউজ পেপার,সেফটিপিন...
শবের পাশে সবই ভীষণ অর্থহীন।
ভাতের হাঁড়ি,মাসকাবারি,মুড়ির টিন,
ফার্নিশ ফ্ল্যাট,দক্ষিণে রোদ, ফলস সিলিং
পিএনপিসি, ই জেড সি সি,ব্যস্ত দিন...
সেলেব রোয়াব,ফ্যান ফলোয়ারস,লেগ পুলিং...
শবের পাশে সবই বড়ো অর্থহীন।
প্রত্যাখ্যান,প্রতিশ্রুতি অন্তহীন...
উড়োচিঠি,মন্দ কথা, ফোনের রিং...
যুদ্ধবিমান,শান্তির গান, বা পুতিন...
শবের পাশে সবই ভীষণ অর্থহীন।
ঘুমিয়ে থাকা একখানা মুখ কী কঠিন!
এক পৃথিবী হিসেব-নিকেশ অর্থহীন...
শবের...
স্রোতের মাঝখানে শান্ত ঘূর্ণির মতন নাভি। নাভির মতন দুরারোগ্য গভীর অবসাদ। শুধু দুধ পোড়ার গন্ধে আমি তোমাকে ভালোবেসেছিলাম। শুধু টেবিলক্লথের ওপরে শুকনো চায়ের দাগ দেখে সাহস করে বলেছিলাম, দরজা খোলো, কিছু কিনতে হবে না। আমি আজ টবের শুকনো গাছগুলোর গোড়ায় জল দিয়ে চলে যাচ্ছি। কাল আমি স্নানঘরের আয়না...
বেবী সাউমূলত কবিতা ও প্রবন্ধ লেখেন। প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ বনঘাঘরা, ইউথেনেশিয়া, গান লেখে লালনদুহিতা, ছয় মহলা বাড়ি, একান্ন শরীরে ভাঙো। এছাড়াও পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ-পশ্চিম সীমান্ত অঞ্চলের এক লুপ্তপ্রায় লোকসঙ্গীত নিয়ে প্রকাশিত হয়েছে তাঁর গবেষণা গ্রন্থ- ‘কাঁদনাগীত: সংগ্রহ ও ইতিবৃত্ত।’ভোটঅবিশ্বাস ঘুরে ঘুরে আসে গোলচত্বরের পাশে বিপ্লবের দেহমাছি ওড়ে উৎসুক জনতা তারাক্ষোভ নেই, শান্তি নেইশুধু...
অর্কেস্ট্রা শোনার পরে বেঁচে ওঠে, এই গ্রামে নাকি রয়ে গেছে এমন যুদ্ধজাহাজ কারখানা
বৃষ্টি শেষে শুনশান চারদিক, রাস্তা জুড়ে হেঁটে চলেছেন ভ্যান গঘ আর বিটোফেন
চোখ থেকে স্বপ্ন খসে পড়ে, আলোহীন সম্পর্কের কথা ভাবি
মাথা নিচু জানুয়ারি সরে গিয়ে দাঁত বসাচ্ছে চরম ফেব্রুয়ারি
নাবিক ফিরেছে ঘরে সুতোকাটা ডিমের উল্লাসে, প্রতিটি বন্দরে জমানো হতাশা...
ওরা জন্ম নেয় মৃত্যুর তাগিদে,
সাঁতার শেখেনি বলে জলকে দূর থেকে দেখে
বুকের বোতাম যদি ভুলে যায় পোশাকের প্রয়োজন
আমরা কী ওদের হব না কোনদিন ?
বালিশের গভীরতর তুলো বাঁচতে চায় না যেমন
চাকা ঘুরছে বাম থেকে ডানে,
আমি ঘুরছি মাথার ভিতরে অন্ধকার পুষে
আলোর থেকে দূরে...
মহড়ায় সাতদিন গিয়েছি ।
দু'হাতের মুঠিতে এনেছি ছাই ভস্ম পরিমাণ মতো,
লাট্টুর...
তখনও তো ওরা কেউ শরীর বোঝেনি
প্রেমের গন্ধ ছিল টিউশন জুড়ে
এলোমেলো চুল তাতে লাল নীল গার্ডার
সপ্তাহে তিনদিন মন ফুরফুরে।
ওরা কেউ চেনে না কি, আদরের মায়া
শুধু বোঝে কালো শার্ট, নীল চুড়িদারে
একটুও হাত যদি লেগে যায় হাতে
দিনটা দিব্যি কাটে নচিকেতা সুরে।
এইভাবে ফেলে এসে সময়ের ক্ষত
হঠাৎ বজ্রপাত, গড়িয়ার মোড়ে
অটোর লাইনে জ্যাম, মেঘ করে...
জমাটবাঁধা মেঘের ভিতর দিয়ে যখন সংবাদগুলি
উড়ে যাচ্ছিল
আমি বিদ্যুৎ পেড়ে আনতে একটা লম্বা আঁকশি
বাড়িয়ে দিয়েছিলাম।
দেখি,আঁকশি বেয়ে নামছে থিকথিক মাজাভাঙা
মানুষ।
আমি মার্ক্স পড়িনি।
ভরা পেটে তাদের বহুদিন রপ্ত করতে হয়েছে অন্ধ-
ভিখিরির পার্ট ।
বনবিতানের গেটে এখন তারা এনামেলের বাটি নাচাচ্ছে,
'পয়সা দিয়ে হাওয়া কিনব না,কিনব না'।
আর মাঙনায় পাওয়া লক্ষ্মীর সরা পেতে দিয়েছে
চরাচরে।
মুফত পেলে এক কাপ...
বুকের মধ্যে শ্বাপদ অতীত
নিঃশব্দে বহন করি, একা
হর্ষে-বিষাদে, এমনকি রবিবার, এমনকি সঙ্গমক্ষণে
দীর্ঘ, নিষিদ্ধ এই অন্ধকার যাত্রার
কোনো অন্তিম নেই, জানি-
তবু; যদি কোনোদিন পথ ভুল ক'রে
একটি শাদা মার্জার, ঢুকে পরে, এই অতিকায় শুন্যতায়
তার পিছু পিছু
একটি ভোরের দ্বারে উপনীত হতে পারি, এতটুকু আলোর শুশ্রূষা...
লোভে, লোভে, আত্মমুখী পুরুষের...